ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বার্মিজ মার্কেটে আচারের রাজ্য

ফয়সাল উদ্দিন নিরব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বার্মিজ মার্কেটে আচারের রাজ্য

ফয়সাল উদ্দিন নিরব : আচারের নাম শুনলে জিভে পানি আসেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তাছাড়া খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দিতে আচার এক কথায় অসাধারণ।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেটগুলো যেন এক একটা আচারের রাজ্য, সারি সারি আচারের দোকান যেন জানান দিচ্ছে এটাই আচারের রাজ্য। আম, তেঁতুল, আমলকী, আমড়া, বরই, কাঁচা মরিচ, রসুন, জলপাই, চালতাসহ নানা রকমের মিক্স আচার পাওয়া যায় এখানের দোকানগুলোতে।

কক্সবাজারে আচারের বার্মিজ মার্কেটগুলোর মধ্যে রুকিয়া বার্মিজ মার্কেট, চৌধুরী শপিং কমপ্লেক্স, জেএন প্লাজা, সৈকত টাওয়ার বার্মিজ মার্কেট অন্যতম। রুকিয়া বার্মিজ মার্কেটের রিমাছ পাইকারী আচার বিতানের মালিক এবাদ উল্লাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমার দোকানে প্রায় ৩৫ আইটেমের আচার রয়েছে। এর মধ্যে জলপাইয়ের আচার, আমের ঝাল আচার, আমের চাটনি, লেবুর আচার, বরইয়ের আচার, খেজুরের চাটনি, হট ম্যাংগো পিকল, তেঁতুলের আচার, মিষ্টি তেঁতুল, আমলকীর আচার, আমলকীর রসগোল্লা, মডার্ন চাটনি, আমড়ার আচার, আম ও তেঁতুল মিক্স, বোম্বাই মরিচের আচার, মিক্স ফুড চাটনি, কাঁঠালের আচার, চালতার আচার, কামরাঙার আচার, বরই রোল, তেঁতুল রোল, আম-বরই মিক্স, সাতকরার আচারসহ দেশি-বিদেশি আচার রয়েছে। আচার সাধারণত প্যাকেট এবং বোতলজাত হয়, পর্যটন মৌসুমে আমরা ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার আচার বিক্রি করি।’

ফারিয়া বার্মিজ আচার শপের মালিক সাজেদুল কাদের রুকন বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা নির্ভর করে কক্সবাজারে পর্যটক সংখ্যার ওপর। পর্যটক না আসলে আমাদের ব্যবসা মন্দা যায়, বেচা-বিক্রি থাকেনা।’

কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকরা হরেক রকম পণ্য দেখার জন্য ভিড় জমান বার্মিজ মার্কেটগুলোতে। তাদের আগ্রহের তালিকায় থাকে শামুকের মালা, রাখাইনদের তৈরি চাদর, জামা-কাপড়, ব্যাগ, বার্মিজ আচার ইত্যাদি। বার্মিজ মার্কেটগুলোতে বর্তমানে প্রায় ৩০০ এর অধিক আচারের দোকান রয়েছে।

 



সুগন্ধা, কলাতলী, লাবনী পয়েন্ট ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ রোডের হিমছড়ি, ইনানী এমনকি টেকনাফ, সেন্টমার্টিনেও প্রচুর আচারের দোকান রয়েছে। কক্সবাজার বেড়াতে এলেই পরিবার, আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবের জন্য আচার কিনে নিয়ে যাওয়ার রীতি প্রচলিত।

তবে আচার কিনতে এসে অনেকেই বার্মিজ আচার মনে করে হয়তো নিজ এলাকায় তৈরি আচার নিয়ে যান। পরে তারা ভুল বুঝতে পারেন, ছোট অক্ষরে ‘বাংলাদেশে তৈরি’, অথবা ‘চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ’, ‘ঢাকা, বাংলাদেশ’ এই রকম ঠিকানা দেখে। এই বার্মিজ মার্কেটগুলোতে আসা বেশির ভাগ আচার আসে বার্মা থেকে। এছাড়া চট্রগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজার থেকে আসে কিছু।

কক্সবাজারে বার্মিজ মার্কেটের শুরু হয় ১৯৬২ সালে এক রাখাইন নারীর হাত ধরে উয়ং এবং টেকপাড়াস্থ স্থানে। বার্মিজ প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন তার নিজ বাড়িতে খুব ছোট পরিসরে স্থানীয় উৎপাদিত চাদর, ব্যাগ, কাপড়, চুরুট, আচার, চকলেট দিয়ে। আর এখান থেকে বার্মিজ মার্কেটের গোড়াপত্তন।

বার্মিজ মার্কেটগুলো বার্মিজ পণ্যে ভরপুর হলেও দোকানিরা বার্মিজ নয়। রাখাইনদের পাশাপাশি বর্তমানে মুসলিম ও হিন্দুরাও বার্মিজ মার্কেটগুলোতে দোকান করেছে। কক্সবাজার ভ্রমণে বার্মিজ মার্কেটগুলো না ঘুরলে আপনার ভ্রমণ অপূর্ণই থেকে যাবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়