ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিশ্বের সুন্দর সব মসজিদ

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৬ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বের সুন্দর সব মসজিদ

আহমেদ শরীফ : মুসলিমদের আত্মশুদ্ধির মাস রমজান চলছে। তাই বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সব মসজিদগুলোতেও ভিড় বেড়ে চলেছে মুসলিমদের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন সব মসজিদ রয়েছে, যা মুসল্লিদের পাশাপাশি দৃষ্টিকাড়ে পর্যটকদেরও। বিশ্বের সুন্দর সব মসজিদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মসজিদ নিয়ে এ প্রতিবেদন।
 

রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলামের প্রতীক হিসেবেই ব্রুনেইয়ের রাজধানী বান্দার সেরি বেগওয়ানে ১৯৫৮ সালে গড়ে তোলা হয় দৃষ্টিনন্দন সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ। কৃত্রিম একটি জলাধারে গড়ে তোলা এই মসজিদের একটি আকর্ষণীয় দিক হলো জলাধারে ১৬ শতকের সুলতান বলখিয়ার সময়কার একটি রণতরীর রেপ্লিকা। কুরআন নাজিলের ১৪০০ বছর পূর্তিকে স্মরণ করতে এটি নির্মিত হয় ১৯৬৭ সালে। মসজিদটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো খাঁটি স্বর্ণে তৈরি এর প্রধান গম্বুজটি।
 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ হলো মসজিদ আল-হারাম। মক্কায় পবিত্র কাবা শরীফকে ঘিরে গড়ে তোলা এই স্থান মুসলমানদের জন্য খুব পবিত্র। সেখানে প্রতি বছর বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ হজ পালন করতে যান। সে সময় ৪০ লাখের মতো মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন মাসজিদ আল-হারামে। মোট ৪ লাখ বর্গমিটারের বেশি জায়গাজুড়ে নির্মিত হয়েছে মাসজিদ আল-হারাম। এই মসজিদে ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নামাজ আদায় হচ্ছে। মসজিদটি বিশ্বের দশটি ব্যয়বহুল স্থাপনার মধ্যে একটি। এর সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।
 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে নির্মিত শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদটি নানা দিক থেকে অসাধারণ। এই মসজিদে ৪০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে। এছাড়া মসজিদটিতে গম্বুজ আছে ৮২টি, স্তম্ভ আছে ১০০০টি। মসজিদের ভেতরে আছে খাঁটি স্বর্ণে মোড়া ঝাড়বাতি ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্পেট। ইরানের তৈরি ৬০,৫৭০ বর্গফুট আয়তনের কার্পেটটির ওজন ৩৫ টন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। মোট ৩০ একর জমির উপর ধবধবে সাদা মসজিদটি ভিন্ন এক অনুভূতি জাগায় মুসল্লিদের মনে।
 

তুরস্কের ইস্তানবুলের ঐতিহাসিক এক মসজিদ ব্লু মস্ক। সুলতান আহমেদের নির্দেশে ১৬১০ থেকে ১৬১৬ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মিত হয়। মসজিদটিতে ৬টি মিনার আছে। মসজিদটির অভ্যন্তরভাগে ২০ হাজার নীল ইজনিক টাইলস ব্যবহার করা হয়েছিল বলে এর নাম ব্লু মস্ক। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি দেখতে  সব ধর্মের অনেক ট্যুরিস্ট যান প্রতি বছর।
 

২০০৬ সালে মালাক্কা অন্তরীপে আন্দামান সাগর তীরে গড়ে তোলা হয় দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ। এর নির্মাণ শৈলী যেমন খুব আকর্ষণীয়, তেমনি সাগরের পানিতে যখন পুরো মসজিদের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়, তখন মনে হয় পুরো মসজিদটি পানিতে ভেসে আছে। রাতের বেলায় আলো ঝলমলে মসজিদটিকে আরো অসাধারণ লাগে।
 

১৯৮৮ সালে মালয়েশিয়ার শাহ আলম এলাকায় গড়ে তোলা হয় দেশটির সবচেয়ে বড় সুলতান সালাউদ্দিন আব্দুল আজিজ মসজিদ। মসজিদটির নীল ও সিলভার কম্বিনেশনের গম্বুজটি বেশ আকর্ষণীয়। মসজিদের চত্বরে আছে ৪টি দৃষ্টিনন্দন মিনার। প্রতিটা মিনারের উচ্চতা ৪৬৭ ফুট। এই মসজিদে ২৪ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে।
 

নবাব শাহজাহান বেগম ১৮০০ সালের দিকে এই মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আর্থিক সংকটের কারণে ১৯৮৫ সালের আগে মসজিদটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। মোঘল স্থাপত্য শৈলী অনুকরণ করে নির্মাণ করা মসজিদটি দেখতে অনেকটা দিল্লির জামা মসজিদ ও লাহোরের বাদশাহী মসজিদের মতো। এই মসজিদে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারেন। এটি ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ।
 

২০০৮ সালে মালয়েশিয়াতে নির্মাণ করা হয় ক্রিস্টাল মসজিদ নামের আরেকটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। তেরেনগানু এলাকায় গড়ে তোলা মসজিদটি মূলত স্টিল, গ্লাস ও ক্রিস্টালের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় গড়ে তোলা মসজিদটি বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় মসজিদ।
 


         *




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়