ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

২৭ বছর পূর্ণ করল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৪, ২৫ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২৭ বছর পূর্ণ করল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ২৭ বছর পূর্ণ হলো। এই উপলক্ষে আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।

দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের গেজেট প্রকাশ হয়।

১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করা হয়। ১৯৯০ সালের জুন মাসে জাতীয় সংসদে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯০’ পাস হয়, যা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ওই বছর ৩১ জুলাই। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে ৪টি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন এবং ৩১ আগস্ট ক্লাস শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। পরে একই বছরের ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

২০০২ সালের ২৫ নভেম্বর আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে উদযাপিত হয় প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এরই ধারাবাহিকতায় সেই থেকে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। সেশনজট, সন্ত্রাস ও রাজনীতিমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রমের ২৭ বছর পূর্ণ করল।



মহানগরী খুলনা থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাশে গল্লামারীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকা ছিল ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বধ্যভূমি। প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নবম।

সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এখানে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা, চারুকলাসহ অন্যান্য বিষয়ের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি স্কুল (অনুষদ) ও ২টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। এখানে মোট ২৮টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ব্যাচেলর ডিগ্রি, ব্যাচেলর অব অনার্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি, এম ফিল এবং পিএইচডি দেওয়া হয়।

কলা ও মানবিক স্কুলের আওতায় রয়েছে ইংরেজি, বাংলা এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিন।। জীব বিজ্ঞান স্কুলের আওতায় রয়েছে এগ্রোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, ফরেস্টি এন্ড উড টেকনোলজি, ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি, ফার্মেসি ও সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিন। 

আইন স্কুলের আওতায় রয়েছে আইন ও বিচার ডিসিপ্লিন। ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের আওতায় রয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিন।  বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের আওতায় রয়েছে আর্কিটেকচার, আরবান এন্ড রুরাল প্লানিং, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিন। সমাজ বিজ্ঞান স্কুলের আওতায় আছে অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ডেভলোপমেন্ট  স্টাডিজ ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন। 



খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের আওতায় তিনটি ডিসিপ্লিন চালু রয়েছে। এগুলো হলো ড্রইং এন্ড পেইন্টিং, প্রিন্ট মেকিং ও ভাস্কর্য ডিসিপ্লিন। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীন মাস্টার অব এডুকেশন (এমএড) এবং পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (পিজিডিএড) প্রোগ্রাম চালু হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সংখ্যা চার শতাধিক। ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে প্রায় সাত হাজার। শিক্ষা কার্যক্রমে গত ২৭ বছরে ২৩টি ব্যাচে উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েটের সংখ্যা ১০ সহস্রাধিক।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রাক্কালে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় বর্তমানের প্রচেষ্টায় আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়নের নতুন দিক-নির্দেশনা দিতে হবে। 




রাইজিংবিডি/খুলনা/২৪ নভেম্বর ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়