ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২১, ৬ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি

সচিবালয় প্রতিবেদক : আর তিন দিন পর শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী বিশাল পরিসরের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯।

আগামী বুধবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে দেশের সর্ববৃহৎ এই পণ্য মেলার উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উপ-পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ আব্দুর রউফ এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন করে থাকেন। কিন্তু এবার তিনি সময় দিতে পারেননি। তাই মেলা পেছানোর কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেলা না পিছিয়ে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে মেলা উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ আয়োজনে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অস্থায়ী মাঠে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, এবারের বাণিজ্য মেলাকে আরো দৃষ্টিনন্দন করতে প্রধান গেট মেট্রোরেলের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের থিম থাকবে মেলাজুড়ে। ইতিমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

মেলার আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, এবারের মেলায় ভিন্ন আঙ্গিক আনার চেষ্টা করা হয়েছে। মেলার প্রধান ফটকেও আসবে পরিবর্তন। এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য মেলার ভিতরে খোলামেলা স্থান রাখা হবে। যাতে পরিবার ও পরিজনদের নিয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারেন। আর মেলার দুই প্রান্তে সুন্দরবনের আদলে ইকো পার্ক করা হবে। সেই সঙ্গে থাকবে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি)। যার মাধ্যমে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন অতি সহজে খুঁজে বের করতে পারবেন।

এছাড়া মেলায় কোনো সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে না। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মেলায় মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্কসহ পর্যাপ্ত এটিএম বুথ থাকবে। আরো  থাকছে তৈরি পোশাক, হোমটেক্স, ফেব্রিকস, হস্তশিল্প, পাট-পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পণ্য, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী। থাকবে খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণসামগ্রী ও ফার্নিচারের স্টল।

মেলায় সংরক্ষিত মহিলা স্টল থাকবে ২০টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৮টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৮, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ২৯টি, প্রিমিয়ার স্টল ৬৭টি, রেস্টুরেন্ট তিনটি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ৯টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি, সংরক্ষিত বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ৯টি, বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল ১৩টি, সাধারণ স্টল ২০১টি ও ফুড স্টল ২২টি। এ পর্যন্ত ৫২১টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মেলায় বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। থাকবে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা।

জানা গেছে, মেলায় যাতে গতবারের থেকে বেশি বিদেশি ক্রেতা অংশ নিতে পারেন সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দূতাবাসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় বিদেশি ক্রেতা টানতে এবং করণীয় ঠিক করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনা চাওয়া হচ্ছে। বিদেশি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপণের পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ক্যাম্পেইনও চালানো হবে।



এদিকে, এবারের মেলাতেও ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করতে তিন-তলা বিশিষ্ট সুদৃশ্য প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন তৈরি করছে ওয়ালটন।

প্যাভিলিয়ন নির্মাণে অনুসরণ করা হয়েছে গ্রিন টেকনোলজি মেথড। বাইরে থাকছে সুদৃশ্য মুর‌্যাল। আরো থাকছে ৯৮ ইঞ্চির বড় পর্দার এলইডি টিভি। সর্বাধিক সংখ্যক মডেল এবং লেটেস্ট প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হতে যাচ্ছে ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন।

তিন তলা প্যাভিলিয়নের প্রবেশদ্বারের ডিজাইনে থাকছে নান্দনিক টেরা-কোটা। প্রথম তলায় প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য থাকছে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন, ইলেকট্রিক ও মাইক্রোওয়েব ওভেন, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাসস্টোভ, বৈদ্যুতিক পাখা, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারিসহ কয়েক শতাধিক মডেলের বিশ্বমানের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস। আরো থাকছে হেল্প ডেস্ক।

দ্বিতীয় তলায় থাকছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, লিফট, কম্প্রেসার, জেনারেটরসহ বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশনস। তৃতীয় তলায় থাকছে সুবিশাল স্টোর।

বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এবার কিছু চমক থাকছে। প্যাভিলিয়নের বাইরে থাকছে দেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাতের পথিকৃৎ এস এম নজরুল ইসলামের মুর‌্যাল। প্যাভিলিয়নের বাইরে স্থাপন করা হচ্ছে ৯৮ ইঞ্চির বড় পর্দার এলইডি টিভি। যেখানে ওয়ালটন পণ্যের অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং করপোরেট ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হবে। এতে করে, মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদান সম্পর্কে বাস্তুব জ্ঞান পাবেন।

বিপুল পরিমাণ ক্রেতা, দর্শনার্থীর চাপ মোকাবিলা ও নিরাপত্তার নিশ্চিত করার বিষয়ে অধিক জোর দিয়েছে ওয়ালটন। কাঠামো নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায়, বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার করা হয়েছে ফায়ার রেজিস্ট্যান্স ক্যাবলস, স্টিলের কাঠামো, এসিপি (অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল) বোর্ড, গ্লাস ইত্যাদি। প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন ফ্লোরে যাতায়াতের জন্য থাকছে সুপরিসর লিফট। ওয়ালটনের তৈরি এই লিফট প্রদর্শন ও বিক্রিও করা হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ জানুয়ারি ২০১৯/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়