ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জলাবদ্ধতা নিরসনে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ১৬ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জলাবদ্ধতা নিরসনে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীতে জলাবদ্ধতা ইদানিং মহাসমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হলেই প্রায় পুরো নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ সমস্যা দূরীকরণে একটি আধুনিক ও সুদূরপ্রসারী মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।

রোববার গুলশান সেন্টার পয়েন্টে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নগরীর জলাবদ্ধতা ও তা দূরীকরণ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩য় আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ঢাকা ১১-এর সংসদ সদস্য একেএম রহমত উল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব, দপ্তর ও সংস্থা প্রধান, নগর বিশেষজ্ঞ ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা।

সভায় ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা ও তার সমাধানে নগর পরিকল্পনাবিদ, অধ্যাপক, গবেষক, সিটি কাউন্সিলর, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও দপ্তর প্রতিনিধিরা পরামর্শ প্রদান করেন। সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সমস্যার কারণ ও সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন করা হয়।

সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, ঢাকা মহানগরীতে গত ৫০ থেকে ৬০ বছরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশি-বিদেশি সংস্থার মতে, এ নগরীতে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যা থাকতে পারে। কিন্তু বাস্তবে জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। তাছাড়া সিটির আয়তনও প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে নগরীর ভৌত কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে বলেই জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ সমস্যা নিরসনে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প মেয়াদি ব্যবস্থা চালু রেখে দীর্ঘ মেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে ঢাকা মহানগরের জন্য আধুনিক ড্রেনেজ ও সুয়ারেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের এ জলজট বা জলাবদ্ধতার জন্য আমরা সবাই কম-বেশি দায়ী। মহানগরীর অধিবাসী, জনপ্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে এ সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, কোনো সমস্যাই চিরস্থায়ী নয়। ঢাকা ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন এ সমস্যা সমাধানের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। অতএব, এ সমস্যা সমাধানের দায়িত্বও প্রকারান্তরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায়।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ওয়াসা ২০০৫ সালে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে যে মাস্টার প্ল্যান করেছে তা ২০১৭ সালে অনুপযুক্ত। এখন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে আরও ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর আয়তন এখন চারগুণ হয়েছে। ওয়াসার মাস্টার প্ল্যান এখন অচল। নতুন করে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার সমন্বয়ে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর আরেকটি বড় সমস্যা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। ঢাকা ওয়াসার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল না থেকে প্রতিটি বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক বসানো উচিৎ। সেপটিক ট্যাংকে প্রাকৃতিক উপায়ে মানব বর্জ্য সংরক্ষিত থাকে যা অত্যন্ত নিরাপদ। তিনি এ ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর সুদৃষ্টি আশা করেন।

মন্ত্রী বলেন, কঠিন বর্জ্য ঢাকা মহানগরীর অন্যতম বড় সমস্যা। যেখানে-সেখানে কঠিন বর্জ্য ফেলার বিষয়টি জলাবদ্ধতাকে বাড়িয়ে দেয়। ড্রেন, খাল সব কিছু এ কঠিন বর্জ্য দ্বারা ভরাট হয়ে পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, যেসব খাল ভরাট হয়ে গেছে সেগুলোর পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে ও বেদখল খালসমূহ পুনরুদ্ধার করতে হবে।

পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমাদের সমন্বিতভাবে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে কাজ করতে হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৭/হাসান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়