ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কালো টাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাজেটে অধিকতর স্বচ্ছতা চায় টিআইবি

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৫, ১৫ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কালো টাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাজেটে অধিকতর স্বচ্ছতা চায় টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়ার সুযোগ অব্যাহত না রাখা এবং অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংকের সঙ্কটের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করাসহ অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে টিআইবি কালো টাকাকে বৈধতা প্রদানের সুযোগ অব্যাহত না রাখা, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা ও আলোচনার সুযোগ রাখা, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) এর জন্য নূন্যতম ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি ও অনিয়মে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলিকরণসহ জনগণের করের টাকায় মূলধন যোগানোর কোনো ধরনের সুযোগ বাজেটে না রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কালো টাকাকে বৈধতা প্রধান সংবিধানের ২০ (২) ধারার সাথে সাংঘর্ষিক। অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দান একদিকে যেমন নৈতিক অবক্ষয়কে প্রশ্রয়ের দৃষ্টান্ত, তেমনি দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এটিও প্রমাণিত যে, এই জাতীয় অসাধু চর্চা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও কোনো সহায়ক ভূমিকা পালন করে না। অন্যদিকে, কালো টাকাকে বৈধতা প্রদান যেমন অসাংবিধানিক তেমনি অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি সহায়ক।’

ড. জামান বলেন, ‘জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং অন্যসকল খাতের প্রস্তাবিত বরাদ্দের ন্যায় প্রতিরক্ষা বাজেটের পেছনে পর্যাপ্ত যুক্তিসহ বিস্তারিত বিবরণ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে হবে ও বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রস্তাবিত খসড়া জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালায় সশস্ত্র বাহিনীকে জনগণের কাছাকাছি  নেওয়ার যে প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিরক্ষা খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিরক্ষা বাজেট ও তার ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের প্রচলন করলে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ব্যাপারে জনসমর্থন বৃদ্ধি পাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির সম্মুখীন জনগণের জন্য গঠিত বিসিসিটিএফ- এর জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা উচিত। একদিকে আন্তর্জাতিক উৎস হতে প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়া ও অন্যদিকে ফারমার্স ব্যাংকের সংকটের কারণে জিম্মি বিসিসিটিএফ- এর জন্য এবারের বাজেটে কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ না রাখা হলে ইতোমধ্যে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, যা কখনো কাম্য হতে পারে না।’

ব্যাংকিং খাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. জামান বলেন, ‘আসন্ন বাজেটে খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটে নিমজ্জিত সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকসমূহের জন্য পুনঃতফশিলিকরণ ও পুনঃমূলধনীকরণ সুবিধা রাখলে তা ঋণ খেলাপি ও দুর্নীতিবাজদের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা হিসেবে বিবেচিত হবে।’ অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি যে যোগসাজশের ঋণ সংকটের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন তার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে জনগণের অর্থে ঋণ পুনঃতফশিলিকরণ ও মূলধন জোগান দেওয়ার পরিবর্তে দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় টিআইবি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মে ২০১৮/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়