ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অন্ধ সংস্থার মহাসচিব হত্যায় মৃত্যুদণ্ড ২

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অন্ধ সংস্থার মহাসচিব হত্যায় মৃত্যুদণ্ড ২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শাহআলীবাগে জনতা হাউজিংয়ে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার প্রাক্তন মহাসচিব খলিলুর রহমান হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. রমজান আলী ওরফে রমজান (পলাতক) ও টিপু ওরফে হীরা।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মিনহাজ, হাসানুর রহমান রুবেল (পলাতক), শহীদ মোস্তফা ও জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আইয়ুব আলী, নুরুল আলম সিদ্দিক, মো. সোহাগ হোসেন হাওলাদার ও ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।

বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, জাতীয় অন্ধকল্যাণ সংস্থার শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে এবং ওই সংস্থার সম্পত্তি বিক্রি ও ভোগ করা নিয়ে বিভিন্ন সময় খুন-পাল্টা খুন এবং এ নিয়ে অসংখ্য মামলা-মোকাদ্দমার তথ্য প্রমাণ রয়েছে। একই ভাবে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার এই শত শত কোটি টাকার সম্পত্তির আয় এবং বিক্রির প্রচুর টাকা থাকা সত্ত্বেও জাতীয় পর্যায়ে সুবিধাবঞ্চিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা এই সম্পত্তির আয় পাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায় না মর্মে মামলার শুনানিকালে পরিলক্ষিত হয়। ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সংস্থার সম্পত্তির আয় কিংবা সম্পত্তি বিক্রিলব্ধ টাকা যেন সুষ্ঠু ও সম বণ্টন হয়, এ বিষয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে সরকারিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। তাই এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে মাননীয় সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসক, ঢাকাকে অবহিত করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তা উল্লেখ না করে সম্পূর্ণ অদক্ষ ও দায়সারাভাবে চার্জশিট দাখিল করা হয়। দায়সারা ও ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিট দাখিল করায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া আসামি সাগরের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত করে যত দ্রুত সম্ভব সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করতে আইজিপি ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার, ঢাকা বরাবর এ রায়ের অনুলিপি পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলার আসামি আইয়ুব আলীর সাজা না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান মিজান।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার আসামিরা এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বিরোধ মিমাংসার কথা বলে খলিলুর রহমানকে আসামি ইয়াকুব আলীর শাহআলীবাগ জনতা হাউজিংয়ের ৩৩ নম্বর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আইয়ুব আলী ও মিনহাজ গ্রুপের লোকজন খলিলুর রহমানকে গুলি করেছে বলে তার সহকারী শুভ দৌড়ে এসে খলিলুর রহমানের স্ত্রী মোসা. হাসিনা পারভীনকে জানান। পরে খলিলুর রহমানের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় খলিলুর রহমানের স্ত্রী বাদী হয়ে মিরপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তিন তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে চতুর্থ তদন্ত কর্মকর্তা  (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে চার্জশিটে মামলার অন্যতম আসামি সাগরকে চার্জশিটে আসামি হিসেবে দেখানো হয়নি। ২০১৫ সালের ১০ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার বিচারকাজ চলাকালে বিভিন্ন সময়ে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। 

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়