ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অপরাধীকে বীর না বানিয়ে বর্জনের আহ্বান

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অপরাধীকে বীর না বানিয়ে বর্জনের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিচারের পর অপরাধীকে বীর না বানিয়ে তাকে বর্জনের জন্য গণমাধ্যমকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

বুধবার সকালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস ২০১৮ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখেছি, আদালতে বিচার হলো না তার আগেই গণমাধ্যম একটা মানুষকে দোষী সাব্যস্ত করল। আদালতের আগেই মিডিয়া বিচার করে দিলো। এটা মিডিয়া ট্রায়াল। মিডিয়া ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে একটা মানুষের চরিত্রহনন হয়ে গেল। কিন্তু দেখা গেল, আদালতের রায়ে তিনি কিছু দিন পরে খালাস পেলেন। এটা খারাপ কাজ।

তিনি আরো বলেন, বিচারের আগে মিডিয়া ট্রায়াল যেমন খারাপ কাজ, তেমনি বিচারের পর অপরাধীকে মহিমান্বিত করা, অপরাধীকে বীর বানানো, মহান বানানোটাও খারাপ কাজ। বিচারের পর অপরাধীদের প্রতি সংবেদনশীলতা তৈরি করা, সহানুভূতি তৈরি করা গণমাধ্যমের কাজ নয়। বিচারের পর অপরাধীদের বর্জনই করতে হবে। সোচ্চার হতে হবে, যাতে অপরাধীরা সমাজ, রাজনীতি রাষ্ট্রীয় কাজ থেকে দূরে থাকে, বাইরে থাকে। সুতারাং প্রেস কাউন্সিল দিবসে গণমাধ্যমের বন্ধুদের প্রতি আমার একটাই আহ্বান থাকবে, যেমন বিচারের মিডিয়া ট্রায়াল খারাপ জিনিস, তেমন বিচারের পরে অপরাধীকে মহিমান্বিত করা গণমাধ্যমের কাজ নয়। তাহলে সমাজ আরো শক্তিশালীভাবে বিচারহীনতার সংস্কৃতির দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। অপরাধীদের বর্জন করায় সোচ্চার হতে গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাই।         

অনুষ্ঠানে তারানা হালিম বলেন, আমরা অনেকগুলো কাজ হাতে নিয়েছি। কিছু দিন আগে কিছু মিটিং করেছি। আমরা এমন কাজ করছি, আমি মনে করি যে, সেই কাজগুলো সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। সেগুলো একুট বড় করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করতে চাই। সেজন্য আপাতত তা প্রকাশ করছি না।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক-২০১৮ এর জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন। ছয় ক্যাটাগারিতে এ পদক দেওয়া হচ্ছে। আজীবন সম্মাননা ক্যাটাগরিতে পদকের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী, বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্র হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা পাচ্ছে দৈনিক সংবাদ।

উন্নয়ন সাংবাদিকতায় ‘যোগাযোগে বিপ্লব’ শিরোনামে সংবাদের জন্য দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রাজন ভট্টাচার্য, গ্রামীণ সাংবাদিকতা ‘হাওরের দুঃখ’ শিরোনামে সংবাদের জন্য দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাজীব নূর, নারী সাংবাদিকতায় ‘সুযোগের অভাবে উমা বিশ্বাসের স্বপ্নগুলো বাক্সবন্ধি’ শিরোনামে সংবাদের জন্য দৈনিক বরিশাল সময়ের প্রধান প্রতিবেদক মর্জিনা বেগম, আলোকচিত্রে ‘রেল লাইনের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা’, ‘রোহিঙ্গা বৃদ্ধের বাঁচার আকুতি’ ও ‘ভাঙ্গাচোরা সড়কে নাগরিক দুর্ভোগ’ এই শিরোনামের তিনটি ছবির জন্য দৈনিক আমাদের সময়ের নিজস্ব ফটোসাংবাদিক আল আমিন লিয়ন নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা পদক তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।  

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। এই অ্যাক্ট গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। সেই দিনটি স্মরণ করে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস পালন করেছে। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি উদযাপিত হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়