ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রণদা প্রসাদ হত্যায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রণদা প্রসাদ হত্যায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় জড়িত অভিযোগে টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১১ মার্চ দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।

রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়।

রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় জড়িত অভিযোগে টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন গত ২ নভেম্বর প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা।

তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে যুদ্ধাপরাধের তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান,  জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক।

হান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। আসামি মাহবুবুর রাহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসামি এক সময় জামায়াতে ইসলামের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু নির্দলীয়ভাবে তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও প্রতিবারই পরাজিত হয়েছেন।’

হান্নান খান তদন্ত প্রতিবেদন উদ্বৃত করে বলেন, ‘আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষা নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।   

মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি টাঙ্গইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশ এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশ এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউ এলাকায় অপরাধ সংঘটন করে।

তদন্তে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়।

রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যান্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মেহেদী/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়