ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২৯ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

আরিফ সাওন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ১৯ বছর পেরিয়ে ২০ বছরে পা রাখছে। ৩০ এপ্রিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তম বিশ^বিদ্যালয় দিবস। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ^বিদ্যালয় থেকে জানা গেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ৫৪টি বিভাগ। বর্তমানে এখানে হাসপাতালে শয্যা ১৯০৪টি, এর মধ্যে অর্ধেকই গরীব রোগীদের জন্য বিনা ভাড়ার বিছানা। প্রতিদিন এ হাসপাতালে বহির্বিভাগে প্রায় ৫০০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। বৈকালিক স্পেশালাইজড আউটডোরে প্রতিদিন ১০০০ রোগী সেবা নিচ্ছেন। এখানে রয়েছে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা। এমআরআই, সিটিস্ক্যানের মতো ব্যয়বহুল পরীক্ষাও এখানে তুলনামূলকভাবে কম খরচে আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেশিনের মাধ্যমে করা হচ্ছে। প্রায় ৪০০০ জনবল নিয়ে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে বর্তমান প্রশাসন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসানের মেয়াদ দুই বছর পার হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই দুই বছরে সাফল্য অনেক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার (জনসংযোগ) প্রশান্ত কুমার মজুমদার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে বর্তমান প্রশাসন একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলে প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডীন ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময়, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা ও নার্সদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। ‘রোগীর দায়িত্ব চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই নিতে হবে, যাতে রোগীর স্বজনরা রোগীকে হাসপাতালে রেখে নিরাপত্তা বোধ করে তা নিশ্চিত করতে হবে।’-  সে লক্ষ্য পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান কাজ করে চলছেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, রোগীদের সুবিধার কথা ভেবে সাধারণ জরুরি বিভাগ চালুর কার্যক্রম এগিয়ে নিতে জোর প্রচেষ্টা চলছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবেশ, ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বর্তমান প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসানের দুই বছর মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, চিকিৎসা, গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ-

 

গবেষণামূলক কার্যক্রম: গত ৫ বছরে (১১-১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) মোট ১৪৪৭টি গবেষণা কর্ম সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে গত ২ বছরে ৭৪৩টি গবেষণা কর্ম সম্পন্ন হয়েছে। রিচার্স এডমিনিস্ট্রেশন এন্ড প্রোমোশন সেল গঠন। গত ২ বছরে ১০৮ জন শিক্ষক ও ৫১২ জন ছাত্রছাত্রীসহ মোট ৬২০ জনকে গবেষণা মঞ্জুরী ও থিসিস গ্রান্ট প্রদান। অসংক্রামক রোগ (নন কমিউনিকেবল ডিজিস) গবেষণায় আঞ্চলিক কেন্দ্রের উদ্বোধন।

গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে শিকাগো ইউনিভার্সিটি, কানাডার নভেল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সিএমএইচ, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণমূলক কার্যক্রম: বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের ভর্তি পরীক্ষা কোনো ধরণের অভিযোগ ছাড়াই অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে যথাযথ নিয়মে সম্পন্ন ও দ্রুততার সাথে ফলাফল প্রকাশ; বিশেষ করে ভর্তি পরীক্ষার সম্পন্ন হওয়ার দিনেই ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

প্যাডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, ২. প্যালিয়েটিভ মেডিসন ৩. চাইল্ড এন্ড এডলসেন্ট মেন্টাল হেলথ এবং ৪. প্যাডিয়াট্রিক নিউরোলজি এন্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক এমডি রেসিডেন্সিসহ বর্তমানে ৯১টি পোস্ট গ্রাজুয়েট বিষয় (এমডি-৩৪টি, এমএস-২২টি, এমপিএইচ-৮টি, এমফিল-১১টি, ডিপ্লোমা-১৪টি উল্লেখযোগ্য) চালু করা হয়েছে।

দেশে প্রথমবারের মতো এমএসসি ইন নার্সিং কোর্স চালু করা হয়েছে। অধিভুক্ত মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, ইনস্টিটিউশনের সংখ্যা বাড়িয়ে ৪২টিতে উন্নীত করা হয়েছে। ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তন (টিএসসি)- চালু করা হয়েছে। সান্ধ্যকালীন শিক্ষা ও সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, দায়িত্বশীলতা ও নৈতিক বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু হয়েছে। 

চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নমূলক কার্যক্রম: চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে ডীন, চেয়ারম্যান, শিক্ষক,  চিকিৎসক,  ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স ও  কর্মচারীদের মতবিনিময়। তথ্যসমূহ সাধারণ রোগীরা যাতে সহজেই পেতে পারেন সে জন্য তথ্য ও অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন। সকাল, বিকেল, সন্ধ্যা ও রাত এবং বন্ধের দিনেও রাউন্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগীদের সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ। নার্সদের সেবার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। রোগীদের সাথে হাসিমুখে কথা বলা ও নিজ হাতে ওষুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করা। এন্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহার উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এন্টিমাইক্রোবিয়াল গাইডলাইনের প্রথম অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করা হয়েছে যা দেশে প্রথম।

চিকিৎসা সেবামূলক কার্যক্রম: চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, শৃঙ্খলা ও সার্বিক পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। সার্বিক ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ। কেবিন ব্লকে রোগীদের সুবিধার্থে জরুরি বিভাগের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনসহ এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কার্যকরী প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জরুরি বিভাগের অবকাঠামোগত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রবীণদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য জেরিয়াট্রিক মেডিসিন উইং চালু। মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচাতে কেবিন ব্লকে সর্বাধুনিক ৩৭ শয্যাবিশিষ্ট  আইসিইউ ও এইচডিইউ কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া। নবজাতকদের জন্য ৩১ শয্যাবিশিষ্ট অত্যাধুনিক এনআইসিইউ কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া। প্রথমবারের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় করোনারি এনজিওপ্লাস্টি সম্পন্ন। প্রথমবারের মতো ডে কেয়ার ওটি চালু। নতুন তিনটি বিভাগে বৈকালিক স্পেশালাইজড আউটডোর সেবা চালু। বর্তমানে ২৪টি বিভাগে এ সেবা চালু রয়েছে।

বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ল্যাব পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, শিশু কিডনি বিভাগে অত্যাধুনিক আলট্রাসনোগ্রাফি ও রেনাল বায়োপসি মেশিন চালু, প্রথমবারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সুচিকিৎসার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সেল গঠন, পুরাতন টিনশেড আউটডোরে ১৮ শয্যাবিশিষ্টরিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন ওয়ার্ড চালু, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে ডেঙ্গু ও ক্যান্সার রোগীদের সুবিধার্থে এফেরেসিস সার্ভিস চালু, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ট্রান্সপ্ল্যান্ট রোগীদের জন্য প্যানেল রিঅ্যাকটিভ এন্টিবডি (পিআরএ) পরীক্ষার সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এইচএলএ টিস্যু টাইপিং ল্যাবরেটরি উদ্বোধন, রিউমাটোলজি স্পেশালাইজড ক্লিনিক চালু, বহির্বিভাগে সমন্বিত সেবা সমৃদ্ধ থ্যালাসেমিয়া সেন্টার চালু, হেমাটোলজি স্পেশালাইজড ল্যাব উদ্বোধন, প্যাথলজি বিভাগে সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ে সাইটোলজি পদ্ধতি চালু করা। কেবিন ব্লকে সর্বাধুনিক মডিউলার ওটিসহ ওটি কমপ্লেক্স চালু করা হয়েছে। ৫১২টি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্যযোগ্য চিকিৎসা সেবামূলক কার্যক্রম:

মোহাম্মদ আলী নামে অপূর্ণাঙ্গ জোড়া শিশুর সফল অস্ত্রোপচার। বিরল রোগে (ওয়ের উলফ সিনড্রোম) আক্রান্ত বীথির সফল চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলছে।   


প্রশাসনিক কার্যক্রম:
৪৩টি বিভাগে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রদান। সিন্ডিকেট সভা-৮টি। একাডেমিক কাউন্সিলের সভা-৪টি।  প্রশাসনিক সভা-৫টি। নিয়মিত প্ল্যানিং কমিটির সভার আয়োজন। নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ। লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে ২৯২ জন নার্স নিয়োগ। ১৪ জন অধ্যাপক, ৫৭ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৪৫ জন সহকারী অধ্যাপকসহ ১১৬ জন শিক্ষকের পদোন্নতি।  ৪৫ জন মেডিক্যাল অফিসারকে কনসালটেন্সি পদে পদায়নসহ সম্মানিত চিকিৎসকদের জন্য পদোন্নতির ব্যবস্থা। প্যালিয়েটিভ কেয়ারসহ নতুন ৭টি বিভাগ ও ১টি অনুষদ চালুর জন্য সিন্ডিকেটে অনুমোদন। প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতির নীতিমালা পাস। প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জনকে নার্সকে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি।

উন্নয়নমূলক কার্যক্রম:

সেন্টার অব এক্সিলেন্স প্রকল্পের আওতায় ২য় পর্যায়ে আধুনিক কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ, বেসিক সায়েন্স ভবনের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ৮৭টি প্রকল্পের বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন ও সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আধুনিক টিচার্স লাউঞ্জ উদ্বোধন। ইনস্টিটিউট অব কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেল চালু করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক সংরক্ষণমূলক কার্যক্রম:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি কক্ষ (কক্ষ নং ২৪২) সংরক্ষণ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি কক্ষ (কক্ষ নং ১১৭, ব্লক-বি) সংরক্ষণ।

সাংস্কৃতিক কার্যক্রম:

মেধার পাশাপাশি মননের বিকাশের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বাংলা নববর্ষ ১৪২২ উদযাপন। পবিত্র ঈদ উল ফিতর ও পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন। প্রথমবারের মতো শারদীয় দুর্গাপূজা পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ২০১৫ ও ২০১৬ আয়োজন। প্রথমবারের মতো বড় দিন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ২০১৬ উদযাপন। প্রথমবারের মতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৯৭তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন।

গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্প ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম:

ইনস্টিটিউট অফ প্যাডিয়াট্রিক নিউরো-ডিসঅর্ডার এন্ড অটিজম ইন বিএসএমএমইউ (ইপনা) বাস্তবায়ন। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্প।

২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৭০০ থেকে ১০০০-এ উন্নীত করে ওই প্রকল্পের ডিপিপি প্ল্যানিং কমিশনে সাবমিট করা হয়। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঋণ সহায়তা পেতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও রিপাবলিক অফ কোরিয়া-এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট সেন্টার বেইসড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়।

গত ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই কনসালট্যান্টদের নির্বাচিত করা হয়। নকশা তৈরি ও সুপারভিশনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইইউএলজেআই (ঊঁষলর) কনসোর্টিয়ামের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ১৭ আগস্ট কনসালটেন্সি কার্যক্রম উদ্বোধন। ১৫ ডিসেম্বর নকশা প্রদর্শনী। ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি নকশা প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত এবং আগামী জুলাই মাসে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হবে।

শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের কল্যাণে ১৫০ জন সন্তানের মুখে শুনতে পাচ্ছেন মা-বাবা ডাক। ‘ইস্টাবলিসমেন্ট অব ন্যাশনাল সেন্টার ফর সার্ভিক্যাল এন্ড ব্রেস্ট ক্যান্সার স্ক্রিনিং এন্ড ট্রেনিং’ প্রকল্পের কার্যক্রমের কারণে জরায়ু ক্যান্সারে দেশে মৃত্যু হার ১ম থেকে নেমে ২য় স্থানে এসেছে। পিএমটিসিটি কার্যক্রমের কারণে এইচআইভি আক্রান্ত ৩৮ মা সুস্থ সন্তান প্রসব করেছেন। ৩২ শিশু এইচআইভি মুক্ত বলে প্রমাণিত হচ্ছে। অন্য শিশুরা পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বীকৃতি ও সাফল্য:

শিক্ষা ও গবেষণায় সাফল্যের কারণে স্পেনের সিমাগো রিসার্চ গ্রুপ পরিচালিত জরিপে বিশ্ব সেরার তালিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ৬৪০তম স্থান অর্জন করেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও গবেষণায়  গতিশীল নেতৃত্বের জন্য প্রদান করা হয় এশিয়ার অত্যন্ত মর্যাদা সম্পন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার এডুকেশন লিডারশিপ এওয়ার্ড। যা গত বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসানকে প্রদান করা হয়।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা:

ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশন’ চালু করা। সেন্টার অব এক্সিলেন্স-এর তৃতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু। রোগীদের প্রয়োজনে সি ব্লকে আরো ১৭ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ও এইচডিইউ চালু। শিশুদের জন্য আইসিইউ চালুর ব্যবস্থা করা। সাধারণ ইমার্জেন্সি চালু করা। সাধারণ জরুরি বিভাগ চালুর টেন্ডার কার্যক্রম চলছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যেই এটা চালু করা সম্ভব হবে। সি ব্লকে পুরোনো ওটির সংস্কারসহ শিগগিরই আরো ৪টি নতুন ওটিসহ ১টি বৃহৎ পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড চালু হচ্ছে।  ডে কেয়ার সেন্টার চালু করা এবং মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

একটি ওয়ান পয়েন্ট  চেক আপ সেন্টার চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, গত অর্থ কমিটিতে ওয়ান পয়েন্ট চেক আপ সেন্টারের নীতিমালা, অর্গানোগ্রাম অনুমোদন হয়েছে। পরবর্তী সিন্ডিকেটে অনুমোদনের পর টেন্ডারে দেয়া হবে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ এপ্রিল ২০১৭/ সাওন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়