দেশে বেড়েছে ক্যান্সারের প্রকোপ, মৃত্যুর হারও
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে বেড়েছে ক্যান্সারের প্রকোপ, একই সঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুর হার। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএআরসির গ্লোবোক্যান ২০১৮ প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশে নতুন করে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮১ জন। এতে মৃত্যু হচ্ছে ১ লাখ ৮ হাজার ১৩৭ জনের। গ্লোবোক্যানের ২০১২ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী যা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৯১ হাজার।
শনিবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় সেন্টার ক্যান্সার প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ (সিসিপিআর) এবং কমিউনিটি অনকোলজি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ গ্লোবোক্যান ২০১৮ এর এই প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায়।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান ও সিসিপিআরের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, ক্যান্সার গবেষণার দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএআরসি বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে ক্যান্সার রেজিস্ট্রি থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই ও সমন্বয় করে গ্লোবোক্যান নামে একটা ডাটাবেজ প্রকাশ করে, যেখানে বাংলাদেশসহ ১৮৫ দেশের অনুমিত হিসেব দেওয়া থাকে।
গ্লোবোক্যান ২০১৮ এর এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্ত ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৮১ জনের মধ্যে পুরুষ ৮৩ হাজার ৭১৫ জন এবং নারী ৬৭ হাজার ৬৬ জন। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৫৩ জন ধরে এই হিসাব করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে শীর্ষ ৫টি ক্যান্সার হলো- খাদ্যনালীর ক্যান্সার (২০ হাজার ৯০১ জন। ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার (১৩ হাজার ৪০১ জন। ৮ দশমিক ৯ শতাংশ), স্তন ক্যান্সার (১২ হাজার ৭৮৪ জন। ৮ দশমিক ৫ শতাংশ), ফুসফুস ক্যান্সার (১২ হাজার ৩৭৪ জন। ৮ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং জরায়ুমুখের ক্যান্সার (৮ হাজার ৬৮ জন। ৫ দশমিক ৪ শতাংশ)।
পুরুষদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে খাদ্যনালীর ক্যান্সার (১৩ হাজার ৪৮৩ জন। ১৬ দশমিক ১ শতাংশ), ফুসফুস ক্যান্সার (৯ হাজার ২৫৪ জন। ১১ দশমিক ১ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যন্সার (৮ হাজার ৮৯৫ জন। ১০ দশমিক ৬ শতাংশ), গলবিল বা হাইপোফ্যারিংস ক্যান্সার (৬ হাজার ৫৪ জন। ৭ দশমিক ২ শতাংশ) ও পাকস্থলীর ক্যান্সার (৪ হাজার ৭৯২ জন। ৫ দশমিক ৭ শতাংশ)।
নারীদের ক্যান্সারে শীর্ষে রয়েছে স্তন ক্যন্সার (১২ হাজার ৭৬৪ জন। ১৯ শতাংশ), জরায়ুমুখের ক্যন্সার (৮ হাজার ৬৮ জন। ১২ শতাংশ), খাদ্যনালীর ক্যান্সার (৭ হাজার ৪২৩ জন। ১১ দশমিক ১ শতাংশ), পিত্তথলির ক্যান্সার (৫ হাজার ২৬১ জন। ৭ দশমিক ৮ শতাংশ) এবং ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যন্সার (৪ হাজার ৫০৬ জন। ৬ দশমিক ৭ শতাংশ)।
প্রতিবেদনের তথ্য জানানোর পর অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, আমাদের দেশে হাসপাতালভিত্তিক এই প্রতিবেদনের শীর্ষ পাঁচ ক্যান্সারের ক্রমবিন্যাসের গড়মিল রয়েছে। কিন্তু জনগোষ্ঠীভিত্তিক নিবন্ধন আমাদের না থাকায় এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলেও তা প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ নেই।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮/সাওন/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন