ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

স্ত্রীকে বকাঝকার প্রতিবাদ করায় মারধর, স্বামীর আত্মহত্যা

সাফিউল ইসলাম সাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্ত্রীকে বকাঝকার প্রতিবাদ করায় মারধর, স্বামীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার : নিজ কর্মস্থলে মোবাইল ফোনে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার অপরাধে পোশাক শ্রমিক সাবিনা খাতুন মীম (২০) কারখানার পাঁচ কর্মকর্তার রোষানলে পড়েন। ওই নারীকে অকথ্য ভাষায় বকাঝকা করেন তারা; যা ফোনের অপরপ্রান্তে শুনতে পান স্বামী অনিক। পরে প্রতিবাদ করতে কারখানায় গেলে কয়েকজন কর্মকর্তা দুই দফা তাকে মারধর করেন এবং সবার সামনে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। আর এ অপমান সহ্য করতে না পেরে বাসায় এসে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেন অনিক।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকেলে আশুলিয়ার সাধুপাড়া এলাকার টর্ক ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায়। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় ওই কারখানার পাঁচ কর্মকতার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা পিন্টু (৫০), সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুবেল, ফ্লোর ইনচার্জ হারুন (৪৫), সুপারভাইজার পারভেজ এবং অপারেটর রাকিব (২৫)।

নিহত অনিক মিয়া ব্রাম্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলাধীন আড়াইসিধা গ্রামের আনিস মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আশুলিয়ার সাধুপাড়া এলাকার মনিরের ভাড়া বাড়িতে থেকে রং মিস্ত্রীর কাজ করতেন। তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন মীম আশুলিয়ার সাধুপাড়া এলাকার টর্ক ফ্যাশন লি. কারখানার অপারেটর পদে চাকরি করেন।

নিহত অনিকের স্ত্রী সাবিনা খাতুন মীম জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জরুরি প্রয়োজনে তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। বিষয়টি কারখনার প্রশাসনিক কর্মকর্তা পিন্টুসহ পারভেজ, রুবেল, রাকিব ও হারুন দেখতে পেয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় মোবাইলে তার স্বামী গালিগালাজ শুনতে পান। পরে অনিক কারখানা থেকে স্ত্রীকে আনতে যান। এ সময় কারখানার ওই কর্মকর্তারা অনিককে পিটিয়ে আহত করেন এবং হুমকি দেন। এতে অনিক অপমানিত হয়ে বাসায় ফিরে যান।

এরপর দুপুর ১টার দিকে আবার স্ত্রীকে আনতে যান অনিক। বিষয়টি ওই কর্মকর্তারা জানতে পেরে আবার অনিককে পিটিয়ে আহত করেন এবং গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।

এ অপমান সহ্য করতে না পেরে অনিক বাসায় গিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগায়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং সেখান থেকে তুরাগ থানা এলাকার ইস্টওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত. ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক দীপু জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।



রাইজিংবিডি/সাভার/১৩ ডিসেম্বর ২০১৮/সাফিউল ইসলাম সাকিব/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়