ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রায়ে অসন্তোষ জিহাদের বাবার

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রায়ে অসন্তোষ জিহাদের বাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ে মাঠে পরিত্যক্ত পানির পাম্পের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের (৪) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে তাদের ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আসামিদের আরো দুই বছর কারাভোগ করতে হবে।

রোববার দুপুরে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় চারজন সাজা পেলেও বাকি দুজনের খালাস পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার বাবা নাসির উদ্দিন ফকির। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাইজিংবিডিকে এসব কথা বলেন নাসির।

জিহাদের বাবা জানান, ‘আমি ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ে আমি অসন্তুষ্ট। একই অভিযোগে চারজনের সাজা হলেও বাকি দুইজন খালাস পেয়েছে। ওই চারজন যদি সাজা পায় তাহলে বাকী দুইজন খালাস পায় কীভাবে? তাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ছিল। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট না।’

আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানান তিনি।

মামলা তুলে নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা আমাকে হুমকি দিয়েছে। আমি যেন মামলা তুলে নেই এবং সাক্ষ্য না দিই এ জন্য তারা আমার কাছ থেকে একটা সাদা কাগজে সই নিয়েছে। সেই কাগজটি এখনো তাদের কাছে রয়েছে।’

খালাসপ্রাপ্ত দুই আসাসির কাছে সেই কাগজটি রয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে আসামিদের পক্ষ থেকে লোকজন এসে তাদের হুমকি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

জিহাদের মা খাদিজা বেগম সম্পর্কে নাসির উদ্দিন বলেন, ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি (জিহাদের মা) অসুস্থ। এখন রায় শুনে বাসায় বসে কান্নাকাটি করছে।

নাসির জানান, সবার ছোট ও আদরের ছেলে ছিল জিহাদ। বাবা-মায়ের সবচেয়ে আদরের সন্তান ছোট ছেলে। সেই আদরের ধনকে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। এখনো ছেলে হারানোর যন্ত্রণায় ভুগছেন।

জিহাদের মৃত্যুর মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসআর হাউজের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সালাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ শাকি।

এদিকে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক এবং সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩টায় শিশু জিহাদ পাইপের মধ্যে পড়ে যায়। রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়ে পরদিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন জনৈক মজিদ, লিটু ও আনোয়ার। তাদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদের মরদেহ তোলা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মামুন খান/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়