ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৪.৬ ভাগ বিষণ্নতায় আক্রান্ত’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৫ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৪.৬ ভাগ বিষণ্নতায় আক্রান্ত’

সচিবালয় প্রতিবেদক : ‘বিষণ্নতা একটি রোগ। শুধু বাংলাদেশে নয়, এটি বিশ্বব্যাপী রয়েছে। পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। দেশভেদে শতকরা ৩ থেকে  ১৭ জন মানুষ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। বাংলাদেশে ৪.৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এ রোগে ভুগছেন।’

৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসব তথ্য জানান।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪.৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নয়, এটি যেকোনো বয়সের মানুষ, এমনকি শিশুদের মধ্যেও দেখা দিতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে বিষণ্নতার লক্ষণ প্রথমবারের মতো প্রকাশ পায়। ১৫ থেকে ১৮ বছর ও ৬০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে এর ঝুঁকি কিছুটা বেশি।’

বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিষণ্নতা দীর্ঘমেয়াদী রোগ। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, একাকিত্ব, পারিবারিক ও সম্পর্কের সমস্যা, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়, বিবাহ বিচ্ছেদ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, প্রবাস জীবন, অভিবাসন, মাদকসেবন ইত্যাদি কারণে বিষণ্নতা হতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিষণ্নতা রোগের বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে। এজন্য ধৈর্য সহকারে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। এক্ষেত্রে ওষুধ ও সাইকোথেরাপি (ধারণা ও আচরণ পরিবর্তনের চিকিৎসা) দুই-ই প্রয়োজন। তবে বিষণ্নতা রোগ থেকে বাঁচাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাছের মানুষ, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনরাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সহায়তা করতে পারেন, সাহস যোগাতে পারেন। কেউ বিষণ্নতায় আক্রান্ত হলে তার সঙ্গে সময় কাটান, কথা-বার্তা বলে বা দৈনন্দিন কাজ করতে উৎসাহ দিন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভালো হয়ে যাবেন বলে আশ্বস্ত করুন। সুষম খাদ্য খেতে বলুন। নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিন এবং ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিন।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে প্রতিবছর ৭ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

৭ এপ্রিল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা হবে। অন্যান্য জেলা ও উপজেলাতেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, প্রতিবছরই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যাকে চিহ্নিত করে সে বিষয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি, সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সবার সমর্থন অর্জনই দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য। এ বছরের নির্বাচিত বিষয় ‘ডিপ্রেশন: লেটস টক’ যার বাংলা অর্থ ‘বিষণ্নতা: আসুন কথা বলি’। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় সরকার এ ব্যাপারে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্স্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের শুভ সূচনা করেন। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠান থেকে জনগণ উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ এপ্রিল ২০১৭/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়