ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘শিশু আদালত বয়স্কদের আদালতে পরিণত হয়েছে’

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৩, ১২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শিশু আদালত বয়স্কদের আদালতে পরিণত হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার বিচার কোন আইনে বা কোন আদালতে হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে শিশু আইন-২০১৩ সংশোধন করতে সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং সচিব ও নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।  

তবে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন প্রণয়ন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের (ড্রাফটিং উইং) সচিব মোহাম্মদ সহিদুল হক আদালতকে বলেছেন, আশা করি এ সময়ের মধ্যেই আইন সংশোধনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।

এ সময় আদালত দুই সচিবকে উদ্দেশ্যে করে  বলেন, শিশু আদালত এখন বয়স্কদের আদালতে পরিণত হয়েছে। ভিকটিম শিশু। অথচ বিচার হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের। আমাদের প্রত্যাশা, আইনের অস্পষ্ঠতা দূর করা। আপনাদের কে ডেকেছি আমাদের এই অনুভূতি জানানোর জন্য। বিষয়টি অন্যভাবে নিবেন না।

গত ২৯ অক্টোবর আদালত সমাজকল্যাণ সচিব জিল্লার রহমান এবং আইন মন্ত্রণালয়ের আইন প্রণয়ন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের (ড্রাফটিং উইং) সচিব মোহাম্মদ সহিদুল হককে তলব করেন। এ আদেশে  আজ ওই দুই সচিব আদালতে হাজির হন। আদালত তাদের কাছে জানতে চান, আইনের স্পষ্ঠতা দূর করতে তারা সমস্যা কোথায়? আইনটি কেন সংশোধন করা হচ্ছে না। আদালত বলেন, আমরা দেখছি, শুধুই চিঠি চালাচালি হচ্ছে। আমাদের আশা হলো তারা দ্রুত বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেবে। এ কারণেই তাদের ডাকা হয়েছে।

এ সময় সচিব সহিদুল হক বলেন, আইন সংশোধনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এর আগেই আইন সংশোধন হলে ভাল হতো। কিন্তু তা হয়নি। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।   

এ সময় সচিব সহিদুল হক বলেন, আইন সংশোধনের জন্য দুই মাস সময় দরকার।

এরপর সমাজকল্যাণ সচিব বলেন, আমরা আইন সংশোধনের একটি খসড়া ভেটিংয়ের জন্য গত ৭ মে পাঠিয়েছি আইন মন্ত্রণালয়ে। এখনও সেটা ফেরত আসেনি। আমাদের কাছে ফেরত আসার পর সাতদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করতে পারবো। এরপর আদালত আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়ে আদেশ দেন।

এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কোনো অপরাধী যদি শিশু হয় তাহলে তার মামলা শিশু আদালতে পাঠাতে পারেন।

আদালত বলেন, নতুন কোনো বিশেষ আইন হলে সে আইনের মামলা বিচারের আগে বিচারক, তদন্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী সবার প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। 

শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ঢাকা, কক্সবাজার ও রংপুরে করা পৃথক চার মামলায় বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। চারটি মামলার মধ্যে দুটি করা হয় শিশু আইনে, অপর দুটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। পৃথক দুই আইনে দায়ের হওয়া  মামলার সাজাও আলাদা। শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার বিচার কোন আইনে বা কোন আদালতে হবে সে বিষয়ে গত বছর ১৪ আগস্ট ওই তিন সচিবের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। গত বছর ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হলেও কেউই ব্যাখ্যা দাখিল করেননি। এ কারণে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি করেন। 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ নভেম্বর ২০১৭/মেহেদী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়