ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পাক সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথম বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫১, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাক সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথম বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ

ছবি : সংগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছে পুলিশ। শত্রুকে লক্ষ্য করে পুলিশই প্রথম বুলেট ছুড়েছিল। ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর প্রধান টার্গেট ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স।

সেদিন পুলিশের সশস্ত্র প্রতিরোধে পাক বাহিনী হটে গেলেও অনেক পুলিশ সদস্য শহীদ হওয়ায় রাজারবাগে তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে করা হয়েছে জাদুঘর।

পুলিশের বই থেকে জানা গেছে, ওই রাতে শান্তিনগর মোড়ে আসা মাত্রই পাশের ডন স্কুলের (বর্তমানে ইস্টার্ন শপিং মল) ছাদ  থেকে পাক বাহিনীর এক সৈনিককে লক্ষ্য করে প্রথম বুলেটটি ছোড়েন এক বাঙালি পুলিশ সদস্য। থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে ছোড়া লক্ষ্যভেদী ওই বুলেটে পাকিস্তানি ওই সৈনিক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হানাদার বাহিনী বুঝতে পারে বাঙালিরাও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত। এরপরই শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ।

পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি) আবিদা সুলতানা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের সদস্যরা পাক বাহিনীর আক্রমণের শিকার হতে পারেন, এমনই একটি ধারণা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আলোচিত হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের কাছ থেকেও একই ধরনের সংবাদ আসতে থাকে। ব্যারাকে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা পাকিস্তানি বাহিনীর সম্ভাব্য আক্রমণ মোকাবিলায় প্রতিরোধযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

২৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে টহলরত একটি পুলিশ টহল টিম বেতার মারফত জানায়, পাকবাহিনীর একটি বড় ফোর্স যুদ্ধসাজে শহরের দিকে এগুচ্ছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে খবর আসে, তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান ও বর্তমানে রমনা পার্কের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সাঁজোয়া যান অপেক্ষা করছে।

সেদিন রাতে ওয়্যারলেস সেটে প্রথম বার্তা দেন সেই সময়ের কনস্টেবল শাহজাহান মিয়া। তিনি বলেন, ‘ওপরে নির্দেশে এ বার্তা সব জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। অন্যরা অস্ত্রাগারের তালা শাবল দিয়ে ভেঙে ফেলে। থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও বেটা গান এবং গুলি নিয়ে বের হয়ে যান বাঙালি পুলিশ সদস্যরা। রাজারবাগের পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে পুলিশ সদস্যদের সতর্কও করা হয়েছিল।’

রাজারবাগের পুলিশ জাদুঘরে তথ্য আছে, একজন ডিআইজি ও চারজন পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পদবির এক হাজার একশ’র বেশি পুলিশ সদস্য ওই রাতে শহীদ হন। আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরও অনেকে। প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ নভেম্বর ২০১৭/মাকসুদ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়