ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

তিন মামলায় খালেদার জামিন বিষয়ে আদেশ রোববার

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২৪ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তিন মামলায় খালেদার জামিন বিষয়ে আদেশ রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী রোববার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

আদালত বলেন, আগামী রোববার   তিনটি আবেদনের ওপর আদেশ একসঙ্গে দেবো।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো: বশির উল্লাহ।

পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত আগামী রোববার আদেশের জন্য রেখেছেন।

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আগামী রোববার খালেদার জামিন আবেদন আবারও শুনানির জন্য কার্যতালিকায় থাকবে।

এর আগে আজ এবং গত ২২ ও ২৩ মে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

গত ২০ মে কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া আবেদন করেন।

অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের অভিযোগে কুমিল্লার মামলা:
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হায়দার পুলের চৌদ্দগ্রামে একটি কাভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও আশপাশের বেশ কিছু গাড়ী ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে এই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়।

মামলাটি বর্তমানে কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলমান। ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেয় আদালত। পরে গত ২৩ এপ্রিল এ মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত আবেদনটির পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৭ জুন দিন ধার্য্য রাখেন। এ অবস্থায় শুনানি না করে এই মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করা হয়েছে।

এই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদনে ১৩টির মতো যুক্তি দেখিয়েছেন তার আইনজীবীরা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যুক্তি সমূহ হলো- মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) খালেদা জিয়ার নাম নেই, ঘটনাস্থলেও তিনি ছিলেন না। তিনি অসুস্থ্য, অন্য মামলায় জামিনে আছেন। তিনি বয়স্ক, এ মামলায় তার বিরুদ্ধে কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, হয়রানি করার করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে, এ মামলার অন্য আসামিরা জামিনে আছেন। তাই খালেদা জিয়াও জামিন পাওয়ার যোগ্য।

কুমিল্লায় হত্যা মামলা:
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে প্রেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এই ঘটনায় ৭ জন যাত্রী মারা যায় এবং আরও ২৫/২৬ জন গুরুতর অসুস্থ হয়। এ ঘটনায় পরদিন (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান ৫৬ জনের বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মামলা করেন। পরে এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বিচারকালে দায়রা আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। সেই জামিন আবেদনের ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৭ জুন দিন ধার্য্য রাখা হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থায় গত ৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়াকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। তাই ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৯৮ ধারায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

এই মামলায় জামিন আবেদনে যুক্তি দেখানো হয়েছে- মামলার ৩ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের কেউ জবানবন্দিতে খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করেননি। এছাড়াও খালেদা জিয়া অসুস্থ্য, বয়স্ক ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় হাইকোর্টে তার জামিন চাওয়া হয়েছে।

নড়াইলে মানহানি মামলা-
২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া। এ ঘটনায় একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইলে মানহানির মামলা করা হয়। স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রায়হান ফারুকি ইমাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতে বলা হয়েছে- দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০১ ও ৫০২ এর অধীনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। কিন্তু এই তিন ধারার মামলায় আসমি জামিনযোগ্য। তাছাড়াও খালেদা জিয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বয়স্ক। তাই এসব যুক্তিতে এ মামলায় জামিন চেয়েছেন তার আইনজীবীরা।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৮/মেহেদী/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়