ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি

শাহেদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৯, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চার বছর ধরে ক্রমাগত সাফল্যের পরে বড়সড় ধাক্কা খেল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ২০১৪ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি এত বড় ধাক্কা খায়নি। পাঁচ রাজ্যের সবকটিতেই পরাজয় ঘটেছে বিজেপির। দিন শেষে তাই মোদির শিবিরে নেমে এসেছে বিষণ্ণতার ছায়া আর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে কংগ্রেস শিবির।

পাঁচ রাজ্যের এই বিধানসভা নির্বাচন ছিল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সবচেয়ে বড় ভোটযুদ্ধ। ‘দিল্লি দখলের সেমিফাইনাল’ হিসেবেই এই লড়াইকে ব্যাখ্যা করছিল রাজনৈতিক শিবির। সেই সেমিফাইনালের সামগ্রিক ফল যে কংগ্রেসের দিকে অনেকখানি ঝুঁকে পড়ল, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।

সবচেয়ে চমকে দেওয়া ফলাফল ছত্তিশগঢ়ে। বিজেপি সে রাজ্যে ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল ঠিকই, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের বিরুদ্ধে ক্ষমতা বিরোধিতার হাওয়া প্রবল ছিল— এমন কথা প্রায় কোনও শিবিরই খুব জোর দিয়ে বলতে পারেনি। ভোটের আগে হওয়া অধিকাংশ জনমত সমীক্ষা এবং ভোটের দিন হওয়া অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষা ইঙ্গিত দিয়েছিল, চতুর্থবারের জন্য রমন সিংহের নেতৃত্বে ছত্তিশগঢ়ে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি। তবে আসন কমতে পারে।

কিন্তু ছত্তিশগঢ়ে ভোটযন্ত্র খুলতেই অপ্রত্যাশিত ফলাফলের আঁচ মেলা শুরু হয়। বিজেপির পরাজয় শুধু নয়, শোচনীয় পরাজয়ের ইঙ্গিত মেলা শুরু হয়। সরকারের বিরুদ্ধে খুব বেশি ক্ষোভ ছিল না, কিন্তু ১৫ বছর ধরে বিজেপি ক্ষমতায়, তাই ক্ষমতা বিরোধিতার হাওয়ায় অল্পের জন্য গদি হাতছাড়া হয়ে গেল রমন সিংহের— এমন কিন্তু নয় ছত্তীসগঢ়ের ছবিটা একেবারেই।

৯০ আসনের বিধানসভায় ৬৮ আসন পেয়েছে কংগ্রেস। অর্থাৎ মধ্য ভারতের জনজাতি প্রধান রাজ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতার পেল রাহুল গান্ধীর দল। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগীর দল জেসিসি এবং মায়াবতীর বিএসপির সম্মিলিত আসনসংখ্যা পৌঁছতে চলেছে ১০-এর কাছাকাছি।

ভোটের আগে হোক বা পরে, প্রায় সব সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল, রাজস্থান বিজেপির হাতছাড়া হচ্ছেই। মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে যে বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে মরুরাজ্যের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে, তা বিজেপি নেতারাও জনান্তিকে স্বীকার করছিলেন। কিন্তু ছত্তিশগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামের ভোট মিটিয়েই বিজেপির গোটা নেতৃত্ব জোরদার ঝাঁপ দিয়েছিলেন রাজস্থানের রণাঙ্গনে। তবে শেষ পর্যন্ত ১০১টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাতেও পৌঁছে গিয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ৭৩টি আসন।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই সবচেয়ে কঠিন লড়াইয়ের আভাস অবশ্য দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের রণাঙ্গন। মধ্যপ্রদেশে লড়াইটা যে এ বার কাঁটায় কাঁটায়, তা সব পক্ষই মানছিলেন। রাজ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ১১৩টি আসন। আর বিজেপি পেয়েছে ১১০টি আসন। সরকার গঠনের পাল্লা সেই সুবাদে কংগ্রেসের দিকেই।

এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া একমাত্র দক্ষিণী রাজ্য তেলঙ্গানায় ত্রিশঙ্কু বিধানসভার ইঙ্গিত দিয়েছিল বেশ কিছু সমীক্ষা। কিন্তু সব আভাস উড়িয়ে দিয়ে শাসক দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) ৮৮টি আসন নিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখছে। রাজ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ২১টি আসন, আর বিজেপির জুটেছে কেবল একটি আসন।

হিন্দি বলয়ের কংগ্রেস শিবিরে যে উৎসবের মেজাজ, তা কিন্তু ধাক্কা খেয়ে গিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতেও। উত্তর-পূর্বে কংগ্রেসের শেষ দুর্গ মিজোরাম হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। গত দশ বছরের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা দুটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। দু’টিতেই তিনি পরাজিত হয়েছেন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘নেডা’ জোটের শরিক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) ২৬ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। রাজ্যের ৪০ আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র পাঁচটি আসন।

সূত্র : আনন্দবাজার ও এনডিটিভি অনলাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ডিসেম্বর ২০১৮/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়