ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন ফেরত

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন ফেরত

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনটি বাদীকে ফেরত দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ১৪ মার্চ গুলশান থানা পুলিশকে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা গেল কি না, এ সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।

বুধবার সকালে মামলার বাদী বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আহসান হাবীব শুনানি শেষে বিকেল ৩টায় ওই সংক্রান্ত আদেশ দেবেন বলে জানান। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই আবেদন কোনো কারণ ছাড়াই বাদীকে ফেরত দেওয়া হয়।

এ সম্পর্কে মামলাটির বাদী এ বি সিদ্দিকী জানান, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর তিনি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। ওই দিন আদালত তেজগাঁও থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান মানহানির অভিযোগে অভিযুক্ত করে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওই বছরের ২২ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। সমন জারি হওয়ার পর খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় ওই বছরের ১২ অক্টোবর প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে গুলশান থানাকে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। কিন্তু গুলশান থানা পুলিশ ওই আদেশ অদ্যবধি বাস্তবায়ন করেনি।

তিনি বলেন, বর্তমানে আসামি খালেদা জিয়া যেহেতু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন তাই আমরা ওই বিষয় উল্লেখ করে এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য হাজতি পরোয়ানা জারির আবেদন করি। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আদালত থেকে তা ফেরত দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে’ আদালতে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন। ওই দিন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম তেজগাঁও থানার ওসিকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়।

এরপর গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর তা আমলে নিয়ে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃতিরূপে পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আল বদর, আল শামস কমিটির সদস্যদের এমপি ও মন্ত্রী বানান। পরবর্তীকালে উক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তার মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব প্রদান করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে উক্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হলো।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়