ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রেইনট্রির মালিকের বিরুদ্ধে তিন আইনে ব্যবস্থা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ২৩ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রেইনট্রির মালিকের বিরুদ্ধে তিন আইনে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বনানীর আলোচিত হোটেল দ্য রেইনট্রির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মোহাম্মদ আদনান হারুন অনেক প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।

হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ভ্যাট ও শুল্ক আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর কার্যালয়ে রেইন্ট্রির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রেইন্ট্রি হোটেলের মালিক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। হোটেলের ১০১ নং কক্ষ থেকে যে ১০ বোতল মদ উদ্ধার হয়েছে, তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন তারা। সেগুলোকে তারা জুসের বোতল বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল। বোতলের সেম্পল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে পাঠানোর পর তারা পরীক্ষা করে বলেছে সেগুলো বিদেশি মদ ছিল। এতে অ্যালকোহলের পরিমাণ ১৩.৫%।

মইনুল খান বলেন, মদ সংরক্ষণ অথবা বিপণন করার জন্য ওই হোটেলে কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ব্যাপারে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। আমাদের কাছে তথ্য আছে অতীতেও রেইন্ট্রিতে মদের ব্যবসা হয়েছে।

মদের কথা স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, তারা জুসের অবস্থান থেকে সরে এসে স্বীকার করেছেন সেগুলো মদই ছিল। তবে তারা এর বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তবে এ ব্যাপারে মালিকপক্ষ দায়ী নয়। জিএম ফ্রাঙ্ক হেনরি এবং এজিএম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এমদাদুল আমীন এ বিষয়ে বলতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা তাদেরকেও তলব করেছি। দুপক্ষের বক্তব্য নিয়ে জানা যাবে আসলে কে জড়িত।

রেইন্ট্রির মালিক আট লাখ ১৭ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছেন জানিয়ে মঈনুল খান বলেন, মার্চ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত রেইন্ট্রির মালিক আট লাখ ২৭ হাজার টাকা ভ্যাট আদায় করেছেন, কিন্তু মাত্র ১০ হাজার টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছেন। বাকিটা প্রফিট দেখিয়েছেন, যা অমার্জনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে মামলার জন্য সুপারিশ করা হবে বলেও জানান শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মইনুল খান বলেন, আমাদের তদন্তে যা পেয়েছি তা ওই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে বিবেচিত হবে।

আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ প্রসঙ্গে ড. মইনুল বলেন, আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুমে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে, যার মূল্য আড়াইশ কোটি টাকা। যার কোনো বৈধ কাগজপত্র এখনো দিতে পারেনি। এছাড়া আজ সকালে সিলেটের জিন্দাবাজার থেকে লুকায়িত একটি মার্সিডিজ গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। পরে জানতে পারি যে গাড়িটি আপন জুয়েলার্সের মালিক এবং তার ছেলে সাফাতের। এই গাড়িতে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটেছে। বিআরটিএর রেজিস্ট্রেশনে দেখানো হয়েছে গাড়ি ২০১১ সালের, কিন্তু পিন নম্বরে দেখা যায় ২০০২ সালে।

আজকের জিজ্ঞাসাবাদে আদনান হরুনের সঙ্গে তার চাচা মুজিবুল হক কামাল, ফুফাতো ভাই হাসিব রুমী, ফুফা আকবর হোসেন মঞ্জু এবং তার আইনজীবী জাহাঙ্গীর কবির শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে আসেন।

সম্প্রতি রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর গত ৬ মে দুই তরুণী আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যেখানে জন্মদিনের পার্টিতে তাদের মদ খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এরপর রেইন্ট্রি হোটেলে শুল্ক গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে ১০১ নং কক্ষ থেকে ১০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৭/এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়