ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার হুমকিতে দেশের জনস্বাস্থ্য

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৭ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার হুমকিতে দেশের জনস্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনিয়ন্ত্রিত এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের মানুষ ও প্রাণিকে সুপার-বাগের হুমকির সম্মুখীন হতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে এন্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলেই এই ব্যাকটেরিয়ার (সুপার-বাগ) সংক্রমণ ঠেকাতে অধিকাংশ ওষুধই ব্যর্থ হচ্ছে।

শনিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত ‘এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সুপার-বাগ: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য’-শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল এবং রাশিয়ার ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের ৬০ শতাংশই এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী। আগামীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশকে এই এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার চ্যালেঞ্জ চরমভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের প্রাক্তন ডিন প্রফেসর এ বি এম ফারুকের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শক ডা. মু. মুশতাক হোসেন, বিসিএসআইআর এর প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ড. কে এম ফরমুজুল হক, পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পবার সদস্য মুস্তারি বেগম, এলিজা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য বর্তমানে একটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এন্টিবায়োটিক হচ্ছে এমন একটি ওষুধ যা দ্বারা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণজনিত রোগের চিকিৎসা করা হয়। এ সকল ওষুধের প্রতি যখন ব্যাকটেরিয়া আর সংবেদনশীল থাকে না তখনই এন্টিবায়োটিক ওই ব্যাকটেরিয়াটির বিরুদ্ধে অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণজনিত রোগের চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে খুবই সাধারণ ইনফেকশন বা সংক্রমণের চিকিৎসাও জটিল হয়ে পড়ে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, সারা বিশ্বে এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা এখন একটি বৃহৎ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি বিশ্বের জনস্বাস্থ্যের প্রতি একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কেবলমাত্র ইউরোপেই প্রতি বছর ৩৩ হাজার মানুষ এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতার কারণে মৃত্যুবরণ করে। গবেষকদের ভাষ্যমতে, এই অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে, যদি এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতাকে রোধ না করা যায়। যদি এভাবেই এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতার হার বৃদ্ধি পেতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে অতি সাধারণ রোগেও মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে।

এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতার কিছু কারণ হিসেবে বক্তারা বলেন, অপ্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক সেবন করা, রেজিস্টার্ড স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ ব্যাতিরেকে ভুল এন্টিবায়োটিক সেবন করা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ অনুযায়ী কোর্স সম্পন্ন না করা, এন্টিবায়োটিক-মিশ্রিত পশুখাদ্য এবং পোলট্রি-ফীড গ্রহণকারী প্রাণির মাংস খাওয়া, পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে এন্টিবায়োটিক ওষুধ ভাগাভাগি করে নেওয়া, প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক ওষুধ জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ নভেম্বর ২০১৮/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়