ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গঙ্গা-যমুনা পেল মানব মর্যাদা

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ২১ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গঙ্গা-যমুনা পেল মানব মর্যাদা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নদী রক্ষার তাগিদ থেকে ভারতে গঙ্গা ও যমুনা নদীকে মানব মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার উত্তরাখন্ড হাইকোর্ট এ দুই নদীকে মানব সত্তার অধিকারী বলে উল্লেখ করেন। হাইকোর্ট বলেন, গঙ্গা নদী জীবন্ত সত্তার মর্যাদা পাবে। একই মর্যাদা পাবে যমুনা নদীও। দুই নদীকে মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।

হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে ভারতে নদীর মানবায়ন হলো। ভারতে আড়াই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গা নদীর এখন থেকে মানুষের মতো মৌলিক অধিকার থাকবে।

উত্তরাখন্ড হাইকোর্টের অধীন গ্রিন টাইব্যুনাল বলেন, ফ্যামিলি ট্রাস্ট বা যেকোনো সংস্থার যেমন আইনি অধিকার আছে, এক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি কিছু হবে না।

নদীর মানুষের মর্যাদা পাওয়ার দিক থেকে এটি দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত। ছয় দিন আগে নিউ জিল্যান্ডের সংসদে আইন পাস করে তাদের হোয়ানগানুই নদীকে মানুষের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৫ কিলোমিটার।

গঙ্গা নদীর দূষণ রোধে জনস্বার্থ মামলায় সোমবার বিচারপতি রাজিব শর্মা ও বিচারপতি অলোক সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। দুই নদীকে মানুষের মর্যাদা দিয়ে তাদের অধিকার রক্ষায় অভিভাবকও ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।

গঙ্গা ও যমুনার অভিভাবকরা হলেন- উত্তরাখন্ডের মুখ্যসচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেল। রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দুই নদীর ‘মানবাধিকার’ দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত। আদালত বলেছেন, নদীর স্বাস্থ্য ও সার্বিক ভালো-মন্দের খেয়াল রাখবেন কর্মকর্তারা।

‘নমামি গঙ্গা’ নামে একটি প্রকল্পের অধিকর্তাকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, গঙ্গা পরিচ্ছন্ন ও গতিমান রাখার কাজ করবেন তারা। এর ফলে দূষণ রোধ করে গঙ্গাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন আদালত।

গত বছর ডিসেম্বর মাসে গঙ্গার দূষণ রোধের দাবিতে জনস্বার্থে মামলা করেন আইনজীবী ললিত মিগলানি ও আইনজীবী এমসি পান্থ। মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকারি উদ্যোগ থাকলেও তা বাস্তবায়নের অভাবে গঙ্গা ও যমুনার দূষণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

উত্তরাখন্ড হাইকোর্ট আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে গঙ্গা ব্যবস্থাপনা পরিষদ গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিষদ গঙ্গার দূষণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান তৈরি করবে। কেন্দ্রীয় পানি সম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী আদালতের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

উমা ভারতী বলেন, ‘আমরা গঙ্গাকে সব সময় মা হিসেবে গণ্য করে এসেছি। মা তো জীবন্ত মানুষই। এই মতাদর্শে আদালত শুধু সিলমোহর দিয়েছেন।’

গঙ্গা-যমুনার মানবায়নের ফলে তাদের রক্ষায় কঠোর বিধি-বিধান প্রয়োগের সুযোগ পাবে প্রশাসন। পরিবেশ আন্দোলনকারীরা আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এখন থেকে নদী দূষণ কমবে। দূষণকারীরা কঠোর শাস্তির ভয়ে থাকবে। তবে আইন বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকতে হবে প্রশাসনকে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ মার্চ ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়