ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আইনস্টাইনের ‘সুখী জীবনের তত্ত্ব’

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আইনস্টাইনের ‘সুখী জীবনের তত্ত্ব’

টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে প্রদর্শন করা হয় আইনস্টাইনের সুখী জীবনের তত্ত্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের জগতবিখ্যাত তত্ত্বের আড়াল থেকে এবার বেরিয়ে এল তার জীবন দর্শনের এক অনন্য তত্ত্ব।

পদার্থবিদ্যার গবেষণায় নিজেকে সমর্পণকারী এই মহান বিজ্ঞানী সাদামাটা জীবনে বিশ্বাস করতেন বলে মনে হয়। অস্থির, অশান্ত জীবন তার পছন্দ নয়। সফলতার খাতিরেও তিনি অশান্তিকে প্রশ্রয় দিতে রাজি নন। এক টুকরো কাগজে লেখা এক বাক্যের কয়েকটি শব্দে তিনি সেই প্রয়াস ব্যক্ত করে গেছেন।

এখন থেকে প্রায় ৯৫ বছর আগে ১৯২২ সালে টোকিওর একটি ঘটনা। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর লেকচার দিতে টোকিও সফরে ছিলেন আইনস্টাইন। উঠেছিলেন ইমপেরিয়াল হোটেলে। তখন তার খ্যাতি ছিল জগতজোড়া। এর আগের বছর পদার্থে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জার্মানিতে জন্ম নেওয়া আইনস্টাইন।  

জাপানের ঐতিহ্যবাহী হোটেল ইমপেরিয়াল হোটেল। সেখানে থাকার সময় একদিন একজন বার্তাবাহক এলেন। আইনস্টাইনের জন্য একটি চিঠি এনেছেন। প্রেরক কে ছিলেন, জানা যায়নি। আইনস্টাইন চিঠিটি গ্রহণ করলেন। এরপর কিছু মুর্হূতের নাটকীয়তা।

চিঠি পৌঁছে দেওয়া বাবদ আইনস্টাইনের কাছ থেকে টিপস নিতে চাইলেন না বার্তাবহক। জাপানিদের সাধারণ সৌজন্য এমন- কাজের পারিশ্রমিক ছাড়া অতিরিক্ত কিছু নিতে চান না তারা। অথবা এমনও হতে পারে, ওই সময় আইনস্টাইনের হাতের কাছে ছোটখাটো এমন কিছু ছিল না, যা তাকে দেওয়া যায়। কিন্তু বার্তাবাহককে খালি হাতে ছাড়তে ছাইছিলেন না তিনি।
 


আইনস্টাইন তাকে একটি চিরকুট দেন। সেই চিরকুটেই রয়েছে আইনস্টাইনের ‘সুখী জীবনের তত্ত্ব’। তাতে জার্মান ভাষায় তিনি লিখেছেন : ‘নিরন্তর অশান্তির মধ্য দিয়ে সফল জীবনের সাধনার চেয়ে শান্ত ও ভদ্র জীবন বেশি আনন্দ বয়ে আনে।’ একেই তত্ত্ব বলা হচ্ছে। এই তত্ত্ব এই প্রথমবার সামনে এল।

তত্ত্ব না বলে একে তার একান্ত জীবনদর্শন বলা যায়। নিজের জীবনের খ্যাতির বিষয়ে তিনি এমনটি বলেছেন কিনা, তা বলার সুযোগ নেই- এমনটি মনে করেন জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনস্টাইনের ওপর গড়ে ওঠা সবচেয়ে বড় সংগ্রহশালার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগ্রহবিদ রনি গ্রোজ। তবে সেই সময় খ্যাতির শিখরে ছিলেন তিনি। বিজ্ঞানীদের বাইরে বিশ্বের সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

সেই বার্তাবাহক এখন বেঁচে নেই। ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে। তিনি হাম্বুর্গে থাকেন। তার পরিচয় জানা যায়নি। বার্তাবাহককে আইনস্টাইন যে চিরকুটটি দিয়েছিলেন, তা এখন ওই আত্মীয়ের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তিনি এটি নিলামে বিক্রি করতে চলেছেন। নিলামকারী প্রতিষ্ঠান উইনার মঙ্গলবার জেরুজালেমে এটি নিলামে তুলবে।

ওই আত্মীয়ের ভাষ্যমতে চিরকুটটি দেওয়ার সময় আইনস্টাইন বার্তাবাহককে বলেছিলেন, ‘আপনি যদি সৌভাগ্যবান হন, তাহলে সাধারণ টিপসের চেয়ে এই চিরকুট হয়তো অনেক বেশি মূল্যবান হবে।’ চিরকুটে  সময় ও স্থানের উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেন আইনস্টাইন। সেটি টোকিওর ইমপেরিয়াল হোটেলে প্রদর্শন করা হয়।

মহান এই বিজ্ঞানীর ‘সুখী জীবনের তত্ত্ব’ হোক আর অন্য কিছু হোক, বিজ্ঞানের বাইরে আইনস্টাইনকে মূল্যায়ন করতে চান না রনি গ্রোজ। তার মতে, বিজ্ঞানপ্রতিভার অপর নাম আইনস্টাইন। তবে চিরকুটটি তার ব্যক্তিগত জীবনের ভাবনা হতে পারে বলে মনে করেন গ্রোজ।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি অনলাইন

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ অক্টোবর ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়