ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ধর্ষণ: ভিক্টিমের জবানবন্দি নেবেন নারী ম্যাজিস্ট্রেট

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ১৬ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধর্ষণ: ভিক্টিমের জবানবন্দি নেবেন নারী ম্যাজিস্ট্রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি গ্রহণ করবেন নারী ম্যাজিস্ট্রেট।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে মঙ্গলবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ দায়িত্ব অর্পণ করবেন একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে।

প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে ওয়াকিবহাল ব্যক্তির জবানবন্দি উক্ত আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়।’

‘অপরাধের তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে লিপিবদ্ধকৃত উক্ত জবানবন্দি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। বর্তমানে বেশকিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী বা শিশুদের জবানবন্দি পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। একজন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নারী বা শিশু ভিক্টিম ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিতে সংকোচবোধ করে। ফলে এরূপ নির্যাতনের শিকার শিশু বা নারী ঘটনার প্রকৃত বিবরণ দিতে অনেক সময় ইতস্তত বোধ করে।’

প্রাজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা আবশ্যক। এতে নারী ও শিশু ভিক্টিমরা সহজে ও নিঃসঙ্কোচে তাদের উপর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে পারবে।’

‘এমতাস্থায়, সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অর্পনের জন্য চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশিত হয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেল।’

তবে সংশ্লিষ্ট জেলায় বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে উক্ত দায়িত্ব অর্পন করা যেতে পারে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়।

এই সার্কুলারের নির্দেশনাবলী অনুসরণে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনার জন্যও বলা হয়েছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ আইনের ২২ (১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের তদন্তকারী কোন পুলিশ কর্মকর্তা বা তদন্তকারী অন্য কোন ব্যক্তি কিংবা অকুস্থলে কোন আসামীকে ধৃত করার সময় কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকেফহাল বা ঘটনাটি নিজ চক্ষে দেখেছেন এমন কোন ব্যক্তির জবানবন্দি অপরাধের ত্বরিত বিচারের স্বার্থে কোন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক অবিলম্বে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন, তা হলে তিনি কোন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটকে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য লিখিতভাবে বা অন্য কোনভাবে অনুরোধ করতে পারবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল বা অন্য কোন যথাযথ স্থানে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি গ্রহণ করবেন এবং উক্তরূপে গৃহীত জবানবন্দি তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে সামিল করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করার নিমিত্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বা ব্যক্তির নিকট সরাসরি প্রেরণ করবেন৷

(৩) যদি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত কোন ব্যক্তির বিচার কোন ট্রাইব্যুনালে শুরু হয় এবং দেখা যায় যে, উপ-ধারা (২) এর অধীন জবানবন্দি প্রদানকারী ব্যক্তির সাক্ষ্য প্রয়োজন, কিন্তু তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন বা তিনি সাক্ষ্য দিতে অক্ষম বা তাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় বা তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার চেষ্টা এইরূপ বিলম্ব, ব্যয় বা অসুবিধার ব্যাপার হবে যা পরিস্থিতি অনুসারে কাম্য হবে না, তা হলে ট্রাইব্যুনাল উক্ত জবানবন্দি মামলায় সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে।

তবে শর্ত থাকে যে, শুধুমাত্র উক্ত সাক্ষীর সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করতে পারবে না।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ এপ্রিল ২০১৯/মেহেদী/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়