ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১ উৎস, দুদকের ২৫ সুপারিশ

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৮, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১ উৎস, দুদকের ২৫ সুপারিশ

সচিবালয় প্রতিবেদক : সারা দেশে স্বাস্থ্য খাতে অনুসন্ধান চালিয়েছে দুর্নীতি দম কমিশন (দুদক) কর্তৃক গঠিত প্রাতিষ্ঠানিক দল। অনুসন্ধানের আলোকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে দুদক। সেখানে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১টি উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। এ খাত থেকে দুর্নীতি নির্মূলে ২৫ দফা সুপারিশ করেছে দুদক।

বৃহস্পতিবার সচিবালয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

দুদকের এই কমিশনার বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেসব খাতে দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে, এমন ১১টি খাত আমরা ধরতে পেরেছি। এসব জায়গা থেকে কীভাবে দুর্নীতি নির্মূল হবে তার জন্য ২৫টি সুপারিশ আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দিতে এসেছি। আমরা মনে করি, তারা যদি এ বিষয়ে আরো যত্নবান হন, তাহলে স্বাস্থ্য খাত থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

তিনি বলেন, আমরা জানি, প্রতিরোধ করলে প্রতিবাদের দরকার হয় না। আমাদের সরকার যেহেতু জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে, আমরা দুর্নীতির বিষয়ে আরো কঠোর হবে। দুর্নীতি ঠেকাতে না পারলে উন্নত দেশ গড়ার কাজ বাধাগ্রস্ত হবে।

‘সরকার এখন ‘‘দুর্নীতিকে না বলুন’’ নীতিতে চলছে।  দুদকও একই নীতির সঙ্গে কাজ করে। আমরা আশা করি, এসব তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখবে। তারা এটা সাদরে গ্রহণ করবে,’ যোগ করেন দুদকের কমিশনার।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রয়, সেবা, নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, ইকুইপমেন্ট ব্যবহার, ওষুধ সরবরাহ প্রভৃতি।

দুদকের ২৫ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- তথ্যবহুল সিটিজেন চার্টার, মালামাল রিসিভ কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সংস্থার সদস্যদের অন্তর্ভূক্তি, ওষুধ ও মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ইজিপিতে টেন্ডার অনুসরণ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপন ও অনুমতি প্রদানর ক্ষেত্রে নিজস্ব স্থায়ী চিকিৎসক/ কর্মচারী ও কার্যনির্বাহী কমিটি ইত্যাদি রয়েছে কি না এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।

বদলির নীতিমালা প্রণয়ন, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম না লিখে জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা, ইন্টার্নশিপ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করা এবং বর্ধিত এক বছর উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে পিএসসি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক (স্থাস্থ্য) এবং পিএসসির প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ প্রদান করা যেতে পারে বলে যোগ করা হয় দুদকের প্রতিবেদনে।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দুদকের দেওয়া প্রতিবেদন আমরা স্টাডি করব। আমরা ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। তারা যেসব সুপারিশ করেছে তাও আমরা বিবেচনায় নিয়ে প্র্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যেহেতু দুর্নীতি থাকলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয় না, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির কোনো আঁচর যাতে না থাকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এখন থেকে প্রয়োজন ছাড়া কোনো বদলি হবে না। যাকে যেখানে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে তাকে সেখানে বদলি করা হবে, তাছাড়া কোনো বদলি নয়। কোনো তদবিরে বদলি হবে না। আমরা হাসপাতালগুলোর সেবা বিষয়ে একটি মনিটরিং সেল করেছি। তারা সেবা বিষয়ে কাজ করছে। আশা করছি, খুব কম সময়ের মধ্যে আরো উন্নতি হবে।

এ সময় মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জানুয়ারি ২০১৯/আসাদ/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়