ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘অপরিকল্পিত’ খননে ভাঙছে ভৈরব

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘অপরিকল্পিত’ খননে ভাঙছে ভৈরব

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : খননের প্রভাবে নওয়াপাড়া এলাকায় ভাঙছে ভৈরব নদ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভৈরব পাড়ের মানুষ।

ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্তদের ভাষ্য, অপরিকল্পিত খনন ও সেতু নির্মাণের কারণে ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃশেষ হচ্ছেন তারা।

৭-৮ মাস ধরে চলছে ভৈরব খনন। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা খরচ করে ভৈরব নদের খুলনা থেকে যশোরের নওয়াপাড়ার চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত খনন করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য নদের নাব্য ও গতিপথ ঠিক রাখা।

নদের নওয়াপাড়া অংশের পশ্চিম পাশে ভৈরব নদের তীরজুড়ে রয়েছে নৌবন্দর ছাড়াও কয়েকশত বেসরকারি ঘাট। এই পাড়েই জেগে উঠছে চর। আর ভাঙছে পুব পাড়ের ফসলি জমি। নদের গতিপথ বদলের কারণেই এমনটি হচ্ছে।

বন্দর ব্যবহারকারী, ঘাট মালিক এবং কার্গো মালিকদের দাবি, নদের গোটাটাই ড্রেজার দিয়ে খনন করে বিভিন্ন বাঁক সোজা করার। কিন্তু গত দুই বছর ধরে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ যে সেতুটি নির্মাণ করছে, তার কারণে পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণাধীন সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে কয়েকজন ঘাট মালিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক মাটি ভরাট করে অবৈধভাবে নদের জমি দখল করে গড়ে তুলেছেন পণ্যাগার। একদিকে অবৈধ দখলের কারণে দক্ষিণ পাশে চর জাগছে, অন্যদিকে সেতুর কারণে পানির স্রোত ধাক্কা খাচ্ছে পুব পাড়ে। অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দেয়াপাড়া গ্রামের অসংখ্য মানুষের চাষাবাদের জমি শুধু এ কারণেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।

সেতু এলাকার পূর্ব পাড়ের মানুষের এই অপূরণীয় ক্ষতির ফলে তারা দাবি তোলেন নদের জায়গাকে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে নদীর বাঁক সোজা করে খননের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের কথায় কান দেননি। তারা অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র নদী খনন করছেন।

নদ খননের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘বঙ্গ ড্রেজার’ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, বিআইডাব্লিউটিএ’র প্রকৌশল বিভাগ যেভাবে নকশা করে মাটি খননের আদেশ দেন তারা সেভাবেই কাজ করছেন। এখানে তাদের ইচ্ছামতো কোনো খনন কাজ করার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া নৌ-বন্দরের সহকারী পরিচালক মাসুদ পারভেজ বলছেন, বিষয়টি দেখার দায়িত্ব প্রকৌশল বিভাগের।

জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে নদী খননের কার্যক্রম চলে। বিআইডাব্লিউটিএ’র কনসাল্টিং ফার্ম ‘সিইজিআইএস’ নদ খননের নকশা অনুযায়ী সার্ভে করে দেওয়ার পরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। কিন্তু প্রকৌশল বিভাগ নদ খননের বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই একতরফা সিদ্ধান্তে কাজ চালাচ্ছে।

ফলে ঘাট মালিক ও ঘাট ইজারাদারদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে নওয়াপাড়া বন্দর এলাকায় ড্র্রেজিং করার কারণে কিছু দিনের মধ্যেই খননের জায়গাগুলো আবার ভরাট হয়ে যায়। ফলে ঘাটে কার্গো ভিড়িয়ে মালামাল ওঠানামা করাতে বিঘ্ন ঘটছে।

এই বিষয়ে যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রনজিৎকুমার রায় বলেন, ‘নদের তীর ঘেঁষে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে চর কেটে নাব্য ও স্রোতধারা ঠিক রাখার জন্য আমি বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান বরাবর একখানা পত্র দিয়েছি।’



রাইজিংবিডি/যশোর/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/বিএম ফারুক/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়