ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

নথিপত্র দিতে আপন জুয়েলার্সে শুল্ক গোয়েন্দাদের ৫টি দল

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২৫ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নথিপত্র দিতে আপন জুয়েলার্সে শুল্ক গোয়েন্দাদের ৫টি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুল্ক গোয়েন্দার জব্দ করা সাড়ে ১৩ মন স্বর্ণালংকার ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ডের অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে কাজ করছে শুল্ক গোয়েন্দাদের পাঁচটি টিম ।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আপন জুয়েলার্সর গুলশানের দুটি শাখা, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ার শাখায় শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচটি টিম কাজ করছে। সেখানে আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষ ও বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির নেতারা উপস্থিত রয়েছেন।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জব্দকৃত স্বর্ণালংকারের অনুকূলে নথিপত্র থাকলে তা যাতে আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষ বুঝে নিতে পারে সেজন্যই আজ তাদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে তারা কখনো প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্যই সকলের উপস্থিতিতে আপন জুয়েলার্সের শাখায় আমাদের টিম উপস্থিত থেকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেবে। পরে ওই নথিপত্র যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে একই সঙ্গে আপন জুয়েলার্সের মালিকপক্ষের কাছ থেকে গ্রাহকের অলংকারের তালিকাও বুঝে নেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে তারিখ ঘোষণা করে গ্রাহকদের অলংকার ফিরিয়ে দেয়া হবে।

এর আগে গত ২২ মে গ্রাহকের গচ্ছিত স্বর্ণ বা অলংকার ফেরত দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে কাগজপত্র সরবরাহ করতে না পারায় গ্রাহকদের অলংকার ফেরত দেয়া সম্ভব হয়নি।

গত ১৭ মে আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই গোলজার আহমেদ, দিলদার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। জব্দকৃত সোনার অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দলিলাদি জিজ্ঞাসাবাদের সময় দেখাতে পারেনি আপন ‍জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা নথিপত্র উপস্থাপনে সময় চাইলে তাদেরকে ২৫ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়।

গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের গুলশানের দুটি শাখায় এবং উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কয়ার শাখায় অভিযান পরিচালনা করে সাড়ে ১৩ মন স্বর্ণালংকার ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুদ রাখার দায়ে সাময়িকভাবে আটক করেন। বৈধ দলিলাদি দেখাতে না পারায় এবং আমদানি ও ক্রয়ের উৎস সন্দেহজনক হওয়ায় ওগুলো সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণে মধ্যে ১০ কিলোগ্রামের বেশি স্বর্ণ গ্রাহকের রয়েছে দাবি করে জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ।

প্রথম দফা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। আমার দোকানে কোনো অবৈধ জিনিস (স্বর্ণ-হীরা) নেই। তারা আমাদের স্বর্ণ ও ডায়মন্ড জব্দ করেছে। আমরা পেপার্স শো করব। সময় নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আপন জুয়েলার্সের মাধ্যমে ২ লাখ মানুষ বাঁচে। আমাদের একটি সাইনবোর্ড আছে। এটা বৈধ ব্যবসা। গত ৫ বছরে কোন স্বর্ণ আমদানি নেই। রিসাইক্লিং করে এসব স্বর্ণ তৈরি করা হয়। আপন জুয়েলার্স যেভাবে রিসাইক্লিং করে ব্যবসা করে সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা একইভাবে ব্যবসা করে। আমার দোকান যদি বন্ধ করা হয় তাহলে সারা বাংলাদেশের সকল স্বর্ণ দোকান বন্ধ করা উচিত। স্বর্ণ আমদানির সাথে শুল্কের ব্যাপার রয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দার দায়িত্ব আছে আমাদের কাগজপত্র দেখার। আমাদের কাছ থেকে যদি উপযুক্ত প্রমাণ তারা পায় তাহলে আমাদের শো-রুমগুলো কর্তৃপক্ষ খুলে দেবে।’

গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে এবং আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। এরপরই শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সে অভিযান চালায়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৭/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়