ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশ পাওয়া যায়নি শুনেই বঙ্গবন্ধু কেঁদে উঠেন’

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশ পাওয়া যায়নি শুনেই বঙ্গবন্ধু কেঁদে উঠেন’

প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম বাংলাদেশের বিশিষ্ট মননশীল লেখক, ভাষাতত্ত্ববিদ, নজরুল বিশেষজ্ঞ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ভাষাতত্ত্ব, ধ্বনিতত্ত্ব, নজরুল গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান অনবদ্য। এরই মধ্যে তিনি ‌দেশের জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃ‌তি পেয়েছেন। অর্জন করেছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কার। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃত, ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তার বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা রয়েছে

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং বুদ্ধিজীবী দিবস প্রবর্তনের বিষয়ে প্রফেসর রফিকুল ইসলামের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে  আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, দিবসটি প্রচলনের বিষয়ে কর্মতৎপরতা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন রাইজিংবিডি’র সাথে। একই সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন ভাষা আন্দোলনের অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডি’র প্রধান প্রতিবেদক হাসান মাহামুদ

রাইজিংবিডি: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস চালুর বিষয়ে আপনারা কাজ করেছিলেন।  তখনকার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল বাঙালি জাতির সবচেয়ে আলোড়িত ঘটনা।  আমরা স্বাধীন দেশের বাস করছি, এর থে‌কে বড় প্রাপ্তি কিছু নেই।  অসংখ্য প্রাণ ত্যাগ-পরিশ্রম-সংগ্রাম এবং কান্নার বিনিময়ে পাওয়া  সার্বভৌমত্ব, নিজস্বতা। আমাদের সবচেয়ে দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমাদের ২৩টি বছর একটি বর্বর জাতির সাথে থাকতে হয়েছিল।  পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কতটা বর্বরতা, পৈশাচিকতা চালাতে পারে, তা কেবল যারা প্রত্যক্ষ করেছে, তারাই বলতে পারবে।  গল্প শুনে, ইতিহাস প‌ড়ে হয়তো কল্পনা করা যাবে, কিন্তু উপলদ্ধি করা সম্ভব নয়।  তারা সর্বশেষ‌ যে চরম ঘৃণ্য কাজটি করেছি‌ল, তা হচ্ছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা।

একাত্তরে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা কয়েকজন শিক্ষক গ্রেপ্তার হই। আমাদের ক্যান্টনমেন্টে আটক করে রেখেছিল তারা। এদের মধ্যে ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক সাদ উদ্দিন, গণিত অনুষদের শহীদউল্লাহ, ইংরেজির অধ্যাপক আহসানুল হক, ইতিহাসের ড. আবুল খয়ের আর বাংলা বিভাগের আমি। কখনো পাঞ্জাব স্পেশাল ব্রাঞ্চ, কখনো আর্মি ইন্টেলিজেন্স, ইপিআর আমাদের ক্রমাগত ইন্টারোগেট (জিজ্ঞাসাবাদ) করতো।  আমরা দেখেছি কতটা বর্বর হতে পারে তারা।  তারা এমন এমন প্রশ্ন করতো, আচরণ করতো- আমরা নিজেরাই লজ্জা পেতাম। কিন্তু তারা ‌ছিল নির্লজ্জ।

পরে আমরা অনেকে মুক্তি পাই, কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষককে তারা হত্যা করেছিল। মূলত পুরো জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতে চেয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, যে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দু’টি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।

আমরা শুনেছিলাম, ট্রাকে করে অনেক শহীদের লাশ মিরপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।  আবার অনেককে‌ ‌দিয়ে কবর খুঁ‌ড়ে সেখানেই তাদের হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা কয়েকজন মিরপুরে যাই। কিন্তু সেখানে কিছুই পাচ্ছিলাম না। পরে খোঁজ নিয়ে সেই ট্রাকের ড্রাইভারের নাম ও গাড়ির বিস্তারিত নিলাম। সেই ড্রাইভারকে আমরা গাজীপুরের কাছে গিয়ে পেয়েছিলাম।  তাকে নিয়ে আসি মিরপুরে।  তার দেখিয়ে দেওয়া স্থানে, জল্লাদখানায় মাটি খুঁড়ে আমরা অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশ পেয়ে‌ছিলাম। তাদের লাশ এনে পরবর্তীতে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে কবর দেই।

যুদ্ধের পর আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে গেলাম। আমরা মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। উনাকে বললাম- পাকিস্তানিরা আমাদের অনেক শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, ডাক্তারকে হত্যা করেছে। তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে আমাদের কিছু করা প্রয়োজন।  এর মধ্যে আমরা অনেকের লাশ পাইও নি।  বঙ্গবন্ধু তখন জানতে চাইলেন- কার কার লাশ পাওয়া যায়নি।  আমরা বললাম, মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সার, আরো কয়েকজনের নাম এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না।  কথাটা শুনেই বঙ্গবন্ধু কেঁদে উঠেন।  শেষে সিদ্ধান্ত হলো মিরপুরে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণ করা হবে, এর উদ্বোধন বঙ্গবন্ধু‌ নিজেই করবেন।  একই সঙ্গে ১৪ ডিসেম্বর তারিখ‌টিকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে ঠিক করা হয়। পরবর্তীতে এটি অনুমোদন পায়। 

সিদ্ধান্ত মোতাবেক শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ যথাসময়ে শুরু ও সম্পন্ন হয়। কিন্তু কি‌ যেন একটি কারণে বঙ্গবন্ধু ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করতে পারেননি। উদ্বোধনের সময় এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়।  ১৯৭২ সালের ২২ ডিসেম্বর স্মৃ‌তিসৌধের ফলক উন্মোচন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। স্মৃ‌তিসৌধের স্থপতি  মোস্তফা আলী কুদ্দুস। স্মৃ‌তিসৌধটি দুটি অংশে বিভক্ত। দক্ষিণ পাশের অংশটি প্রখ্যাতজনদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থান। উত্তরের বড় অংশটি সাধারণের জন্য কবরস্থান। এই উত্তর-দক্ষিণের মাঝখানের অংশটিতে অবস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ।
 


রাইজিংবিডি: বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনে আপনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বলুন।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন চলাকালীন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বষের্র ছাত্র।  দেশবিভাগের রেশ কাটতে না কাটতেই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।  দেশবিভাগ বলতে, ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার ঘটনা। পাকিস্তান আলাদা দেশ হওয়ার পরই রাষ্ট্রভাষার প্রসঙ্গটা আসে।  ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরেই তমদ্দুন মজলিস ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে? বাংলা নাকি উর্দু?’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যেখানে সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রভাষা হিসাবে ঘোষণা করার দাবি করা হয়।  কিন্তু শুরু থেকেই তারা বলে উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা, আমরা বলি না, বাংলা ‌হবে রাষ্ট্রভাষা।  এই নিয়ে দেশবিভাগের পর থেকে উত্তপ্ত সম্পর্ক তাদের সঙ্গে আমাদের।  ধীরে ধীরে অসন্তোষ ধানা বাঁধে, ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ‘ষ্টুডেন্টস রোল ইন নেশন বিল্ডিং’ শিরোণামে একটি ভাষণ প্রদান করেন। সেখানে তিনি ক্যাটাগরিক্যালি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠার দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বলেন ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একটি এবং সেটি উর্দু, একমাত্র উর্দুই পাকিস্তানের মুসলিম পরিচয়কে তুলে ধরে। ’

জিন্নাহর এই বক্তব্য সমাবর্তনস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং ছাত্ররা দাঁড়িয়ে ‘নো নো’ বলে প্রতিবাদ করেন। জিন্নাহর এই বাংলাবিরোধী স্পষ্ট অবস্থানের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলন আরো বেশি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে এবং আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে আন্দোলন ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলতে থাকে।  ১৯৫২ তে এসে আন্দোলন সর্বোচ্চ মাত্রা পায়। এর প্রেক্ষিতে ১৯৫২ সালের ২০ তারিখে ১৪৪ ধারা জারি করা হল। তখন আমরা চিৎর করে বলেছিলাম ‘১৪৪ ধারা মানি না, মানব না’। ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ অফিসে মিটিং হলো। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিল ১৪৪ ধারা ভাঙবে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নিলাম ১৪৪ ধারা ভাঙবো এবং পরিষদে যাব। সেখানে আমরা স্মারকলিপি দেব, যাতে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করে। পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা সত্বেও আমরা সেদিন ১৪৪ ধারা ভেঙ্গেছিলাম। হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হতে থাকে । উপস্থিত ছাত্র-জনতা ২১ ফেব্রুয়ারি নিহতদের স্মরণে কার্জন হল এলাকায় একটি জানাজা নামাজ আদায় করে এবং একটি শোকমিছিল বের করে । শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর পুলিশ পুনরায় গুলি চালালে শফিউর রহমানসহ চারজন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন ।

’৫২ সালের ২২ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত একটানা আন্দোলন করেছি। একদিকে পাকিস্তান আর্মি আরেকদিকে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল আরেক দিকে ছাত্র-ছাত্রীরা।  আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় তখন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথেই ছিলাম।  পরে ১৬ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।

ভাষা আন্দোলনের সময় ৫২ সাল থেকে ৫৫ সাল পর্যন্ত। আমি ভাষা আন্দোলনের সব ছবি তুলেছি, নাটক করেছি, সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছি। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হইনি। সাংস্কৃতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, ছবি তুলেছি, আর লেখালেখি করেছি।

রাইজিংবিডি: ভাষা আন্দোরনে আপনাদের সংগ্রাম-ত্যাগের কথা বলছিলেন। ভাষা কি কলুষিত হচ্ছে না এখন? এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: শুধু ভাষাকে কলুষমুক্ত করতে নয়, অসংখ্য সমস্যার একমাত্র সমাধান দেশকে ভালোবাসতে হবে।  স্বদেশপ্রেম আপনাকে-আমাকে সবাইকেই কলুষমুক্ত রাখতে, কলুষমুক্ত থাকতে সাহায্য করবে।

রাইজিংবিডি: আপনার মুখ থেকে নজরুল সম্পর্কে একটু শুনতে চাই।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: কাজী নজরুল ইসলাম মানুষের কবি, সাম্যের কবি। তার চিন্তা ও সমাজ ভাবনা আমাদের পথ দেখাতে সাহায্য করেছে। বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিনির্মাণে তার সৃষ্টিকর্ম সবসময় আমাদের প্রেরণা দেবে। আমার সুযোগ হয়ে‌ছে নজরুলকে নিয়ে কাজ করার, তাকে অধ্যয়ন করার।  ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সাহিত্যসৃষ্টির পরিসর পর্যন্ত নজরুল বিরল এক অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্বের নাম। আমাদের দুর্ভাগ্য তাঁর মতো অনন্য প্রতিভাকে এখনও আমরা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি। এখন সময় এসেছে সব ধরনের সংকীর্ণতামুক্ত হয়ে নজরুলকে তাঁর যথার্থ বৈশ্বিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করা।  কাজী নজরুল ইসলাম কবিতায় তাঁর বক্তব্যের যথার্থতা ফুটিয়ে তোলার বাহন হিসেবে বিপুলভাবে মিথ ও ঐতিহ্যের অনায়স ব্যবহার করেছেন। তিনি ছিলেন সমন্বয়বাদী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বার্থক উত্তরাধিকারী।

রাইজিংবিডি: প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে আপনি নজরুল চর্চা করছেননজরুল গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করেছেন তা হলো, তার ওপর সবচেয়ে তথ্যবহুল যে জীবনী তা আপনার করা নজরুলের ওপর এখন কী নিয়ে কাজ করছেন?

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: এখন যেটা নিয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, তা সংগীতের ওপরে। কারণ অসুস্থতার কারণে নজরুলের অনেক গান হারিয়ে গেছে। অনেক গানের সুর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অনেক গানের সুর বিকৃত হয়েছে। সুর না শুধু, সুর, বাণী–দুই-ই।  তার অধিকাংশ গানের বাণী উদ্ধার করা গেছে। উদ্ধার করে নজরুল সংগীত সংগ্রহ নামে নজরুল ইন্সটিটিউট থেকে প্রকাশ হয়েছে। এখন সেগুলোর আদি সুর কী ছিল নজরুলের সুস্থাবস্থায়, এটা ইম্পর্টেন্ট। নজরুল সংগীতের আদি সুর কী ছিল, নজরুল জীবিত অবস্থায়, নজরুল ইন্সটিটিউট টাইমটা ফিক্স করেছে আপ-টু-টাইম, সেগুলো আমরা উদ্ধার করে সেই সুরে আবার গান বেঁধে নতুন করে সিডি প্রকাশ করছি নজরুল ইন্সটিটিউট থেকে এবং স্বরলিপি বের করা হচ্ছে। পঞ্চাশখণ্ড স্বরলিপি বের হবে।  অধের্কের বেশি এরই মধ্যে বেরিয়েছে।  এই কাজটা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, নজরুল সংগীতকে উদ্ধার করা।

রাইজিংবিডি: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনার ব্যস্ত সময়ের মাঝে সময় দেওয়ার জন্য

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম: রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসান/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়