ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ব্যক্তিত্ব : স্বরূপ সন্ধানে

মো: আমিরুল ইসলাম প্রামাণিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ২৬ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যক্তিত্ব : স্বরূপ সন্ধানে

|| মো: আমিরুল ইসলাম প্রামাণিক ||

পৃথিবীর সব মানুষই নিজেকে ভালোবাসেন। পাগল, অন্ধ কিংবা পঙ্গু যে কাউকে তার অবস্থা বিচারে সম্বোধন করা হলে তাতে তিনি নারাজ হন। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, সৃষ্টিকথা যাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন তাতে আমরা মানুষরা সবাই তুষ্ট আছি। কিন্তু বিশিষ্ট চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক জেমস টাইলার কেন্ট বলছেন অন্য কথা। তাঁর মতে ‘মানুষ হলো তার বাসনা ও বুদ্ধির সমষ্টি এবং দেহটি তার বাসগৃহ।’ বাসনা ও বুদ্ধির সৃশৃঙ্খল কার্যই সুস্থ ব্যক্তির পরিচয়। তাহলে এখানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের ভাবনা এবং মহামতি কেন্টের ভাবনার মধ্যে মানুষ এবং সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।

আমাদের ভেতর ও বাইরের স্বরূপ এক নয়, একথা আমরা সকলেই জানি। নিজেকে আমরা খুব ভালোভাবেই চিনি ও জানি। একথাও আমরা সবাই জানি যে, আমাদের জীবন ক্রিয়া সর্বদা একরকম হয় না। পরিবেশ-পরিস্থিতি, সম্পর্ক এবং জীবনবোধ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। আমাদের মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তিত্ব কাজ করে বলে এমন হয়। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে ন্যূনপক্ষে দুটি ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজনীয়। একটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালাতে যেমন নেগেটিভ ও পজেটিভ কানেকশনের প্রয়োজন, ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দুয়ের অধিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি জীবনবোধের মধ্যে গোলযোগ বাধিয়ে ফেলে। তাছাড়া একই পরিবারের জন্মগ্রহণ করে, একই পরিবেশে বড় হয়ে, একই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সবার বাসনা ও বুদ্ধি সমান হয় না। একজন জীবনকে যেভাবে জানেন, অন্যজন কিন্তু একইভাবে জানেন না। একজন জীবনকে একভাবে ব্যবহার করেন, অন্যজন ভিন্নভাবে। কেউ জীবনকে অনেক বড় মনে করেন, আবার কেউ  খুব ছোট মনে করেন। কেউ ভোগে ব্যস্ত, কেউ ত্যাগে তৃপ্ত। যিনি জীবনকে যেভাবে ভাবেন তাঁর বাসনা ও বুদ্ধি-বিবেচনাও তদ্রূপ হয়। আর এভাবেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে তাঁর ব্যক্তিত্বের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এবার আসা যাক, এক কথায় ব্যক্তিত্ব আসলে কী? ব্যক্তিত্ব হলো- সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যক্তিগত অবস্থান। কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল ডিকশনারি অফ ইংলিশ-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘আপনি যে ধরনের মানুষ, সেটিই আপনার ব্যক্তিত্ব এবং তাই আপনার আচরণ, অনুভূতি এবং চিন্তায় প্রকাশ পায়।’ আবার লংম্যান ডিকশনারি অফ ইংলিশ কনটেমপোরারি সংজ্ঞা অনুযায়ী ব্যক্তিত্ব হলো, ‘একজন ব্যক্তির সামগ্রিক প্রকৃতি অথবা চরিত্র।’ সাধারণভাবে বলা যায় যে, ‘ব্যক্তির আচরণ-আচরণের সমষ্টিই হলো তার ব্যক্তিত্ব।’ মনোবিজ্ঞানী ক্রাইডার এবং অন্যদের মতে, ‘ব্যক্তিত্ব হলো ব্যক্তির মনদৈহিক প্রক্রিয়াসমূহের এক গতিময় সংগঠন যা পরিবেশের সাথে তার অনুপম অভিযোজন নির্ধারণ করে।’

গ্রিক ও রোমান সভ্যতার যুগে মাটি, বাতাস, আগুন ও পানি- এই চারটি মহাজাগতিক উপাদানের সঙ্গে তুলনা করে চার ধরনের ব্যক্তিত্বের ধরন চিহ্নিত করা হতো। ধরনগুলো হচ্ছে- মাটির মতো বিষাদময় বা সর্বংসহা, বাতাসের মতো প্রত্যয়ী বা আশাবাদী, আগুনের মতো ক্রুব্ধ বা মেজাজী এবং পানির মতো প্রবাহমান বা উদাসীন। পরবর্তীতে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ের নানা পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়েছে। পৃথিবীতে প্রায় সাতশ’ কোটি মানুষের বাস। প্রায় প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বই একজনের থেকে কোন না কোন দিক থেকে আলাদা। তবে, চিকিৎসাশাস্ত্র নানা বিচারে মানুষের ব্যক্তিত্বকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, সমাজবিরোধী ব্যক্তিত্ব, মানসিক ত্রুটিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, অযান্ত্রিক মানসিক ত্রুটিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, ব্যক্তিত্বের গোলযোগ বিশেষ ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি। কারো মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণ, এককথায় কারো ব্যক্তিত্ব যদি নিজের, অন্যের কিংবা সমাজের জন্য পীড়াদায়ক হয় তখন তার ব্যক্তিত্বে সমস্যা বিদ্যমান ধরে নিতে হবে। নিচে নানা প্রকার ব্যক্তিত্বের স্বরূপ কেমন হতে পারে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো:

এক. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁদের মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তিত্বের প্রকাশ দেখা যায়। যখন যে ব্যক্তিত্বের প্রাবল্য থাকে তখন তাঁর মধ্যে সেই ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। এসব ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ দ্রুত পরিবর্তন হয়। যখন অন্য সকল ব্যক্তিত্বের প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে থাকে তখন নিজস্ব ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। পারিপারির্শ্বিক অবস্থা, সম্পর্ক, রোগাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাঝে নানা রকম ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এমন অবস্থাকে অল্টারনেটিং পার্সন্যালিটি বলা হয়। এটি অযান্ত্রিক মানসিক ত্রুটি বিশেষ।

দুই. এক শ্রেণির ব্যক্তির মাঝে একাদিক্রমে সমাজবিরোধী ভাবধারা প্রকাশ পায়। এসব মানুষ ভীষণ ছটফটে হয়, তাঁর মধ্যে একঘেঁয়ামি বা হতাশা প্রকাশ পায়। এরা সচরাচর মারমুখী, খিটমিটে, পরিণাম সম্বন্ধে উদাসীন, হঠকারী মনোভাবের হয়। এরা সত্য সহ্য করতে পারেন না। কোন কাজে দীর্ঘদিন লেগে থাকতেও পারেন না। এদেরকে সমাজবিরোধী ব্যক্তিত্ব বলা হয়। এটি আসলে এক জাতীয় ব্যক্তিত্বের গোলযোগ বিশেষ।

তিন. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সমালোচনা একদম সহ্য করতে পারেন না। এরা সচরাচর অসামাজিক হয়। এ ধরনের মানুষের মধ্যেও ব্যক্তিত্বের গোলযোগ আছে বলে ধরে নিতে হবে।

চার. এক শ্রেণির রোগাক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে তীব্র উত্তেজনার পর হতাশা ভাব পরিলক্ষিত হয়। এটি এক ধরনের মানসিক রোগ। যাকে সাইক্লোথাইমিক পার্সন্যালিটি ডিস্অর্ডার বলা হয়। তবে তারা সচরাচর অন্যের কোন ক্ষতির কারণ হন না।

পাঁচ. আর এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা একা থাকলে অসহায় বোধ করেন। সর্বদা মনে ভয় কাজ করে। অপরের সাহায্য ছাড়া কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আত্মবিশ্বাসের প্রচণ্ড অভাব লক্ষ্য করা যায়। নিজের বিদ্যা-বুদ্ধির উপর কোন ভরসা থাকে না। সমালোচনাও সহ্য করতে পারেন না। এটি পরোমুখাপেক্ষী ব্যক্তিত্বের পরিচয়।

ছয়. এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে ভয়ঙ্কর উগ্রভাব দেখা যায়। ধ্বংসাত্মক সব কাজ করেন। মানুষজনকে মারতে কিংবা কাটতে যান। তাঁর সকল ক্রিয়াকলাপ ধ্বংসমুখী হয়। কখন যে কোন ক্ষতি করে বসেন তা তাঁকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। এটি অযান্ত্রিক মানসিক গোলযোগ বিশেষ।

সাত. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা প্রচণ্ড আবেগ-প্রবণ হন। নানা ক্রিয়াকর্মের দ্বারা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। উদ্দেশ্য যাতে অন্যরা তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল হন। বিলম্বিত কাজ তাঁর কাছে অসহ্য। উগ্র পোশাক পরেন, কুকর্মে অন্যকে প্ররোচিত করেন। খুব দ্রুত এদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। এটিও অযান্ত্রিক মানসিক গোলযোগ বিশেষ।

আট. আরেক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সামাজিক, মানসিক এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপে অমনোযোগী হন। এদেরকে ইনঅ্যাডিকোয়েট পার্সন্যালিটি বলা হয়।

নয়. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সারাক্ষণ আজগুবি কল্পনায় ভেসে বেড়ান। নিজেকে আবার বড়ও মনে করেন। এ ধরনের মানুষকে বাগাড়ম্বরপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বলা হয়।

দশ. এক শ্রেণির মানুষ আবার একেবারে আবেগশূন্য হন। এসব মানুষ অজানা আতঙ্কে কষ্ট পান। এটি মানসিক রোগবিশেষ।

এগার. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা অন্যের অধিকারকে কিছুতেই মেনে নিতে চান না। কখনও তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। দায়িত্বপূর্ণ কাজ এদের দ্বারা সম্ভব নয়। এ ধরনের ব্যক্তিরাও সমাজবিরোধী ব্যক্তিত্বের অনুরূপ কার্যকলাপ করে থাকেন। এদেরকে সাইকোপ্যাথিক পার্সন্যালিটি বলা হয়।

বার. এক ধরনের মানুষ আছেন যাঁরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির হয়। অন্যের সাথে অবলীলায় খারাপ ব্যবহার করেন। দুর্বলদের শারীরিক নির্যাতন ও অত্যাচার করে আনন্দ পেয়ে থাকেন। সর্বদা উত্তেজনা ও বদমেজাজ প্রদর্শনের মাধ্যমে তর্ক-বিতর্ক করে থাকেন। গোলযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে সবকিছুতেই নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান। এটিও একপ্রকার ব্যক্তিত্বের গোলযোগ বিশেষ। যাকে স্যাডিস্ট পার্সন্যালিটি বলা হয়।

তের. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সামাজিক সম্পর্কের প্রতি সর্বদা উদাসীন ও আবেগহীন হন। নিজেকে গুটিয়ে নেবার মানসিকতা বিদ্যমান। অন্যের অথবা সমালোচনার প্রতি উদাসীন। সর্বদা নির্লিপ্তভাবে থাকেন। এ ধরনের মানুষরা শিজয়েড পার্সন্যালিটিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের হন। এটিও ব্যক্তিত্বের গোলযোগ বিশেষ।

চৌদ্দ. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সর্বদা একটা গোলযোগপূর্ণ বা অসুবিধাজনক অবস্থা তৈরি করে থাকেন। অন্যের সঙ্গে গোলযোগপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন। প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যর্থ হন। নিজেকে কষ্ট দিয়েও ত্যাগের আদর্শে পরিচালিত হন। সম্মানিত বা পুরস্কৃত হলেও কিছুতেই তা আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন না। এটিও ব্যক্তিত্বের গোলযোগ বিশেষ। একে সেল্ফ-ডিফীটিং পার্সন্যালিটি বলা হয়।

পনের. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সর্বদা অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেন। দূরস্ত স্বভাবের হন। কিছুতেই একস্থানে স্থির থাকতে পারেন না। নিজের ভুল-ত্রুটি কিছুতেই মানতে চান না। কোন কাজে লেগে থাকতে পারেন না। পড়াশোনায় অমনোযোগী হন এবং মনে রাখতে পারেন না। দায়িত্বপূর্ণ কোন কাজ এদের দ্বারা সম্ভব নয়। এরা সচরাচর সমাজবিরোধী হন। যাকে সোশিওপ্যাথিক পার্সন্যালিটি বলা হয়।

ষৌল. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা হিস্ট্রিওনিক পার্সন্যালিটির হন। যাঁরা এক প্রকার স্নায়ুরোগে ভোগেন। কখনও হাসেন, কখনও কাঁদেন, কখনও ছেলেমানুষী করেন। মনের কষ্ট সহজে কাউকে বলেন না, নীরবে সহ্য করেন। কখনও আবার চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। এদের মেমাজ সর্বদা পরিবর্তনশীল হয়।

সতের. এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁদের চিন্তাধারা এবং কাজের মধ্যে সম্পূর্ণ যোগ থাকে। এদেরকে সাইটোনিক পার্সন্যালিটির বলা হয়। সাইটোনিক পার্সন্যালিটির মানুষরা পূর্ব হতে পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের কাজ করে থাকেন। তাঁদের প্রতিটি কাজের সাথে ধারাবাহিকতা বা সমতা রক্ষিত হয়।

উপরে বর্ণিত ব্যক্তিত্বের পরিচয় কেবলমাত্র মানুষের চেহারা দেখে বলা সম্ভবপর নয়। কারণ অনেকের মধ্যেই দুয়ের বেশি ব্যক্তিত্বের অস্তিত্ব রয়েছে। কোনটি যে তার স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব তা সামান্য বিচারেও বলা শক্ত। এমনও হতে পারে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আসল ব্যক্তিত্ব খুব অল্প সময়ই দেখা যায়, যাঁদের অন্য ব্যক্তিত্ব সর্বদাই সক্রিয় থাকে। তবে একথাও সত্য যে একজন মানুষ পুরোটা খারাপ স্বভাবের হন না। প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে কিছু না কিছু ভালো গুণ থাকে। এমনও মানুষ দেখা যায় যে, নিত্যদিন যিনি মানুষকে কষ্ট দেন তিনিই আবার অন্যের দুঃখ-কষ্টে কিংবা বিপদে পড়লে সবার আগে এগিয়ে আসেন। যার বাসনা এবং বুদ্ধির মধ্যে যোগ ভালো তিনি ধনাত্মক ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং যার বাসনা ও বুদ্ধির মধ্যে যোগ ভালো নয়- তিনি ঋণাত্মক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। অর্থাৎ ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশের যার পুরোটাই নির্ভর করে যার যার জীবনবোধের উপর। যিনি তার জীবনকে যেমনভাবে জানেন এবং তার ব্যবহার যেমনভাবে করেন তার উপরই ঐ ব্যক্তির ধনাত্মক ও ঋণাত্মক ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে। যেমন- মহামতি কেন্ট মনে করেন, ‘পৃথিবীতে যা কিছু সত্য তার সবকিছুই সৃষ্টিকর্তার জন্য প্রযোজ্য।’ লর্ড হ্যলি ফক্স মনে করেন, ‘সেই সত্যিকারের মানুষ যে অন্যের দোষত্রুটি নিজেকে দিয়ে বিবেচনা করতে পারে।’ আবার উইলিয়ামস হেডস মনে করেন, ‘পরিপূর্ণ তৃপ্তি নিয়ে কুঁড়ে ঘরে থাকাও ভালো, অতৃপ্তি নিয়ে বিরাট অট্টালিকায় থাকার কোন সার্থকতা নেই।’ আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। তাই আমাদের ব্যক্তিত্ব সর্বোচ্চ ধনাত্মক হওয়া বাঞ্ছনীয়। ধনাত্মক ব্যক্তিত্ব সর্বদা গৌরবের। প্রত্যেকের ইচ্ছাশক্তি সেই মহাগৌরবের স্বাদ পাইয়ে দিতে পারে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জীবনবোধকে খানিকটা ধনাত্মক দিকে নিয়ে যেতে পারলে ব্যক্তিত্বও আপনা-আপনি বদলে যাবে। সর্বোপরি, নিজে নিজেকে বুঝিয়ে ঋনাত্মক ব্যক্তিত্বের অনেক কিছুই বদলিতে ফেলা সম্ভব।

লেখক: চাকরিজীবী




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ আগস্ট ২০১৮/হাসনাত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়