ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩০ বছর পূর্তিতে জমজমাট আয়োজন

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২০ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩০ বছর পূর্তিতে জমজমাট আয়োজন

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম : ২৫ এপ্রিল ১৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে দেশের প্রধান নদী বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের । এই উপলক্ষ্যে দুইদিন ব্যাপী পোর্ট এক্সপোর জমজমাট আসর বসছে আগামী ২৭ এবং ২৮ এপ্রিল।

‘বন্দরেই সমৃদ্ধি’ স্লোগানকে সামনে রেখে পোর্ট এক্সপোর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এক্সপো’র মাধ্যমে বন্দরের কর্মকান্ড উপস্থাপনের পাশাপাশি বিশাল শ্রম বাজার সম্পর্কেও দেশের যুব সমাজকে ধারণা দেওয়া হবে। পোর্ট এক্সপো’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ। চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যান্তরে নবনির্মিত কারশেডে শতাধিক স্টলে এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (এডমিন এন্ড প্ল্যানিং) মোহাম্মদ জাফর আলম  জানান, ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩০ তম বন্দর দিবস।  দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই দুইদিন ব্যাপী জমকালো পোর্ট এক্সপোর আয়োজন । বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করে এই মেলার প্রস্তুতি নিয়েছে।

জাফর আলম বলেন, ‘বন্দরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করে। বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার রয়েছে বন্দরের। এদের সকলকে একই ছাদের নিচে এনে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম ব্যাপকহারে বেড়েছে। এক মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে আমাদের ৩১ বছর লেগেছিল। কিন্তু পরবর্তী সাত বছরে আমরা দ্বিতীয় এক মিলিয়ন কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছি। দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগুচ্ছে। এতে করে বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম অবাধ রাখার জন্য কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, ইকুইপমেন্ট সংগ্রহসহ নানা খাতে উন্নয়ন ঘটাতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন,  ‘আমরা বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা টার্মিনাল, কর্ণফুলী টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছি। মাতারবাড়িতে বন্দর হচ্ছে। পায়রাতে বন্দর হচ্ছে। বন্দর সংশ্লিষ্ট অনেক বড় একটি চাকরির বাজার তৈরি হচ্ছে। আমরা এই বাজার দেশের যুব সমাজের সামনে উপস্থাপন করতে চাই। বিশ্বের শিপিং সেক্টর অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ম্যানলেস পোর্ট চলে এসেছে। জাহাজের আকৃতি বড় হয়ে যাচ্ছে। ছোট জাহাজের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এগুলো আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বন্দরে ১৯০ মিটার লম্বা এবং ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং দিচ্ছি। আমাদেরকে আরো বড় জাহাজ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। আর এজন্য বে টার্মিনাল নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।’

মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, ‘বন্দর নগরীতে বন্দর ভিত্তিক উন্নয়ন না হলে সংকট তৈরি হয়। বন্দরের সামনের রাস্তাটি বন্দরই করেছিল। কিন্তু এখন এই রাস্তায় ১১টি কেপিআই রয়েছে। পোর্ট কেন্দ্রিক চিন্তা না করায় আজ দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের কার্যক্রম সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। বন্দরে নিয়মিত আসা যাওয়া করেন এমন অনেকেরই বন্দর সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় বিভিন্ন সময় ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। আমরা বন্দর সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা সকলকে দেওয়ার চেষ্টা করবো পোর্ট এক্সপোতে। কারশেডে বিভিন্ন স্টলে বন্দরের স্টেকহোল্ডার নিজেদের কর্মকান্ড উপস্থাপন করবে। বন্দরের ইকুইপমেন্ট সরবরাহকারী বিশ্বের নানা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের এদেশীয় সহযোগি প্রতিষ্ঠানের সাথে এক্সপোতে শরিক হবে। এমএলও এবং শিপিং এজেন্সিগুলো স্টল বরাদ্দ নিচ্ছে। স্টলের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন টাকা পয়সা নিচ্ছে না। ফ্রি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।’

জাফর আলম আরওবলেন, ‘আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠান করতে চাই। ঢাকা থেকে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের আনা হবে। জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। রাতে ফায়ার ওয়াক্সের মাধ্যমে আমরা পুরো আয়োজনকে বর্ণিল করে তুলবো। বন্দরের ১৩০ বছরের অনুষ্ঠানটিকে কালারফুল করতে আমাদের আয়োজনের কমতি থাকবে না। আমরা শুধু উৎসবই নয়, বিশ্বব্যাপী একটি ম্যাসেজও দিতে চাই। বাংলাদেশ এগিয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর এগিয়েছে। বিশ্বের শিপিং সেক্টরে একটি সম্মানের জায়গায় যাওয়ার জন্য আমরা সব বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে চাই।’




রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২০ এপ্রিল ২০১৭/রেজাউল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়