ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মাংসপিণ্ডে ঢাকা তমার মুখ

32,100 || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ১৫ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাংসপিণ্ডে ঢাকা তমার মুখ

আরিফ সাওন ও শাহরিয়ার সিফাত : আর দশটি কিশোরীর মতো স্বাভাবিক জীবন চায় তমা আক্তার। কিন্তু এক খণ্ড মাংসপিণ্ডে ঢাকা পড়েছে তার সুন্দর মুখ। সেই মাংসপিণ্ড যেন ঢেকে ফেলেছে তার সুন্দর ভবিষ্যতও।

তমা আক্তারের বাড়ি টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার জশিহাটি পশ্চিম পাড়ায়। দরিদ্র কৃষক আতাহার আলীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে সে সবার ছোট। বাড়ির ছোট মেয়েটির ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে তার পরিবার।

জশিহাটি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তমা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী।

তমা জন্ম থেকেই এ রোগে আক্রান্ত। তার মুখের বাম পাশে রয়েছে অস্বাভাবিক আকারের টিউমার। বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে এর আকার। ঠোঁট বাঁকা হয়ে আছে আর মুখের বাম পাশে ঝুলে আছে মাংসপিণ্ড।

তমার মা শারমিন বেগম জানান, পাঁচ বছর বয়সে তাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসাপাতালে তিন মাস চিকিৎসা করিয়েও কোনো ফল হয়নি। ছয় বছর বয়সে পা পিছলে পড়ে গেলে টিউমারটি ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এ সময় তাকে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা জাতীয় শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা যায়নি। ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসক বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তমাকে ফেরত পাঠায়।

তিনি আরো জানান, টাকার অভাবে তমাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তখন থেকে আর কোনো চিকিৎসাও করানো হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামান্য কৃষি জমি থেকে পাওয়া ফসল দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে তমার বাবা আতাহার আলীর সংসার। দরিদ্রতার কারণে আতাহার আলী দুই ছেলেকে তেমন পড়াশোনা করাতে পারেননি। তারা এখন পৃথক সংসার করছেন। তিন মেয়ের মধ্যে বড় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ছোট মেয়ে তমার ভবিষ্যত নিয়ে তিনি আছেন দুশ্চিন্তায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানোর পর হাল ছেড়ে দিলেও এখন তমার পরিণত বয়সের কথা চিন্তা করে বাবা-মা তার চিকিৎসা করাতে চান। কিন্তু পর্যাপ্ত টাকা-পয়সা না থাকায় তমার বাবা-মা বুঝতে পারছেন না তারা কী করবেন।

তমার মা শারমিন বেগম দেশের বরেণ্য চিকিৎসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি কিংবা সরকারি/বেসরকারি সংস্থা তমার মেয়ের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন তাহলে হয়তো তার মেয়েটি স্বাভাবিক জীবন পাবে।

তমা আক্তার বলে, আমি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চাই।

তমার বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. ইকবাল মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি তমাকে বিএসএমএমইউতে আনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তমাকে নিয়ে আসলে দেখে বলা যাবে কী অবস্থায় আছে। পরে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করা যাবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মার্চ ২০১৭/সাওন/শাহরিয়ার সিফাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়