ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘গ্রেপ্তার থামেনি, সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ব্যর্থ ইসি’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৩ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘গ্রেপ্তার থামেনি, সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ব্যর্থ ইসি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হবে না-নির্বাচন কমিশন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা রাখতে প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

দলটি বলছে, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের সামান্যতম পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন।

মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেওয়া, গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দায়ের করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, তল্লাশির নামে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যাতে না থাকতে পারে সেজন্য ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন, থার্টিফার্ষ্ট ও ইংরেজি নববর্ষের কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কর্মকর্তারা ছুটিতে থাকবেন।

‘সুতরাং তাদের দৃষ্টির অন্তরালেই একটি বড় ভোট চুরির নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সরকারের কৌশলি নির্দেশেই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে ইসি। আমাদের পূর্বের দাবি অনুযায়ী নির্বাচন এক মাস পেছাতে হবে। আবারও তফসিল দিতে হবে। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারে সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে।’

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, দুদিন আগে নির্বাচন কমিশনার সাহাদাত হোসেন ৮০ থেকে ১০০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছেন। যা আরও গভীর চক্রান্ত বলেই সকলেই বিশ্বাস করছে।

তিনি বলেন, ইভিএম শুধু দেশে দেশে বিতর্কিতই নয়, ইভিএমে ভোট কারচুপি হয় বলেই পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতসহ যে দু-একটি দেশে যেখানে সীমিত আকারে ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল সেখানেও জালিয়াতির কারণেই ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠেছে। সেসব দেশে রাজনৈতিক দলের নেতারা ইভিএমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। ভোট কারচুপি ও ভোট ডাকাতির এই মেশিন আরও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার এই সিদ্ধান্ত আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিরই মহাপরিকল্পনা।

নির্বাচনে কোনো ইভিএম ব্যবহার করা চলবে না জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভোট ডাকাতির যন্ত্র ইভিএম ব্যবহারের এই মহাপরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সচিব বলেছেন-ইভিএম সেন্টারে সেনাবাহিনী নিয়োগ থাকবে। তার এই বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ইভিএম তো একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র, যা বহুদূর থেকে ম্যানিপুলেট করা যায়, তাহলে সেখানে সেনাবাহিনী নিয়োগ দিয়ে কী লাভ?’

‘বরং ম্যানুয়ালি ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যালট পেপার কেড়ে নেওয়া, জোর করে সিল মারতে গুন্ডামি হয়, সুতরাং সন্ত্রাসী ঠেকাতে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন। এজন্যই ক্ষমতাসীন দল ছাড়া দলমত নির্বিশেষে ৩০০ আসনে প্রতিটি সেন্টারে সেন্টারে ম্যাজেষ্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মেতায়েন করতে হবে।’

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে তার কোনো চিকিৎসা চলছে না। নিয়মিত যে থেরাপি দেওয়া হতো তা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে, বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ। নির্দোষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্যই কারাগারে বন্দি  করে রাখা হয়েছে। এছাড়া আর কোনো কারণ নেই।’

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া যতগুলো নির্বাচনে যত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন সবগুলোতেই লাখ লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন, অনেকেই তা পারেননি, এজন্যই বেগম জিয়ার প্রতি এত প্রতিহিংসা।

এ সময় খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ নভেম্বর ২০১৮/রেজা/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়