ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সাফাতের জামিন বাতিল ও নাঈমের জামিন আবেদন

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাফাতের জামিন বাতিল ও নাঈমের জামিন আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের জামিন বাতিলের আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মামলাটিতে বর্তমানে কারাগারে থাকা সাফাত আহমেদের বন্ধু আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম জামিনের আবেদন করেছেন।

মঙ্গলবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আগামী ২২ জানুয়ারি অধিকতর শুনানির জন্য ধার্য করেন।

নাঈম আশরাফের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী এমএবিএম খায়রুল ইসলাম লিটন। শুনানিতে তিনি বলেন, মামলার আসামি ৫ জন। নাইম আশরাফ ও সাফাত আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এবং অপর ৩ জনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগ থাকা সাফাত আহমেদসহ ৪ জনই জামিন পেয়েছেন। সাফাত আহমেদের যে অপরাধ তার আসামিরও একই অপরাধ। তাহলে তার আসামি কেন জেলে থাকবেন? এছাড়া তিনি মামলাটি মিথ্যা, পরিকল্পিত ও সাজানো উল্লেখ করে হাজতবাস বিবেচনায় জামিন মঞ্জুরের আবেদন করেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু ও বিশেষ পিপি মো. লিয়াকত আলী এবং ভিকটিমের পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। তারা আসামি নিজেই ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জামিনের বিরোধিতা করেন।

এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সাফাতের জামিন বাতিলের বিষয়ে বলেন, আসামির অসুস্থতার গ্রাউন্ডে ট্রাইব্যুনাল জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু আসামি যে এখনো অসুস্থ এ ধরনের কোনো ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করা হয়নি। তাকে দেখেও অসুস্থ মনে হয় না। তাই তার জামিন বাতিল করা প্রয়োজন। জামিন বাতিল না হলে সে সাক্ষীদের ভয়ভীতি ও প্রভাবিত করতে পারেন।

সাফাত আহমদের পক্ষে আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা জামিন স্থায়ীর আবেদন করেন। সব বিষয়ে শুনানি শেষে বিচারক নথি পর্যালোচনা করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিন মামলার একজন ভিকটিম এদিন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসলেও কারা কর্তৃপক্ষ কারাগারে থাকা আসামি নাঈম আশরাফকে আদালতে হাজির না করায় সাক্ষ্য পিছিয়ে আগামী ২২ জানুয়ারি ধার্য করেছেন বিচারক।

উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করে একই বিচারক। এর আগে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের সহযোগী আসামি সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং বন্ধু সাদমান সাকিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

মামলাটিতে ওই বছর ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিব, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণের সহযোগীতার অভিযোগ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জ গঠন করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়