ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

প্রথমবারের মতো কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রথমবারের মতো কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে, অর্থ-শ্রম-সময় বাঁচবে প্রতিপাদ্যে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৮। তিন দিন ব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, ‘নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি শ্রমিকরা দিন দিন অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। যার ফলে কৃষিকাজে শ্রমিক সংকট দেখা দিচ্ছে। কৃষি উন্নয়নের ধারাকে ধরে রাখতে হলে বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ব্যবহারে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। এতে আমার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত ১ লাখ ৭৫ হাজার সমবায় সমিতিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

মন্ত্রী জানান, সরকার গ্রামীণ হাট বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল হাট-বাজার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এতে কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সকল সুবিধা এখন জনগণের নাগালে রয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘দিন দিন আমাদের কৃষিতে কায়িক শ্রম দেওয়ার মত শ্রমিকের অভাব দেখা দিচ্ছে। যার ফলে কৃষিতে উৎপাদন সময়ও বেশি লাগছে। আমরা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কৃষক আগে অনেকটা বাধ্য হয়ে কৃষিকাজ করতো। এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এজন্য কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।’

কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার হাওর ও এক ফসলি এলাকায় ৭০ ভাগ ও অন্যান্য এলাকায় ৫০ ভাগ ভর্তুকি দিচ্ছে। আমাদের ধানের কিছু জাত আছে যেগুলোর ছড়া নুইয়ে পড়ে। এ ধরনের ধান কাটার কোনো যন্ত্র আমাদের নেই।’ তিনি সরকারি, বেসরকারি, আমদানিকারক ও গবেষকদের এ ধরনের নুইয়ে/হেলে পড়া ধান কর্তনের যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি আনার আহ্বান জানান।

বেসরকারি সেক্টরের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জমি ছোট। কৃষিকে কিভাবে লাভজনক করা যায়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কৃষকের কথা মাথায় রেখে স্লিম, স্মার্ট ও ইফেকটিভ যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করতে হবে।’

মেলা উপলক্ষ্যে র‌্যালি, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী দিনে কেআইবি অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের পথপরিক্রমা ও সরকারি উদ্যোগ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মঞ্জুরুল আলম। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম।

সরকারি ও বেসরকারি ২১টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকার আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শণের জন্য মেলায় নিয়ে এসেছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে ডিএই’র খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প। মেলার মাধ্যমে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ব্যয় সাশ্রয়ী, লাভজনক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/সাওন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়