ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঠোঁটকাটা-তালুফাটার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে ১৩৬ শিশু

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঠোঁটকাটা-তালুফাটার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে ১৩৬ শিশু

ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : রাজধানীর পার্শ্ববর্তী গাজীপুর থেকে মা আসমা আক্তার, বাগেরহাটের গৌরম্ভা থেকে মা আদুরী দাস, রূপসার রাজাপুর থেকে মা ববিতা দে ছুটে এসেছেন খুলনার শিশু হাসপাতালে বিনামূল্যে ঠোঁটকাটা ও তালুফাটা শিশুদের অপারেশন ক্যাম্পে।

এরা ছাড়াও ১৩৬ মায়ের প্রত্যাশা সন্তানের মুখে ত্রুটিমুক্ত হাসি, স্পষ্ট কণ্ঠস্বর, নিখুঁত মুখমণ্ডল, স্বাভাবিক জীবন ও সামাজিক অভিশাপ মুক্ত। মায়েদের বুকভরা স্বপ্ন স্বাভাবিক মুখমণ্ডল ফিরে পাবে সন্তান আর আনন্দঘন পরিবেশে তাদের লালন-পালন করবে। রোটারী ক্লাব গুলশান লেকসিটি সোমবার থেকে স্থানীয় শিশু হাসপাতালে এ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে।ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর থেকে আসমা আক্তার জানান, তার এক বছর বয়সী কন্যা তানসী ঠোঁটকাটা অবস্থায় জন্ম নেয়। পাঁচ মাস আগে এ অপারেশন সফল হয়। মা ডাক শুনতে পাচ্ছেন তিনি।

সন্তানের তালুকাটা অপারেশনের জন্য খুলনার শিশু হাসপাতালে এসেছেন এই পরিবার। তিনি আশাবাদী তার সন্তানের মুখে ত্রুটিমুক্ত হাসি ফুটে উঠবে।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা গ্রামের আদুরী দাস, রূপসার রাজাপুর গ্রামের ববিতা দে, নগরীর বাগমারা এলাকার সাজেদা বেগম, শেখপাড়ার হোসনে আরা সন্তান বুকে নিয়ে এসেছেন ঠোঁটকাটা-তালুফাটা সন্তানের অপারেশনের জন্য। এ ক্যাম্পে আসা মায়ের সংখ্যা ১৩৬ জন। ক্যাম্পে এসে মায়েরা সাংবাদিকদের কাছে অভিমত ব্যক্ত করেন অপারেশনের পর তারা সন্তানের মুখে ত্রুটিমুক্ত হাসি দেখতে পাবেন।

আমেরিকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ মিশন লিডার বারবারা এলেন ফিশার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, সন্তানের মুখে সুন্দর হাসি দেখতে পাবে মা, এতেই খুশি হবে রোটারীয়ান পরিবার। আর এ খুশি দেখতেই তিনি আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন।

সোমবার শিশু হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও এ হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেইলি অবজারভারের ম্যানেজিং এটিডর শ্যাম শওকত হুসাইন।

আলোচনায় অংশ নেন রোটারীক্লাব অব গুলশান লেকসিটির প্রেসিডেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন, বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম এবং খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম হাবিব। স্বাগত বক্তৃতা করেন সৈয়দ আবু সাঈদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের সুপার ডা. মো. কামরুজ্জামান।

বিদেশ থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন মার্ক জাকোব ফাইজম্যান, রুথ এলিজাবেথ ব্রাউন, রুথ ডরোটি মার্টিনিজ, পুল আলান মাইকেল, শংকর দাস, ন্যান্সি ড্রন, কাত্রায়ন ম্যারি কক্স ও রাফসান হালিম। ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পের সমাপনী দিন।

প্রসঙ্গত, ইউএসএইড-এর জরিপে বিশ্বের ১৪টি শিশু হাসপাতালের মধ্যে ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য সেবা ও শিশু মৃত্যু কমার জন্য খুলনা শিশু হাসপাতাল প্রথম স্থান অধিকারের সনদ পেয়েছে বলে সোমবার কর্তৃপক্ষ জানায়।



রাইজিংবিডি/খুলনা/৩০ জানুয়ারি ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়