ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে আলোচনায় বসা উচিত : ফরহাদ

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে আলোচনায় বসা উচিত : ফরহাদ

দেশ ও জনগণের স্বার্থে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই বলে মনে করেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

এই ইস্যুতে সরকার আলোচনায় আসতে না চাইলেও মি. ফরহাদ মনে করেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের উচিত একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পথ বের করতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসা।

আরেকটি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের জন্য ‘সরকার ষড়যন্ত্র করছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের চিন্তা করলে সরকার বোকার স্বর্গে বাস করছে। খালেদা জিয়া, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’

সম্প্রতি এক বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে নিজের কার্যালয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজনীয়তা, আন্দোলন-সংগ্রাম, খালেদা জিয়ার মামলা, নিজের দলের নির্বাচন প্রস্তুতির সামগ্রিক বিষয় নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস কে রেজা পারভেজ

রাইজিংবিডি : দীর্ঘদিন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মুল্যায়ন কি?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ :
রাজনীতির সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে যদি আপনি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে মুল্যায়ন করেন তাহলে বলতেই হবে, দেশে গণতন্ত্রের লেশ মাত্র নেই। দেখুন, গত ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সারা ঢাকা নগরীতে সভা-সমাবেশ করেছে। কিন্তু বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলো, দেওয়া হলো না। সরকার তার রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তিক একটি ইসলামি দল দিয়ে সেখানে সমাবেশ করালো। বিএনপির কার্যালয়ে সামনেও সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো না। অথচ এর আগে সেখানে একাধিকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটিকে তো গণতান্ত্রিক দেশ বলা যাবে না।

দেশে বর্তমানে অগণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সবকিছুু ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ক্ষমতাসীনরা যতই গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে হইচই করুক না কেন, দেশের মানুষ কিন্তু জানে গণতন্ত্র আছে কী নেই। তারা চুপ আছে তার মানে এই নয় যে, তারা খেয়াল করছে না। জনগণ ফুঁসে রয়েছে সুযোগের অপেক্ষায়। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে তারা এর মোক্ষম জবাব দেবে। এজন্য অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।

রাইজিংবিডি : আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলছে। বর্তমান সরকারের অধীনেই বিএনপি জোটকে নির্বাচনে আসতে হবে বলে তারা বলছে।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : দেখুন সংবিধান এমন কিছু নয় যে, এটাকে পরিবর্তন করা যাবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এই আওয়ামী লীগ ১৭২ দিন হরতাল দিয়েছে। খালেদা জিয়া তখন ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি দেশের কথা চিন্তা করে, জনগণের কথা চিন্তা করে বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেই জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলেন। এটা কিন্তু আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। তারা প্রচার করছে, সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এটা বাতিল করেনি। আদালত বলেছিলো, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো দুটি নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হতে পারে। প্রবীণ আইনঝজীবী থেকে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ থেকে সাধারণ মানুষ কিন্তু এটা সমর্থন করেছিলো।

শেখ হাসিনার অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। প্রত্যেকটি নির্বাচনের ভোট ডাকাতি হয়েছে। আমরা নির্বাচনে অবশ্যই যাবো। তবে আমাদের কথা পরিস্কার, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই সেই নির্বাচন হতে হবে। সরকার যদি আরেকটি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার চিন্তা করে তাহলে বলবো, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ কিন্তু এক নয়। ২০ দলীয় জোটকে বাদ দিয়ে দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।

রাইজিংবিডি : নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে দুটি জোটের এই যে বিপরীতমুখী অবস্থান, এর সমাধান কি দিয়ে হতে পারে বলে মনে করেন ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : আলোচনা। হ্যাঁ আলোচনাই হতে পারে এর একমাত্র পথ। সংলাপে বসলেই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। আগে তো শুনতে হবে বিরোধী রাজনৈতিক জোট কি বলতে চায়। কিন্তু সরকার তো কর্নপাতই করছে না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার উচিত হবে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেওয়া। এজন্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসা। এরপর সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, জনগণ যদি তাদের ভোট দিয়ে তাদের নির্বাচিত করে আমরা মেনে নেবো। আমাদের ভোট দিলে আমরা ক্ষমতায় যাবো। মোট কথা জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ সরকারই হচ্ছে একমাত্র উপায়।

জনগণ ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে যাকে ক্ষমতায় চাইবে সে-ই দেশ পরিচালনা করবে। জনগণ যদি তাদের ভোট দেয় তারা ক্ষমতায় যাবে। আমরা মেনে নেবো। আমাদের ভোট দেয় আমরা ক্ষমতায় যাবো। কারণ এদেশের ক্ষমতার উৎস জনগণ। তাই জনগণকে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিতে হবে।

রাইজিংবিডি : সরকার বলছে, নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে বিএনপি জোটের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : বলে রাখি, ২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর। ২০ দলীয় জোটের বছর। আন্দোলন সংগ্রাম ও নির্বাচনের বছর। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বছর। সেই জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চাই। আমরা সহিংসতায় বিশ্বাসী নই। আমরা চাই, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে আসুক। আশা করছি, সরকার মুখে যাই বলুক, অবশ্যই দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আলোচনায় বসবে। এর মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।

 


রাইজিংবিডি : দেশে আন্দোলন মানেই তো সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি? শান্তিপূর্ন আন্দোলন বলতে আসলে কোন ধরনের আন্দোলনের কথা বোঝাচ্ছেন ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : বিএনপি জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে বিশ্বাসী নয়। আমাদের নেত্রী বলেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা। অতীতেও আমাদের শান্তিপূণ্র্ আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেরা জ্বালাও পোড়াও করে এর দায় দিয়েছে বিএনপির ওপর। বরিশালের স্বেচ্ছোসেবক দল নেতা পঙ্কজ দেবনাথের বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, পঙ্কজ দেবনাথ তার নিজের গাড়ি শাহবাগে পুড়িয়েছে। এটা হলো বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের কুটকৌশল।

যাত্রাবাড়ীতে কি খালেদা জিয়া গাড়িতে আগুন দিয়েছে? মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমদ বা ২০ দলীয় জোটের নেতারা গণভবনের সামনে এসে আগুন দিয়েছে? এটা বিশ্বাসযোগ্য? জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, ভোট দেবে। তাহলে তাদের ক্ষতি কেন করবো আমরা?

রাইজিংবিডি : বিএনপির ‘সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা দেয়ার বিষয়টি রাজনীতিতে আলোচিত বিষয়। খালেদা জিয়ার সেই রূপরেখা নিয়ে জোটের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়েছে? বা কবে রূপরেখা জাতির সামনে আনতে পারেন আপনারা ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ :
ম্যাডাম লন্ডনে যাওয়া আগে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সহায়ক সরকারের ফর্মুলার ব্যাপারে ম্যাডামই সময়মতো উপস্থাপন করবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে, সরকার তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখছে। হয়রানি করছে। দেখুন, প্রতিদিন তাকে আদালতে যেতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আদালতের আর কোনো মামলা নেই, শুধু খালেদা জিয়ার মামলাই গুরুত্বপূর্ণ।

রাইজিংবিডি : আপনি তো একজন আইনজীবী। মামলার বর্তমান পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা! এই দেশে দশ বছরে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে জালিয়াতির মাধ্যমে। এক বছরের ৭৭ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। তার কিছু হচ্ছে না। খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা পাচার করেছেন, এটা জনগণ বিশ্বাস করবে? তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দুই কোটি কেন তিনি যদি দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করতেন তার জন্য কোনো ব্যাপার ছিলো?

আসলে এটা তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে উদ্দেশ্যমুলকভাবে করা হচ্ছে। এখন আমরা মামলা পর্যবেক্ষন করছি আইনগতভাবে মোকাবেলা করার জন্য। নিম্ন আদালত তো এখনও স্বাধীন নয়। বিচারপতি এস কে সিনহা নিম্ন আদালতকে স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে ন্যাক্কারজনকভাবে বিদায় করেছে সরকার। আমরা আশা করি, যদি সঠিক বিচার হয়, ন্যায়বিচার হয়, তাহলে তিনি (খালেদা জিয়া) খালাস পাবেন। আর যদি তার প্রতি অন্যায় করা হয় তাহলে মনে করতে হবে সরকার বাধ্য করছে বিচারপতিদের। এটা তখন মেনে নেওয়া হবে না। ২০ দলীয় জোট সেটি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবে।

রাইজিংবিডি : তাহলে আপনার মামলা সম্পর্কে পর্যবেক্ষন কি?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ :
দেখুন এই মামলার সব নথি ঘষামাজা। মামলার চার্জশিটই তো হয় না। শুনানি, রায় কিছু-ই হয় না। এটা রাজনৈতিক মামলা। আগরতলা মামলা যেভাবে ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছিলো। তখন মানুষও কিন্তু বিশ্বাস করেছিলো ওই মামলা ষড়যন্ত্রমুলক। ১৬ কোটি মানুষের কাছে যান, সার্ভে করেন, দেখবেন সবাই বলবে এটি রাজনৈতিক মামলা। যে দেশে হলমার্ক সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট করে। আর অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা কোনো টাকা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আট’শ কোটি টাকা লুট হয়েছে। কোনো খবর নাই। তাহলে কি বিচার আপনি আশা করেন!

দেশের এতো সব জরুরি বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া না করে খালেদা জিয়াকে ধারাবাহিকভাবে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। অন্য কোনো মামলার গুরুত্ব নেই, শুধু খালেদা জিয়ার মামলার গুরুত্ব আছে। এর একটি কারণ আছে, দেশের মানুষ তাকে (খালেদা জিয়া) চায়। এখন ৮০ ভাগ লোক তার পক্ষে। এটিই সরকারের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবাধ নির্বাচন হলে তিনিই হবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কমপক্ষে ২৫০ সিট পাবে ২০ দলীয় জোট। এজন্য কীভাবে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যায়, তাকে মাইনাস করা যায়, আরেকটি ষড়যন্ত্রের নির্বাচন করা যায়; সেটিই হচ্ছে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা। কিন্তু সেটি তো তারা করতে পারবে না। 

রাইজিংবিডি : দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে জোটের অবস্থান কি হবে? কোনো কর্মসূচিতে যাবেন আপনারা ?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) মামলার যে পরিস্থিতি তাতে তার সাজা হওয়ার মতো কোনো ঘটনা থাকার কথা নয়। আর সরকার যদি ষড়যন্ত্রমুলকভাবে সেটি করে তাহলে তার জনপ্রিয়তা আরো দশগুণ বাড়বে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ম্যাডামের নির্দেশনা অনুযায়ী জোট আরো শক্তিশালী হবে। তখন অবস্থা বুঝে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ২০ দলীয় জোট সবকিছু ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে। আমরা আশা করি, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং আগুন নিয়ে খেলা থেকে বিরত থাকবে।

রাইজিংবিডি : আন্দোলনে আছেন, নির্বাচনও করবেন একসঙ্গে। সরকারের সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দরকষাকাষির আগে জোটের ঐক্য কতুটুকু মজবুত?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : ২০ দলীয় জোটের ঐক্য সবসময়ই অটুট ছিলো, আছে এবং থাকবে। ম্যাডাম যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাতে আমরা তার পাশে ছিলাম আছি এবং থাকবো। ম্যাডাম বলেছেন, আন্দোলন করেছি একসাথে, জোট করেছি এক সাথে, নির্বাচন করেবো একসাথে এবং ইনশাল্লাহ ক্ষমতায় যাবোও একসাথে। সরকার গঠন করলেও জোটকে প্রধান্য দেবেন বিএনপি নেত্রী।

রাইজিংবিডি : জোটে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে কোনো অস্বস্তি আছে? সরকার তো বরাবরই বলে আসছে আপনার যুদ্ধপরাধের দল নিয়ে জোট করেছেন?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : সরকার সব সময় চেয়েছে জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি জোটকে ব্লাকমেইল করতে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ৯৬ সালে জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করেনি? গোলাম আজমের সঙ্গে হাত মেলায় নি? এই জোট রাজনৈতিক জোট। সো এখানে ভুল বোঝানোর কোনো অবকাশ নেই।

রাইজিংবিডি : নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি সাংগঠনিক কাজে নেমে পড়েছে। এনপিপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি জানতে চাই।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : এনপিপির নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার ক্ষেত্রে দলের মধ্যে কাজ চলছে। আমরা প্রস্তুত আছি। কাল নির্বাচন দিলে কালই এনপিপি প্রস্তুত আছে।

রাইজিংবিডি : জোটের মধ্যে আলোচনা আছে নড়াইল-২ আসনে আপনিই হতে যাচ্ছেন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী। সেখানে আওয়ামী লীগের একটি শক্ত অবস্থান আছে। আপনি কতটুকু আত্মবিশ্বাসী?
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ :
দেখেন আমি নড়াইলের মানুষ। সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমি ভালো জানি। মানুষ এই সরকারের অত্যাচার ও নিপীড়নের জবাব দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। অবশ্যই নির্বাচন করতে চাই। এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। যদি নিরপেক্ষ ভোট হয় আশা করি ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে আমি জিতবো। সেই আত্মবিশ্বাস আছে। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ এই সরকারকে চায় না।

রাইজিংবিডি : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ : রাইজিংবিডির অগনিত পাঠককে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ জানুয়ারি ২০১৮/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়