ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সংসদে ক্ষমা চাইলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সংসদে ক্ষমা চাইলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে : সংসদে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা নিয়ে একটি ‘বিভ্রান্তিকর’ লিখিত প্রশ্নের লিখিত উত্তর প্রদানের জন্য সংসদে ক্ষমা চাইলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ ঘটনা ঘটে। একটি সম্পূরক প্রশ্নে বিষয়টি সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম (চাঁদপুর-৫)। সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রী বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়ে সংসদের কার্যবিবরণী থেকে তা এক্সপাঞ্জ করার জন্য স্পিকারের প্রতি অনুরোধ জানান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।

সংসদ সদস্য আবদুল মজিদের (হবিগঞ্জ-২) লিখিত প্রশ্নে বলেন, আমার জেলা হবিগঞ্জের ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগানে ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল কর্নেল ওসমানীর সভাপতিত্বে অনেক সেনানায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই ঐতিহাসিক স্থানটি সংরক্ষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা?

লিখিত জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্থানটি সংরক্ষণ ও উন্নয়নের নিমিত্তে প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই প্রকল্পের কাজ শরু হবে। তবে ৪ এপ্রিল ‘মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা’ বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

পরে সরকারি দলের সদস্য ও মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম সম্পূরক প্রশ্নে ফ্লোর নিয়ে এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা যদি স্বীকার করে নেই- এই মুক্তিযুদ্ধের জন্য আলাদা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৪ এপ্রিল যদি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা কি মুক্তিযুদ্ধ নয়? এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর এটাকে যদি মেনে নেওয়া হয় তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রশ্ন তুলবে- বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার সঙ্গে এই ঘোষণার পার্থক্যটা কোথায়? মনে করি মন্ত্রী এই বিষয়টি স্পষ্ট করবেন। না হলে ইতিহাস বিকৃতি থাকবে।

জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বিষয়টি নজরে আনার জন্য রফিকুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সংসদের কাছে ক্ষমা চান।

মন্ত্রী বলেন, আমি আমার এই ভুলের জন্য এই সংসদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এটা যেহেতু পড়া হয়নি। আমারও মনে ছিল কিন্তু বলার সময় ভুলে গেছি। তিনি (আবদুল মজিদ খান) যে কথা বলেছেন, ৪ এপ্রিল কর্নেল ওসমানীর সভাপতিত্বে অনেক সেনা ও জনগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়, এটা ভুল তথ্য। তারা সেখানে বৈঠক করেছিলেন এটা ঐতিহাসিক সত্য। তিনি আরো বলেন, মিটিং করে তারা রণকৌশল সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেছিলেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার কোনো সুযোগই ছিল না। মাননীয় স্পিকার, আমি অনুরোধ করব আপনার যে ক্ষমতা রয়েছে সেই ক্ষমতা বলে উনার (আব্দুল মজিদ খান) এই বক্তব্যটাকে সংশোধন করে দিলে আমি ও সব মুক্তিযোদ্ধা বাধিত থাকব। সারা জাতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বিষয়টি নিয়ে আবারও স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৮/আসাদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়