ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে’

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ৯ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসক, নার্স বা অন্য স্টাফরা ঠিকমতো গ্রাম পর্যায়ে অনেক জায়গায় তাদের দাযিত্ব ঠিকমতো পালন করে না। ফলে জনগণের বিরাট অংশ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। সেই সঙ্গে মনিটরিংয়েরও প্রয়োজন রয়েছে।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

নারীপক্ষ এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে বৈশ্বিক উন্নয়ন এজেন্ডার আলোকে বাংলাদেশের নারীর স্বাস্থ্য প্রজনন অধিকার সুরক্ষা শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করা হয়। এতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন নারীপক্ষের সদস্য সামিয়া আফরিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব কে এম আব্দুস সালাম, নিপোর্টের মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত সচিব রৌনক জাহান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমসিএইস) ও পরিচালক (এমসিএইস সার্ভিস) ডা. মোহাম্মদ শরীফ।

নির্ধারিত আলোচক ছিলেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু, বিশ্বব্যাংকের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ডা. আসিফ নাসিম, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ। সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।

ডা. লায়লা পারভিন বানু বলেন, সেবাদানকারী লোকগুলো কেন্দ্রে কেন থাকছেন না, সে কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তারা যাতে কেন্দ্রে থাকেন সে ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ এবং পরিকল্পনা নিতে হবে। তাদের কিছু বাধ্যবাধকতার ভেতর নিয়ে আসলে তারা অবশ্যই গ্রামে থেকে সেবা দিতে বাধ্য হবেন। নারী স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কোনো বাজেট নেই, এটা আমাদের ঠিক করতে হবে।

তৌফিক মারুফ বলেন, আমাদের উদ্যোগের কোনো ঘাটতি নেই। অন্য যেকোনো খাতের চেয়ে এ খাতে উদ্যোক্তা বেশি আছে। তবে সমস্যা আছে। মফস্বলে সব জায়গায় দেখা যায়- ডাক্তার, নার্স বা অন্যান্য যে স্টাফ তারা নিয়মিত থাকেন না। মনিটরিংয়ের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া তাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। তাদের আত্মশুদ্ধি করে মাঠে নামাতে হবে। মনিটরিং সরকার একার করলে হবে না, আমাদের সকলেই করতে হবে।

কে এম আব্দুস সালাম বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায় যদি এখনকার বাজেট দেখা যায়, তিন-চার গুণ বেড়েছে। আমরা ২০৪০ সালের একটা টার্গেট করেছি। সেই চিন্তা করেই আমাদের এগোতে হবে। আমরা দিন দিন সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এসডিজি প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামা হয়েছে। আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে এসডিজি বাস্তবায়ন করব তা নয়; আমাদের এমন প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে আমরা এসডিজি বাস্তবায়ন করবই করব।

রৌনক জাহান বলেন, নিপোর্ট স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি যে, আজকে স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা যে পর্যায়ে আছে, এতে নিপোর্টের একটা বড় অবদান রয়েছে। আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। সে চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেগুলো প্ল্যান করে সমন্বিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

ডা. মোহাম্মদ শরীফ বলেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিক। সেখানকার সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সমস্যা রয়েছে। অদক্ষ লোকজনই সেখানে সিজার করেন, যার ফলে প্রসূতি মৃত্যু সেখানেই বেশি হয়।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ১০ বছরে উন্নয়নশীল অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি যখন ৫ দশমিক ১ শতাংশ, তখন আমাদের গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৭৫৯ মার্কিন ডলার থেকে ১৭৫২ মার্কিন ডলার। দ্বিগুণের অনেক বেশি। মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমেছে। বাজেটের আয়কর বেড়েছে ৮৯ হাজার কোটি টাকা থেকে ৪ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকায়। বার্ষিক রপ্তানি ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। আমদানিও বেড়েছে।

বিভিন্ন দিক থেকে দেশ এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের ইতিবাচক হতে হবে। ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। ভালো দিকগুলো আলোচনা কম হয়। আমি ভালো ভালো দিকগুলো বেশি বেশি বলতে চাই। অনকে ভালো ভালো প্র্যাকটিস আমাদের মধ্যে আছে। ভালো কাজের দিক থেকে আমরা অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে আছি। আমাদের পজেটিভ কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। তাহলে শক্তি বেশি পাওয়া যায়। কাজ করার সাহস পাওয়া যায়।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জুন ২০১৮/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়