ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আলো ছড়াচ্ছে তরুণদের গড়া স্কুল

জুনাইদ আল হাবিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আলো ছড়াচ্ছে তরুণদের গড়া স্কুল

জুনাইদ আল হাবিব: ‘শুরুতে আমরা আলোর অন্বেষা নামে পাঠাগার গড়ে তুলি। ভেবেছিলাম এখানে অনেক পাঠক পড়বে, জ্ঞানার্জন করবে। কিন্তু পাঠকের অভাবে পাঠাগারের গুরুত্বটা হারাতে থাকে। পরে আমরা চার বন্ধু মিলে চিন্তা করি এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিভাবে শিক্ষিত প্রজন্ম তৈরি করা যায়। মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পাওয়া আতাউল করিম, মোসলেহ উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন এবং আমি মিলে ২০১৩ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করি।’

‘বিগত দিনে এখানের অনেক শিক্ষার্থী সাফল্যের সঙ্গে তাদের প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়েছে। তাদের অনেকেই এখন মাধ্যমিকে পড়ে। এ বছর আমাদের স্কুলের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলও বেশ ভালো। সমাপনী পরীক্ষায় ১৩জন অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ করেছে। এমনকি ছয়জন কৃতিত্বের সঙ্গে জিপিএ-৫ পেয়েছে। যেটা এ প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো ইউনিয়নে আমরাই প্রথম।’

- উদ্যোগ ও সাফল্যের গল্প তুলে ধরে বলছিলেন আলোর অন্বেষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এসইউ সোহাগ।

মেঘনাতীরের জনপদ লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মুন্সিগঞ্জ বাজারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলে এ তরুণেরা। যাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাকিরা কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র। এই স্কুলে স্বল্প খরচে গ্রামের মানুষজন সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারছেন। এতে গ্রামের শিশুরাও শহরের শিশুদের মতো মানসম্মত শিক্ষার আলো পেয়ে বেড়ে উঠছে। সম্প্রতি পিএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন নিলুফা আক্তার লিমা, ইসরাত জাহান, ওয়াশিউল বারী, আসমা আক্তার সুর্বনা, মাইমুনা আক্তার বৃষ্টি এবং জাফর ইকবাল। ফলাফলে শতভাগ সফলতা এবং তাদের এমন সাফল্যের পেছনে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক এসইউ সোহাগ, মো. সোহাগ, আবদুর রহমান, শাহিন আলম, রেদোয়ান উল্যাহ, আয়েশা আক্তার হ্যাপী, মাহমুদা আক্তার মুনিয়া এবং ফাহমিদা সুলতানা প্রিয়া।



সাফল্যের অনুভূতি সম্পর্কে এসইউ সোহাগ বলছিলেন, ‘আমি প্রথমে অভিনন্দন জানাই আমার আলোর অন্বেষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সকল অভিভাবকবৃন্দ এবং শিক্ষকদের। যাদের সঠিক পরিচর্যার কারণে এমন ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। ভালো রেজাল্ট করার জন্য আমার প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিও আমি বেশ খুশি। আমার স্বপ্ন এই চর মার্টিন ইউনিয়নের মধ্যে আমাদের স্কুলটিকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা এখন আমার বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া আগামীতে জেএসসি পরীক্ষায় শতভাল ভালো ফলাফলের চেষ্টা থাকবে ইনশাআল্লাহ।’

ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এসইউ সোহাগ বলছিলেন, ‘কোনো মেধাবী ছাত্র, যারা অর্থের অভাবে পড়াশোনা করতে পারে না, তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব আমরা নেব। এখন বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে জেএসসিতে উত্তীর্ণ করা, পরে তা এসএসসি পর্যন্ত এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছি। যা একটি কর্মমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আমাদের সহায়তা করবে। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়