ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রসনাবিলাসীদের পছন্দ কুয়াকাটার কাঁকড়া

মহিউদ্দিন অপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ৪ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রসনাবিলাসীদের পছন্দ কুয়াকাটার কাঁকড়া

মহিউদ্দিন অপু : গলদা চিংড়ির মতোই সুস্বাদু ও রসনা তৃপ্তিকর খাবার ক্র্যাব ফ্রাই বা কাঁকড়া ভাজা। কাঁকড়ায় আছে শরীরের জন্য উপকারী প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান। গত এক দশকে বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের সমুদ্রকূলের কাঁকড়া ভাজা সুস্বাদু খাবার হিসেবে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই প্রতিদিনই বাংলাদেশের সমুদ্রকূলের কাঁকড়ার বিপুল চাহিদা বেড়ে চলেছে।

আমাদের দেশে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে কাঁকড়া তুলনামূলক সহজলভ্য। সমুদ্রকূলীয় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় সহজেই কাঁকড়া পাওয়া যায় সুস্বাদু খাবার হিসেবে। এসকল স্থানে এসে পর্যটকরা কাঁকড়া খান শখের বসে। কাঁকড়ার জন্য পর্যটকদের আনাগোনায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকাসহ কুয়াকাটার লেবুর চর কাঁকড়ার জন্য হয়েছে বিখ্যাত। সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার অন্যতম স্থান লেবুর চর। লেবুর চর থেকে তিন নদীর মোহনা দেখা যায়। এক পাশে সমূদ্র আরেক পাশে তিন নদীর মোহনা, অপর পাশে উপকূলীয় বন, নদীর ওপারে দেখা যায় ম্যানগ্রোভ ফাতরার বন। লেবুর চরে সাধারণত খুব বেশি পর্যটকের ভিড় থাকে না। তবে রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই উচিত হবে না সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় ভ্রমণ করতে এসে লেবুর চরের কাঁকড়া ভুনা না খেয়ে ফিরে যাওয়া।

পর্যটকদের জন্য কুয়াকাটা সৈকত পাড় ও লেবুর চরে ছোট ছোট ঝুড়িতে কাঁকড়া সাজিয়ে রাখা হয়। কাঁকড়া খেতে ইচ্ছুক পর্যটকরা কাঁকড়ার ঝুড়ি থেকে তাদের পছন্দ মতো কাঁকড়া বাছাই করে দিলে সেগুলো চলে যায় রান্নাঘরে। রান্নাঘরে মসলা মাখামাখির পর গরম তেলের কড়াইয়ে চলে কাঁকড়া ফ্রাই রান্না। এ রান্না দেখলে কাঁকড়া খেতে ইতস্তত হওয়া মানুষটিরও হয়তো তা খেতে ইচ্ছে হতে পারে। কুয়াকাটা সৈকত পাড়ে মাছ বিক্রির সুবিধার জন্য গড়ে উঠেছে বেশকিছু ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানও। দোকানগুলোর জন্য গোধূলি সন্ধ্যা হতে মধ্যরাত পর্যন্তও জমজমাট থাকে সৈকত পাড়। অনেকের কাছে সৈকত পাড়ের কাঁকড়া বিক্রির স্থানটি এখন ফ্রাই পল্লী নামেই পরিচিত। ফ্রাই পল্লীর দোকানগুলোতে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রকার কাঁকড়া। কেনাবেচাও বেশ জমজমাট। পল্লীর মৃদ্যু আলো, তালপাতার ছাউনিতে জোনাকি পোকার মতো হরেক রঙের মরিচ বাতি দূর থেকেই পর্যটকদের বেশ আকৃষ্ট করে। একতারা, দোতারা, সারিন্দা, গিটার কিংবা বাশির সুরে গানে গানেও জমজমাট থাকতে দেখা যায় এই পল্লীটি।

কুয়াকাটার লেবুর চরে ঘুরতে আসা ফটোগ্রাফার ও পর্যটক রাসেল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এখানকার কাঁকড়া অনেক সুস্বাদু ও তাজা। স্বাদটাও অন্যসব স্থানের কাঁকড়ার থেকে বেশ আলাদা। এখানে মাত্র ৪০ টাকায়ও পাওয়া যায় কাঁকড়া ফ্রাই।’

কুয়াকাটা ফ্রাই পল্লীর কাঁকড়া বিক্রেতা ও কাঁকড়া পল্লীর প্রথম উদ্যোক্তা মো. কাওসার। তিনি বলেন, ‘আমি ৪-৫ বছর ধরে এখানে কাঁকড়া বিক্রি করছি। এখানে সাইজ অনুযায়ী ৪০ থেকে শুরু করে ৬০, ৭০, ১০০ টাকায় পাওয়া যায় কাঁকড়া। এখানকার কাঁকড়া বেশ সুস্বাদু। তাই অনেকেই এখানে শুধুমাত্র কুড়মুড়ে আর মসলা মিশ্রিত সুস্বাদু কাঁকড়া চেখে দেখার জন্য ভ্রমণে আসেন। পর্যটক ছাড়াও স্থানীয়রাও কাঁকড়া ফ্রাই খেতে প্রায় সন্ধ্যাবেলায়ই ভিড় জমান এই সৈকত পাড়ে।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ এপ্রিল ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়