ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দেশে পেট মোটা শিশুর সংখ্যা কমেছে

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ৫ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশে পেট মোটা শিশুর সংখ্যা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, দেশে খর্বকায় পেট মোটা শিশুর সংখ্যা কমেছে। তাই এখন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আফ্রিকার খর্বকায় পেটমোটা শিশুর ছবি বেশী দেখানো হয়। বাংলাদেশের শিশুদের ছবি কম দেখানো হয়।

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল লো বার্থ ওয়েট সার্ভে ২০১৫ এর অবহিতকরণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেস (এনএনএস) ও ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক হেলথ নিউট্রিশন (আইপিএইচএন) এ কর্মশালা আয়োজন করে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘দেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশী স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাদ্য সচেতন হয়েছে। তাই দেশে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে অপুষ্টি।’

তিনি বলেন, ‘মায়ের সেবা যত্নের মধ্যেই সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যবান সন্তান জন্ম হয়ে থাকে। পিতামাতার দরিদ্রতা ও শিক্ষার অভাবে দেশে অনেকক্ষেত্রে সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যবান সন্তান জন্ম নিচ্ছে না। নানা সীমাবদ্ধতায় আমাদের দেশের মায়েরা অনেকক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। যেদিন দেশের মানুষ সম্পূর্ণ দারিদ্রমুক্ত ও শিক্ষিত হবে সেদিন শতভাগ সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যবান শিশু জন্ম নেবে। মায়েদের সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যবান সন্তানের জন্মে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই কথা ভাবনায় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বড় বড় ক্লিনিক ও চিকিৎসকরা প্রসুতিকে চটজলদি সিজার করার ব্যাপারে অত্যন্ত উৎসাহ দিয়ে থাকে। এতে দেশে অনেক শিশু সময়ের আগে জন্ম নেয়। নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়ায় এসব শিশু বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অনেক জটিল রোগসহ নানা সমস্যায় ভোগে। সমাজ ও দেশ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. শরীফ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ডা. এ বি এম মুজহারুল ইসলাম। সার্ভের পটভুমি ও সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন ড. জাকির হোসেন।

সার্ভের পটভুমি ও সারসংক্ষেপ তুলে ধরে ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘জন্মের সময় যেসব শিশুর ওজন ২৫০০ গ্রামের কম হয় সেসব নবজাতককে কম ওজনের নবজাতক হিসেবে সনাক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কম ওজনের নবজাতকের জ্ঞান কম বাড়ে এবং প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এই কম ওজনের নবজাতক সহজেই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। শিল্পোন্নত দেশে ৭ ভাগ এবং অনুন্নত দেশে ১৭ ভাগ কম ওজনের শিশু আছে বলে ১৯৯২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ ঘোষণা করে।’

তিনি বলেন, ‘১১৮জন কালেক্টর, ১৬জন সুপারভাইজার, ৪জন কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট অফিসার, ১জন ফিল্ড ম্যানেজার, ১জন রিসার্চ অফিসার এই অনুসন্ধানে ডাটা সংগ্রহে যুক্ত ছিলেন। ৩২০০ গ্রামের এবং ১৩০০ শহরের সর্বমোট ৪৫০০ গর্ভবতীকে এই জরিপের আওতায় নেয়া হয়। গর্ভবতী মায়েরা ৫৩.৫ ভাগ ছেলে শিশুর জন্ম দেন। এদের মধ্যে ৪২.৩ ভাগ মা বাড়িতে সন্তান প্রসব করেন। আর সরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করেন ২৪.৫ ভাগ এবং ২৭.২ ভাগ। এসব নবজাতকের ওজনের হার গড়ে ২৮৯৮ গ্রাম। এই নবজাতকদের গড় দৈর্ঘ্য হার ৪৭.৩ সেন্টিমিটার।

দীর্ঘ তের বছরের মাথায় এই জরিপ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। ২০০৩-২০০৪ সালে এ ধরণের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল বলে কর্মশালায় জানানো হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ এপ্রিল ২০১৭/সাওন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়