ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঢাবির ৭ শিক্ষার্থী রিমান্ডে

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাবির ৭ শিক্ষার্থী রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীর এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মাহমুদুল হাসান তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদ মল্লিক, মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের মো. বায়জিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের নাহিদ ইফতেখার, অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ফারদিন আহম্মেদ সাব্বির, সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রসেনজিত দাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের রিফাত হোসাইন এবং ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হাকিম।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম রাজধানীর শাহবাগ থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনার পাশাপাশি ভর্তিইচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে তার উত্তরপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে সরবরাহ করে আসছে। আসামিরা অত্যন্ত চতুর প্রকৃতির। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি  ক্ষুণ্ন করাসহ দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাপীঠে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত করে আসছে। এই ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম মেধাবীরা টাকার বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করছে। তারা দেশকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

আবেদনে আরো বলা হয়, স্বল্প সময়ের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য বের করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেপ্তার, মূল ঘটনা উন্মোচন, মূল হোতাদের চিহ্নিতকরণ, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তাদের শনাক্তকরণ, আসামিদের কর্মপদ্ধতি ও ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসমূহের পরিচিতি ও ব্যাবহার পদ্ধতি যাচাইয়ের জন্য প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।    

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন,  এরা সবাই ছাত্র। এরা কেউ প্রশ্ন তৈরি করেনি। তাছাড়া এরা এজাহারনামীয় আসামি নয়। তাদের ৪৮ ঘণ্টা আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আর সেখানেই রিমান্ড হয়ে গেছে। আর যদি তাদের জিজ্ঞাসবাদ করার প্রয়োজন হয় তাহলে তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু উদ্ধার করা হয়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁসে তাদের জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, এরা ছাত্র।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

এদিকে সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও ঢাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রানাসহ ১৫ জনকে আটক করে তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অন্যদের তথ্য বেরিয়ে আসে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ নভেম্বর ২০১৭/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়