ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১১ জন কারাগারে

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১১ জন কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে রাজশাহী মহানগরীর হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার নাহিদুদ্দোজা মিঞা ওরফে নাহিদসহ (৩২) গ্রেপ্তার ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম গোলাম নবী কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন-হেলাল উদ্দিন (২৯), আল আমিন (২৩), ফয়সাল ওরফে তুহিন (৩৭), মঈন খান (৩৩), আমজাদ হোসেন (৩৪), তাজুল ইসলাম (২৭), জাহেদুল্লাহ (২৯), আল-মামুন (২০), আল-আমিন (২৩) ও টলি নাথ (৪০)।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপনগর থানার ইন্সপেক্টর মো. ইলিয়াস আসামিদের আদালতে হাজির করে সন্ত্রাসবিরোধ আইনে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রত্যেকের দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে এদিন মামলার সিডি (কেস ডকেট) না থাকায় আদালত রিমান্ড শুনানির দিন আগামীকাল সোমবার ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শনিবার ভোরে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনার বিভিন্ন এলাকা থেকে এদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪ এর অপারেশন দল।

এরপর ঢাকায় র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘স্পেনের আইটি কোম্পানি সিনটেক ও বাংলাদেশের ওয়াইমি একই মালিকের প্রতিষ্ঠান। মালিকের নাম আতাউল হক সবুজ। সে স্পেনে বসবাস করে। তার কোম্পানি সিনটেকের মাধ্যমে ওয়াইমি অর্থ পাঠাতো। যার ৪৭ শতাংশ বেতন ও অবকাঠামোগত কাজে ব্যয় হতো। বাকিটা জঙ্গিবাদে অর্থায়ন হতো।’

এদের মধ্যে ৭ জন ওয়াইমির ও বাকিরা অন্য প্রতিষ্ঠানের। র‌্যাব মুখপাত্র আরো জানান, একই মালিকের দুই প্রতিষ্ঠানে স্পেন ও বাংলাদেশে দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একইসঙ্গে অভিযান পরিচালনা করে। স্পেনে আতাউল হক সবুজকেও আটক করা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবুজকে দেশে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তারা কীভাবে জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত এমন প্রশ্নে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সমস্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের আটক করেছি। বাকি বিস্তারিত তথ্য অধিকতর তদন্তের পর জানানো হবে।’

র‌্যাব বলছে, সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াইমি’ সবার দৃষ্টিতে সফটওয়্যারের কাজ করলেও এই ব্যবসার আড়ালে তারা বিদেশ থেকে আসা অর্থ গ্রহণ করতো ও দেশে অবস্থান করা জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দিতো। স্পেনে প্রতিষ্ঠিত একই মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘সিনটেল’ এর মাধ্যমে টাকাগুলো দেশে আসতো।

প্রতিষ্ঠানের মালিক আতাউল হক সবুজ ২০১৫ সালে ১০ ডিসেম্বর সিরিয়ায় বোম্বিংয়ে নিহত জঙ্গি শিপুল হক সুজনের ভাই। বিদেশ থেকে এই জঙ্গি অর্থায়ন আনার কাজ শুরুতে সেই করতো। তার মালিকানায় আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার কোম্পানি ছিল ‘আইবেক’। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নয়টি দেশে তার শাখা ছিল। আইবেকের প্রধান কার্যালয় ছিল আমেরিকায়।’

র‌্যাব জানায়, ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর আইবেকের ৫০ হাজার ডলার জঙ্গি অর্থায়নের কাজে ব্যবহারের আগেই র‌্যাবের হাতে আটক হয়। যা জঙ্গি বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেটের মাধ্যমে তামীম চৌধুরীর কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল। জঙ্গি অর্থায়নে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে আইবেক শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের শাখাও বন্ধ করে দেয় সে দেশের কর্তৃপক্ষ। আইবেক বাংলাদেশ শাখায় দেখভালে দায়িত্ব ছিল সিরিয়ায় নিহত জঙ্গি শিপুল হক সুজনের ভাই আতাউল হক সবুজ।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১১টি ল্যাপটপ, ১২টি মোবাইল, হটি কার্ড পাঞ্চিং মেশিন, পাসপোর্ট, ভোটার আইডিসহ প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। এইসব নথিপত্র প্রাথমিকভাবে যাচাই করে অনেক অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তবে ঠিক কি পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে তা সঠিকভাবে জানাতে পারেননি তারা। র‌্যাব ধারণা করছে এই অর্থ অস্ত্র-বিস্ফোরক ক্রয়, ট্রেনিংসহ অন্যান্য কাজে তারা ব্যয় করতো।

আরো পড়ুন :



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়