ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস জাতিসংঘ কমিটিতে

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৭ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস জাতিসংঘ কমিটিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘ কমিটিতে। এতে অবিলম্বে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান শেষ করতে বলা হয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে বৃহস্পতিবার পাস হওয়া এই প্রস্তাবে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে মিয়ানমার বিষয়ে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতেও বলা হয়েছে।

পাশাপাশি স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ও তাদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে মিয়ানমারের প্রতি। এ ছাড়াও কমিটি রাখাইনে জাতিসংঘ প্যানেলকে অবাধে কাজ করতে দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ইসলামী সহযোগী সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে আনা এ প্রস্তাব পাস হয় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিতে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৩৫টি। ভোট দেয়নি ২৬ দেশ।

প্রস্তাবের বিপক্ষে যেসব দেশ ভোট দিয়েছে সে দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের নিকট প্রতিবেশী চীন ছাড়াও রয়েছে রাশিয়া, ফিলিপাইন, লাওস ও ভিয়েতনাম।



এই প্রস্তাব এখন ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চূড়ান্ত ভোটের জন্য উঠবে। ডিসেম্বরে এ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, সাধারণ পরিষদের এজেন্ডা নির্ধারণী অন্যতম ফোরাম থার্ড কমিটি মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারী ও শিশু সুরক্ষা, আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে থাকে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মৌলামি বৈঠকে ওআইসির পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত আরেকটি অমানবিক অধ্যায় রচিত হয়েছে, যা প্রায় ৬ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।’

রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সহিসংতার বিষয়ে ওআইসির উদ্বেগের কথাও জানান তিনি। যাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের ৬০ শতাংশই শিশু বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবে।

রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়া ওই অঞ্চলে সবার মানবাধিকার সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে।



প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে পাঁচ দফা প্রস্তাবও তুলে ধরেন জাতিসংঘে।

এদিকে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মধ্যেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে গত সোমবার একটি প্রতিবেদন দিয়েছিল। তার তিন দিনের মধ্যে জাতিসংঘ কমিটিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ প্রস্তাব গৃহীত হল।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনা অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে মনে করছে জাতিসংঘ। রাখাইনে নতুন করে যেন সেনাবাহিনীর বল প্রয়োগ না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায়।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশই রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের জন্য মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে আসছে। এই প্রস্তাব পাসের ফলে মিয়ানমারের ওপর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি না হলেও তা বৈশ্বিক চাপ আরা বাড়িয়ে তুলল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ নভেম্বর ২০১৭/সাইফুল/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়