ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মিয়ানমারে মাইনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারাচ্ছে রোহিঙ্গারা

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মিয়ানমারে মাইনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারাচ্ছে রোহিঙ্গারা

মাইন বিস্ফোরণে দুই পা হারিয়েছে রোহিঙ্গা কিশোর আজিজু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় সীমান্ত এলাকায় পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারাচ্ছে রোহিঙ্গারা।

বিবিসি এমন কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে, যারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় মাইন বিস্ফোরণে পঙ্গু হয়েছে। বাংলাদেশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৫ বছর বয়সি এক রোহিঙ্গা কিশোর দুই পা-ই হারিয়েছে। একই হাসপাতালে আরেক নারী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সীমান্ত এলাকায় যেসব পথ ধরে রোহিঙ্গারা সাধারণত বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, সেসব পথে ১৯৯০-এর দশকে মাইন পুতে রাখে মিয়ানমার। সাম্প্রতিক সময়েও তারা মাইন পেতেছে। কিন্তু বিষয়টি কখনো স্বীকার করেনি মিয়ানমার।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দেশটির সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধ চরমপন্থিরা নির্মম নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানোয় সম্প্রতি তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জেইদ রাদ আল-হুসেইন বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পাশবিক সামরিক অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেছেন, জাতিগত নিধনের চরম অবস্থা এটি।

রোহিঙ্গা নিধনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হলেও মিয়ানমারের নেত্রী রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি এখনো তা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার প্রতি ধিক্কার জানানো হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও দাবি করেছে, সীমান্তে মাইন পুতেছে মিয়ানমার। সেইসব পথে মাইন পেতে রাখা হয়েছে, যেসব পথ ধরে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসে।

মাইন বিস্ফোরণে আহত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, এমন হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে বিবিসি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাইন বিস্ফোরণে আহত অনেক রোহিঙ্গা চিকিৎসার জন্য আসছেন।

১৫ বছর বয়সি রোহিঙ্গা কিশোর আজিজু হক। মাইন বিস্ফোরণে সে তার দুই পা-ই হারিয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার ভাইয়েরও একই অবস্থা হয়েছে। বিবিসিকে এ কথা বলেছেন তাদের মা।

দুই পঙ্গু সন্তান সম্পর্কে তাদের মা বলেন, ‘তাদের অবস্থা এতই খারাপ যে, তারা যেন মৃত। তারা খুব কষ্ট পাচ্ছে।’

মাইন বিস্ফোরণে আহত সাবেকুর নাহার নামের এক নারী জানালেন, কেন তিনি মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন। সেনাবাহিনী তাদের এলাকায় হানা দেওয়ায় তিন সন্তান নিয়ে পালিয়ে আসেন। আসার পথে মাইনের ওপর তার পা পড়ে এবং সেটির বিস্ফোরণে তিনি আহত হন।

চিকিৎসকরা বলছেন, আজিজুর অবস্থা ভালো নয়। তাকে বাঁচনোর প্রচেষ্টা হয়তো সফল হবে না। তার রক্তের গ্রুপ বিরল। প্রয়োজনীয় রক্তও পাওয়া যাচ্ছে না। আর সাবেকুরের অবস্থাও ভালো নয়।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রাসেল পারভেজ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়