ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ক্ষোভ থেকেই সহপাঠীকে হত্যা করে বক্কর

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩০, ২২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্ষোভ থেকেই সহপাঠীকে হত্যা করে বক্কর

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য থেকে তৈরি হওয়া ক্ষোভ থেকে সহপাঠী জিদান ওরফে আবদুর রহমানকে (১২) করে মো. আবু বক্কর (১৬)।

বুধবার সকালে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছে আবু বক্কর।

বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন র‌্যাব-৩ এর সিও লেফট্যানেন্ট কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, ঘটনার পর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‌্যাব। এর পরিপ্রেক্ষিত আজ সকাল ৯টায় সদরঘাট এলাকা থেকে আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করা হয়। মো. আবু বক্কর বরিশাল জেলার মেহেদীগঞ্জ থানার কালিকাপুর গ্রামের শিকদার বাড়ির মৃত তাহের শিকদারের ছেলে।

এমরানুল হাসান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবু বক্কর জিদানকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে সে জানিয়েছে, জিদানের সঙ্গে সে মাদরাসার হেফজ বিভাগে পড়ত। তবে এই প্রতিষ্ঠানে সে সিনিয়ার ছিল। এই সুবাধে জিদানকে দিয়ে মাঝে মধ্যে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করতে আদেশ দিত। জিদান তার নির্দেশ না শোনায় সে তার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয় এবং ঘটনার চার দিন আগে জিদানকে চড়-থাপ্পড় মারে বক্কর।

এ নিয়ে মাদরাসা শিক্ষক মো. ইয়াসিনের কাছে বিচার গেলে তিনি তা মীমাংসা করে দেন। এছাড়া বক্কর ঘটনার কিছুদিন আগে নিজেদের মধ্যে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে জিদানকে প্রস্তাব দেয়। এটি জিদান প্রত্যাখ্যান করে। পরে জিদান তার অন্য সহপাঠী আব্দুর রহমানের সঙ্গে চলাফেরা বাড়ালে বক্করের মনের ভেতর ক্ষোভ জন্ম নেয়। সেখান থেকে সে পরিকল্পিতভাবে জিদানকে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সম্পর্কে আবু বক্কর র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য দিয়েছে তার বর্ণনা দিয়ে এমরানুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, রোববার এশার নামাজ পড়ে আবু বক্কর তার ফল কাটার ছুরি ধার দিয়ে রাখে ও রাতের কোনো এক সময় জিদানকে হত্যা করে মাদরাসার সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখার পরিকল্পনা করে। রাত ১০টার দিকে মাদরাসার সব শিক্ষার্থী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। সবাই ঘুমিয়ে গেলে রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বক্কর জিদানের পাশে যায়। সঙ্গে তার ব্যবহৃত ট্রাংক থেকে ধারালো ছুরিও নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে প্রথমে সে জিদানের মুখ চেপে ধরে ও পরে ছুরি দিয়ে গলায় পোচ দেয়। এ সময় জিদান গোঙানি শুরু করলে সে আরেকটি পোচ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে কোলে করে জিদানকে মাদরাসার সেপটিক ট্যাংকে ফেলে পালিয়ে যায়।

বক্কর র‌্যাবকে জানায়, ওই সময় মাদরাসার সব শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে ছিল। তবে জিদানের গোঙানির শব্দ শুনে দুই-একজন ঘুম থেকে উঠলেও অন্ধকার রুমে মশারির ভেতরে থাকায় এবং ভয়ে কেউ শব্দ করেনি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে মাদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসার ভেতরে খুন হয় জিদান। এ ঘটনায় পরদিন জিদানের বাবা হাফেজ উদ্দীন পল্টন থানায় একটি মামলা (নং-৩২) দায়ের করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ নভেম্বর ২০১৭/নূর/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়