ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জালিয়াতি : হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে দুই আসামি লাপাত্তা

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ২৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জালিয়াতি : হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে দুই আসামি লাপাত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : অস্ত্র ও ধর্ষণ মামলার তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে উচ্চ আদালত খেকে জামিন নিয়ে দুই আসামি লাপাত্তা হয়েছেন।

সম্প্রতি ভয়াবহ জালিয়াতির এসব তথ্য উদঘাটনের পর ওই সব মামলার আসামির জামিন বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জালিয়াতির সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, তদবির কারককে তলবও করেছেন আদালত। আগামীকাল রোববার এসব মামলার জালিয়াতি সংক্রান্ত বিষয় আদেশের জন্য রাখা হয়েছে।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে চারটি জামিন জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে।

এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ওই বেঞ্চে বাস থেকে নামিয়ে এক বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের মামলায় জামিন চান চালক বাদশা মিয়া। তার আইনজীবী দাবি করেন, মামলার আরেক আসামি হেলপার মো. ফারুককে জামিন দেওয়া হয়েছে। তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফারুকের জামিন সংক্রান্ত নথি তলব করেন আদালত। দুটি নথি পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট দেখতে পায় যে, দুজন আসামিই ধর্ষণের ঘটনায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে আদালতে। কিন্তু অভিযোগপত্র ও দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির তথ্য গোপন করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে লাপাত্তা ফারুক। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পরায় ফারুকের আইনজীবী হারুণ অর রশিদ ও জামালউদ্দিনকে তলব করেছেন।

একই দিনে হাইকোর্টের নজরে আসে সাইফুল ইসলাম আরিফ ওরফে বাবা আরিফের জামিন জালিয়াতির ঘটনা। সাইফুল ইসলাম আরিফ কার্তুজ ও এক নালা কাটা বন্দুকসহ গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে মুন্সীগঞ্জ থানা পুলিশ। এই আসামির বিরুদ্ধে আরো নয়টি মামলার রয়েছে সে তথ্য ওই  অস্ত্র মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এসব তথ্য গোপন করেই আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে লাপাত্তা হন।

এর আগে গত বুধবার হাইকোর্টের নজরে আসে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি বিল্লাল হোসেন জামিন জালিয়াতির বিষয়।

গাজীপুরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি বিল্লাল হোসেন গত ৯ মে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। জামিন আবেদনে ধর্ষণের প্রমাণসংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্ট বদলে দিয়েছেন তার আইনজীবী। মূল রিপোর্টে ধর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও জামিন আবেদনে দাখিলকৃত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। এমনকি শিশুটিকে প্রাপ্ত বয়ষ্ক দেখানো হয়েছে। বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২১ বছর। যদিও মামলার মূল নথিতে শিশুর বয়স উল্লেখ রয়েছে ১০ বছর।

গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে জামিননামা দাখিলের পর জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে হাইকোর্টের নজরে আনা হলে মূল নথি পর্যালোচনা করে আসামির জামিন বাতিল করে দেন। তবে বিল্লাল এখনো জেলেই রয়েছেন। এই জামিন জালিয়াতির সাথে জড়িত তদবির কারককেও তলব করেছেন আদালত।

হাইকোর্টের উক্ত বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, আগামীকাল রোববার জালিয়াতি সংক্রান্ত আরো দুটি আবেদনের ওপর আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৮/মেহেদী/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়