ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘জামিন পেলে স্বশরীরে হাজির হবেন খালেদা জিয়া’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘জামিন পেলে স্বশরীরে হাজির হবেন খালেদা জিয়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিলে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় স্বশরীরে তিনি আদালতে হাজিরা দেবেন।

রোববার পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ অস্থায়ী আদালতে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে একথা বলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন।

রোববার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিলো। বেলা ১১টা ৬ মিনিটে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। খালেদা জিয়ার যে জেলে আছে এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করে আর তার জামিন বর্ধিত করার জন্য দুটি আবেদন করেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।

শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য রয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই মামলায় এখন জেলে আছেন খালেদা জিয়া। বিষয়টি আপনাকে (বিচারক) জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের (পিডব্লিউ) আবেদন করেছিলাম। আপনি কোনো আদেশ দেননি। খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। তাকে আদালতে হাজির করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া যেতে পারেন বলে জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দুপুরে হাইকোর্টে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এজন্য আমরা মামলার কার্যক্রম আজকের জন্য মুলতবি রাখার আবেদন করছি। হাইকোর্ট যদি অনুগ্রহ করে খালেদা জিয়াকে জামিন দেন তাহলে আর এ প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের প্রয়োজন হবে না। তিনি স্বশরীরে আদালতে হাজির হবেন।

তারা আরো বলেন, চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার জামিন বর্ধিত করে আগামীকাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবির আবেদন করেন তিনি। হাইকোর্ট যদি খালেদা জিয়াকে জামিন দেন তাহলে আদালতের আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আদেশ হবে না। আজ যদি তিনি জামিন পান তাহলে আগামীকাল তিনি স্বশরীরে আদালতে উপস্থিত হতে পারবেন। সেখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা হবে না। আর আপনি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট দিলে তাহলে খালেদা জিয়া বের হতে পারবেন না। পরবর্তীতে তারা এক সপ্তাহের সময় চান।

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তিনি জেলে আছেন, আপনাকে অবহিত করেছি। আজ এবং আগামীকাল মামলার তারিখ আছে। অবশ্যই আপনি (বিচারক) তাকে আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেবেন। তিনি জেলে আছেন জানার পরও বিষয়টি ঝুলন্ত অবস্থায় রাখার আইনগত অধিকার আমার জানা নেই। খালেদা জিয়া যদি জামিন পান তাহলে আমরা সবাই জানব। আর প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট থাকলে উনি রিলিস হবেন। আর উনি তো জেলে আছেন। জামিনের অপব্যবহার করেননি।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার জামিন আগামীকাল বর্ধিত করেন আদালত। একই সঙ্গে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের বিষয়ে শুনানির তারিখও আগামীকাল ধার্য করেন আদালত।

এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, আমিনুল ইসলাম, জিয়া উদ্দিন জিয়া, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।

মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়