ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

৩৩১ করেও পাত্তা পেল না উইন্ডিজ, তামিম-সৌম্যর সেঞ্চুরি

আবু হোসেন পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৯, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৩৩১ করেও পাত্তা পেল না উইন্ডিজ, তামিম-সৌম্যর সেঞ্চুরি

আবু হোসেন পরাগ, বিকেএসপি থেকে : বোলিংটা ভালো হয়নি। তবে ব্যাটিংটা হলো দুর্দান্ত। চোট কাটিয়ে ফেরা তামিম ইকবাল মূল মঞ্চে নামার আগেই করলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক স্পর্শ করলেন সৌম্য সরকারও।তাতে স্রেফ উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ওয়ানডে সিরিজের আগে ৫০ ওভারের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানে হারিয়েছে বিসিবি একাদশ। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বৃহস্পতিবার আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩১ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে বিসিবি একাদশ ৪১ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৪ রান তোলার পর আলোকস্বল্পতায় খেলা আর এগোয়নি।

বিসিবি একাদশ হলেও ওয়ানডে সিরিজের দলে থাকা মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, আরিফুল হক, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেনরা খেলেছেন এই ম্যাচে। যেখানে প্রস্তুতিটা সবচেয়ে ভালো হলো তামিম ও সৌম্যর। সেঞ্চুরিতে প্রস্তুতি সারলেন এই দুজন।



বড় লক্ষ্য তাড়ায় বিসিবি একাদশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ও ইমরুল কায়েস। চোট কাটিয়ে ফেরা তামিম শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। নিজের সহজাত ব্যাটিং করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেমার রোচ, ওশানে টমাসদের বিপক্ষে। কাভার ড্রাইভ, কাট, পুল, স্ট্রেইট শটে মেরেছেন দারুণ সব চার।

ইমরুলের সঙ্গে ৫৩ বলে ৮১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তামিম। ইমরুল ২৫ বলে ২৭ রান করে ফিরলে ভাঙে এ জুটি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্যর সঙ্গে ১১৪ রানের আরেকটি বড় জুটি গড়েন তামিম। এই জুটির পথেই তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরি।

৪৮ বলে ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন তামিম। পরের পঞ্চাশ করতে লেগেছে মাত্র ২২ বল! ৯১ থেকে স্পিনার রোস্টন চেজকে ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছে যান ৯৭-এ। পরের বলে সিঙ্গেল। আর পরের ওভারে বিশুর দুই বলে দুটি সিঙ্গেল নিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন তিন অঙ্ক। ৭০ বলে সেঞ্চুরি করতে ১৩টি চারের সঙ্গে হাঁকান ৩টি ছক্কা।



সেঞ্চুরির পর অবশ্য ইনিংস আর বড় করতে পারেননি তামিম। চেজের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার আগেই ৭৩ বলে ১৩ চার ও চার ছক্কায় খেলেন ১০৭ রানের অসাধারণ ইনিংস।

তামিমের বিদায়ের পর দ্রতই আরো ৩ উইকেট হারিয়েছে বিসিবি একাদশ। বিশুর বলে ড্যারেন ব্রাভোকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিথুন (৫)। সেই বিশুকেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট আরিফুল হক (২১)। ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের বলে বোল্ড হওয়া তৌহিদ হৃদয় মেরেছেন ডাক। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শামীম পাটোয়ারিও (৯)।

তখন ২৬৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে বিসিবি একাদশ।তবে সেই চাপ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন সৌম্য। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই দুজনের ব্যাটে ৩৯ ওভারেই দলীয় তিনশ পার করে ফেলে স্বাগতিকরা। সৌম্য তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৭৫ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কায় তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।



বিসিবি একাদশ ৪১ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৪ রান তোলার পর আলোকস্বল্পতায় আর খেলা এগোয়নি। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জিতে যায় স্বাগতিকরা। সৌম্য ৮৩ বলে ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ১০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৮ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন মাশরাফি।

রোচ ৫ ওভারে ৪৯ রান দিয়েও কোনো উইকেট পাননি। চেজ ১০ ওভারে ৫৭ রানে নেন ২টি উইকেট। বিশু ১০ ওভারে ৮১ রানে নেন ২টি উইকেট।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ফিফটি পেয়েছেন দুজন। পঞ্চাশের কাছাকাছি রান করেছেন আরো দুইজন। তাদের ইনিংসটাকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথম ১৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে একশ রান তুলে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের ২৫ ওভারে দাপট দেখিয়েছেন বিসিবির বোলাররা। এই সময়ে তারা তুলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। শেষ দশ ওভার ছিল আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এই দশ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান তুলেছে সফরকারীরা।



৮৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন শাই হোপ। ৫১ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৬৫ রানে অপরাজিত ছিলেন রোস্টন চেজ। এ ছাড়া অ্যালেন ৩২ বলে ৪৮ ও কাইরন পাওয়েল করেন ৪৩ রান।

২টি করে উইকেট নেন রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান রানা ও নাজমুল ইসলাম অপু। রুবেল ১০ ওভারে ৫৫, রানা ১০ ওভারে ৬৫ ও অপু ১০ ওভারে দিয়েছেন ৬১ রান। মাশরাফি দুই স্পেলে ৮ ওভারে ৩৭ রানে ও শামীম ২ ওভারে ১৬ রানে নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের ওয়ানডে দলে এসেছে বেশ কিছু রদবদল। ওয়ানডে সিরিজটাও যে তাদের জন্য কঠিন হবে, সেটা প্রস্তুতি ম্যাচেই টের পেল সফরকারীরা। আগামী রোববার মিরপুরে হবে প্রথম ওয়ানডে।




রাইজিংবিডি/সাভার/৬ ডিসেম্বর ২০১৮/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়