ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

জঙ্গিদের টার্গেট ‘বিদেশি’

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৭ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জঙ্গিদের টার্গেট ‘বিদেশি’

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম : অন্য দেশের নাগরিক, বিদেশি কোম্পানির স্থাপনা এবং বিদেশি বিনিয়োগে গড়ে উঠা শিল্প কারখানায় হামলার প্রস্তুতি নিয়ে শক্তিশালী বোমা তৈরির পাশাপাশি নিজেরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে জঙ্গিরা।

সীতাকুন্ডের প্রেমতলায় জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান শেষে সেখান থেকে উদ্ধারকৃত বোমার আলামত এবং আটককৃত দুই জঙ্গির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম।

সীতাকুন্ডের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে দুই দিন নির্ঘুম নেতৃত্বে থাকা শফিকুল ইসলাম বলেন, শিল্পকারখানায় নিয়োজিত বিদেশিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা নিয়ে সীতাকুন্ডে নব্য জেএমবির সদস্যরা জঙ্গি আস্তানা গড়ে তুলেছেন। সীতাকুন্ডের এ জঙ্গি আস্তানায় জমায়েত হয়ে নাশকতার অনুশীলন করছিলেন তারা।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে মীরসরাই ও সীতাকুন্ডে তিনটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান এবং সেখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের মজুদ দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন মীরসরাই ও সীতাকুন্ডকে এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ জোন বানানোর চেষ্টা করছে জঙ্গিরা এবং এর নেপথ্যে কয়েকটি কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে।

ডিআইজি বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য ছিল বিদেশিদের ওপর হামলা করে মীরসরাই, সীতাকুন্ড অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করা।’ 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের প্রধান লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত। ২০১৩-১৪ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড এলাকা ছিল নাশকতাকারীদের হামলার মূল লক্ষ্য। টানা অবরোধ-হরতালের সময় এ এলাকায় পণ্যবোঝাই ট্রাক আর যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। দফায় দফায় উপড়ানো হয় রেল লাইন। অবস্থা সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।

গত ৭ মার্চ কুমিল্লায় পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টাকালে দুই জঙ্গি আটক এবং পরে মীরসরাইয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একেবারে পাশ ঘেঁষে জঙ্গি আস্তানা থেকে হাতবোমা, চাপাতি, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনা নতুন করে চিন্তার ফেলে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে। সীতাকুন্ডে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার জঙ্গিরা মীরসরাইয়ের সোনা পাহাড় এলাকায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন।

নব্য জেএমবির লক্ষ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় ধরনের নাশকতার লক্ষ্যে জঙ্গিরা প্রচুর গ্রেনেড ও বিস্ফোরক মজুদ করেছিলেন আস্তানায়। প্রায় শতাধিক বিদেশি সীতাকুন্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। এ ছাড়া সীতাকুন্ড-মীরসরাইকে ঘিরে ইকনোমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ জোনের কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশি, বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি বিনিয়োগের উপর কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত বিদেশিদের কানে যাবে এবং তাদের মধ্যে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দ্বিতীয়ত, এখানে অবস্থান করলে জঙ্গিরা পাহাড়ে লুকানো, সমুদ্র, নদী ও মহাসড়ক দিয়ে পালানোর জন্য বা কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য সহজ।

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা জঙ্গিদের রয়েছে- বললেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/১৭ মার্চ ২০১৭/রেজাউল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়